Advertisement
E-Paper

উচ্চাভিলাষ

এই সবই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র অনুসারী, যেখানে স্বপ্ন দেখা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলা অন্তত একটি করে মাল্টিডিসিপ্লিনারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঠিকানা হয়ে উঠবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২১
Share
Save

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) খসড়া নির্দেশাবলি তৈরি করেছে, লক্ষ্য দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ‘মাল্টিডিসিপ্লিনারি’ করে তোলা। বিশ্বের নিরিখে ভারতীয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পিছিয়ে পড়ছে কারণ এখানে পঠনপাঠনের বন্দোবস্ত একমুখী, বিভিন্ন শিক্ষাধারার মধ্যে আন্তঃসংযোগ নেই, বিজ্ঞানের ছাত্র চাইলেই পাশাপাশি সঙ্গীত নিয়ে পড়তে পারেন না, কিংবা অ্যাকাউন্ট্যান্সির পড়ুয়া চিত্রকলা নিয়ে— প্রতিষ্ঠানের শাসনতন্ত্র নিয়মকানুন পাঠ্যক্রম পড়ুয়াদের জন্য নমনীয় নয়। সেই পরিস্থিতি পাল্টাবে নতুন নির্দেশিকা অনুমোদন পেলে। আইআইটি দিল্লির কোনও বি টেক পড়ুয়া যদি ইতিহাস ভালবাসেন ও জেএনইউ থেকে তা নিয়ে এম এ পড়তে চান, সেই ‘ডুয়াল ডিগ্রি’ অর্জন তো সম্ভব হবেই, দুই প্রতিষ্ঠানে দু’বার ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্যেও যেতে হবে না, উদাহরণস্বরূপ বলেছেন ইউজিসি-র চেয়ারম্যান। কলেজগুলি পরস্পর জোট বাঁধবে, দু’পক্ষ কথা বলে ক্লাস ও সময়সূচি ঠিক করবে, যার যা অভাব তা পূরণ হবে ‘সঙ্গী’ প্রতিষ্ঠানের যোগে; এ ভাবেই কলেজের পড়াশোনা এবং গবেষণাও চলবে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে, পরে পূর্ণ স্বশাসনের পথে। প্রতিষ্ঠানগুলিকে সেই সঙ্গে বলা হয়েছে নতুন নতুন বিভাগ খুলতে, যেমন ভাষা ও সাহিত্য, সঙ্গীত, ভারততত্ত্ব, ক্রীড়া ইত্যাদি।

এই সবই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০-র অনুসারী, যেখানে স্বপ্ন দেখা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলা অন্তত একটি করে মাল্টিডিসিপ্লিনারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঠিকানা হয়ে উঠবে। উচ্চাভিলাষ, সন্দেহ নেই। তবে স্বপ্ন এক জিনিস, তার বাস্তবায়ন আর এক। ইউজিসি-র নির্দেশাবলি দেখে মনে হয় উচ্চশিক্ষার পরিসর এমনই তো হওয়া উচিত, এত দিন কেন কেউ তা ভাবেননি! ইউরোপ-আমেরিকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার্থীর পছন্দের বিষয় পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকে না, তথাকথিত বিপরীত ধারার বিষয় নিয়ে পড়তেও সমস্যা হয় না বরং উৎসাহ দেওয়া হয় যাতে বিজ্ঞানের ছাত্রও মানবাধিকার নিয়ে পড়তে পারেন— ভারতে কেন তা হবে না! তবে আগামী আট বছরে স্বপ্ন সত্য হওয়া নিশ্চিত ভাবেই দুরাশা, কারণ নিয়ামক সংস্থা হিসেবে ইউজিসি-র গ্রহণযোগ্যতা সাম্প্রতিক কালে প্রশ্নাতীত নয়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পারস্পরিক সংযোগে বেড়ে ওঠার আহ্বান শুনতে ভাল, কিন্তু বাস্তবচিত্র এও বলছে, জাতীয় শিক্ষানীতি পূরণের পথে ইউজিসি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে, বিশেষত গবেষণায় আর্থিক সাহায্য প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে, বহু প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা পরিকাঠামো চলছে কোনও মতে, অধ্যক্ষ-উপাচার্যেরা নিষ্ফল অনুযোগ করছেন বারংবার, অতি সম্প্রতি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘প্রফেসর অব প্র্যাকটিস’ নিয়োগের বিরুদ্ধে শিক্ষামহলে অস্বস্তি ও প্রতিবাদও চাপা থাকেনি। আসল কাজ— উচ্চশিক্ষার পরিবেশ সর্বাংশে উন্নত ও ছাত্রবান্ধব করে তোলা। নির্দেশিকায় দুর্বল কলেজকে তুলনামূলক ভাবে উন্নত প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে, বাস্তবে এই সাহায্য প্রার্থনা ও প্রাপ্তি কি সত্যই সহজ হবে? ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের একটি ডিগ্রি অর্জনের পথই সহজ সুগম নয়, দুই ধারার দু’টি ডিগ্রি স্বপ্নবৎ। শঙ্কা জাগে, রাজনীতি-অর্থনীতির মতোই শিক্ষানীতিতেও এই সমুজ্জ্বল ভবিষ্যতের ঘোষণা স্রেফ ঢক্কানিনাদেই না পর্যবসিত হয়।

College admission UGC university

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়।

  • সঙ্গে পান রোজ আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই -পেপার পড়ার সুযোগ।

  • এখন না পড়তে পারলে পরে পড়ুন, 'সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে।

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

SAVE 1%*
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।