E-Paper

সুরক্ষায় নজর

নজরদারি ক্যামেরার সংখ্যার দিক থেকে ভারতের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা প্রায় ৫৭৫। অথচ, কলকাতার প্রতি বর্গকিলোমিটারে সিসি ক্যামেরা মাত্র ৩৩।

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৩৪
Share
Save

অপরাধের তদন্তে বর্তমানে সিসি ক্যামেরার গুরুত্ব সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত। সাম্প্রতিক আর জি কর কাণ্ড অথবা গত বছরের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-নির্যাতনের ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে সিসি ক্যামেরার অনুপস্থিতি তীব্র ভাবেই অনুভূত হয়েছে। অথচ, এই ক্যামেরা বসানোর ক্ষেত্রে কলকাতা এখনও যথেষ্ট পিছিয়ে। নজরদারি ক্যামেরার সংখ্যার দিক থেকে ভারতের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা প্রায় ৫৭৫। অথচ, কলকাতার প্রতি বর্গকিলোমিটারে সিসি ক্যামেরা মাত্র ৩৩। কলকাতার আগে রয়েছে চেন্নাই, হায়দরাবাদ, মুম্বই, এমনকি ইন্দোরও। সিসি ক্যামেরার এ-হেন করুণ চিত্র প্রসঙ্গে পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার আশ্বাস, তাঁদের লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব এলাকাকে সিসি ক্যামেরার অধীনে আনা। এ ক্ষেত্রে দিল্লির কাছাকাছি পৌঁছনই তাঁদের লক্ষ্য।

এমন আশ্বাসে অবশ্য স্বস্তি মেলে না। দিল্লি ও কলকাতার মধ্যের বিপুল তফাত এবং এ রাজ্যের প্রশাসনিক ‘তৎপরতা’র হরেক নজির স্মরণে রেখে বলতে হয়, এত দিনে যে কাজ করা সম্ভব হয়নি, অতি দ্রুত সেই কাজ সম্পন্ন করে ফেলার চিন্তাটি অলীক। এই সময়কালে অপরাধ থেমে থাকবে না। এবং নজরদারি ক্যামেরার অভাবে সেই অপরাধের তথ্য জানার প্রক্রিয়াটি হয়তো সবিশেষ বাধাপ্রাপ্ত হবে, তদন্তের গতিও হ্রাস পেতে পারে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, শহরে মোট দশ হাজার ক্যামেরা রয়েছে। এর অধিকাংশই বসানো হয়েছে ‘নির্ভয়া’ প্রকল্পের অধীনে। অবশিষ্ট ক্যামেরাগুলি আগে থেকেই ছিল। সেই সংখ্যাই বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। অবাক লাগে, প্রতি বার নিরাপত্তার এমন বেআব্রু হাল ঢাকার জন্য এক বড় মাপের অঘটনের প্রয়োজন হয় কেন? আর জি কর কাণ্ডের পরই পুলিশ-প্রশাসন নজরদারি ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল? তার আগে কি শহরে অপরাধ ঘটেনি? এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা বহু পূর্ব থেকেই বজায় থাকলে অন্য শহরের তুলনায় কলকাতা এমন পিছিয়ে পড়ত না। প্রশ্ন যখন নাগরিকের নিরাপত্তা, তখন অর্থের অভাব কোনও অজুহাত হতে পারে না। বিভিন্ন খাতের অহেতুক খরচ কমিয়ে এই খাতে ব্যয় করা প্রয়োজন। কিন্তু সেই কাজ আগে কত দূর হয়েছে, ভবিষ্যতেই বা কতটা হবে, প্রশ্ন থেকেই যায়।

নজরদারি ক্যামেরা বসানোর বিরুদ্ধে অবশ্য প্রায়শই নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে। সে অভিযোগ অসত্য নয়। কিন্তু জনপরিসরে যেখানে অনেকের নিরাপত্তার প্রশ্নটি জড়িত থাকে, সেখানে এক-এর গোপনীয়তার অধিকারের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে অনেকের নিরাপত্তার অধিকার। ব্যক্তিগত পরিসরে কেউ ক্যামেরা বসাবেন কি না, সেটি তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সেখানে যেমন কেউ জোর ফলাতে পারেন না, তেমনই অনেকের সুরক্ষা-প্রশ্নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন মনে করলে নির্দিষ্ট স্থানে অবশ্যই ক্যামেরা বসাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কোনও বাধা গ্রাহ্য হবে না। শুধুমাত্র ক্যামেরা বসানোই নয়, পর্যবেক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক কর্মী, স্পর্শকাতর অঞ্চলে পর্যাপ্ত আলোর বন্দোবস্ত, নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন, অভিযোগ মিললে দ্রুত ব্যবস্থা— এ সবেরই সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি। পুলিশ-প্রশাসন তার গুরুত্ব এখনও যথাযথ বুঝেছে কি?

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CCTV Camera cctv footage cctv surveillance Kolkata Delhi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।