E-Paper

(বি)ভ্রান্তিবিলাস

উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ হয়েছে বেশ কিছু দিন, রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে কোনও নির্দেশ না আসায় সমগ্র ভর্তি প্রক্রিয়াই থমকে ছিল।

An image of books

—প্রতীকী চিত্র।

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৬:০৫
Share
Save

উত্তর অজানা, আবার প্রশ্নগুলোও মোটেই সহজ নয়। কেন্দ্রের জাতীয় শিক্ষানীতি, বা তার অন্তর্ভুক্ত কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক-এর অধীনে কলেজগুলিতে চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ গোড়ায় বিস্তর প্রতিবাদ করেছিল। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, সেই চার বছরের অনার্স পাঠক্রম রাজ্য শুধু মেনেই নেয়নি, কলেজগুলিকে সেই মর্মে ভর্তিও শুরু করতে বলেছে অতি সম্প্রতি। উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ হয়েছে বেশ কিছু দিন, রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তরফে কোনও নির্দেশ না আসায় সমগ্র ভর্তি প্রক্রিয়াই থমকে ছিল। তার একটি কারণ যদি হয়ে থাকে চার বছরের অনার্স নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দেরি, আর একটি কারণ কেন্দ্রীয়, অভিন্ন পোর্টাল তৈরি ও চালু করা নিয়ে গড়িমসি— কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অন্যায্য সুবিধামুক্ত করতে যার কথা অনেক দিন ধরে চলে আসছে। এ বছরও তা হল না।

চার বছরের অনার্স কোর্স চালু না হলে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের অসুবিধা হবে, সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিযোগিতায় তারা পিছিয়ে পড়বে, অন্য বহু রাজ্য যে-হেতু চার বছরের অনার্স শুরু করে দিয়েছে, ছেলেমেয়েরা হয়তো অন্য রাজ্যে পড়তে চলে যাবে— বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত। তা-ই যদি হয়, তবে এই সমস্ত ‘বাস্তববাদী’ দিক খতিয়ে দেখে, সর্বোপরি ছাত্রছাত্রী-অভিভাবক ও শিক্ষকদের মতামত শুনে, এবং তাঁদের ভাল করে বুঝিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিল আগে থেকেই; এত দিন শিক্ষানীতি ও চার বছরের অনার্সের বিরোধিতা করে, আজ হঠাৎ বিবৃতি দিয়ে সেই মর্মে ভর্তি শুরু করতে বলার ধাক্কাটি না দিয়ে। কেন্দ্রের শিক্ষানীতির প্রতি রাজ্যের মনোগত অনুভবটি ঠিক কী, এ নিয়ে কি বিভ্রান্তি তৈরি হল না এতে? শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন রাজ্য কেন্দ্রের শিক্ষানীতি মেনে নেয়নি, বরং জাতীয় শিক্ষানীতির ভাল দিকগুলি নিয়ে কিছু দিনের মধ্যে রাজ্যের নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি হবে। ভর্তির অভিন্ন পোর্টাল তৈরি করে উঠতেই এত দেরি— রাজ্যের শিক্ষানীতি কবে হবে, তাতে কী-ই বা থাকবে, কেন্দ্র-রাজ্যের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার শেষে পড়ুয়ারা হবে কি না, এই প্রশ্নগুলির কোনও উত্তর নেই, নেই উত্তর দেওয়ার মানুষও।

প্রশ্নের শেষ নয় এখানেই। কলেজগুলিকে চার বছরের অনার্স কোর্স শুরু করতে বলা হল, সঙ্গে এও বলা হল যে, আপাতত কাজ চালাতে হবে কলেজের নিজস্ব পরিকাঠামো ব্যবহার করেই, এমনকি প্রয়োজনে অর্থ সংগ্রহও করবে কলেজগুলিই। দেরি করে করে তার পর আচমকা এক সিদ্ধান্ত ও ঘোষণা, অভিন্ন পোর্টালের অনুপস্থিতি, উপরন্তু এখন কলেজগুলিকেই অর্থ ও পরিকাঠামোর সংস্থান করতে বলা, রাজ্যের তরফে এ কি এক প্রকার হাত তুলে নেওয়া নয়? যে ছাত্রছাত্রীরা জেনারেল ডিগ্রির জন্য পড়বে, তাদের পাঠক্রম ক’বছরের হবে বলা হয়নি। কোভিডের জন্য গত তিন বছর ভর্তির আবেদন ফি নেয়নি কলেজগুলি, এ বার তাদের ‘অর্থ সংগ্রহ’ করতে বলা মানে কি আবেদন ফি-সংগ্রহে প্রত্যাবর্তন? নতুন অনার্স ব্যবস্থা কার্যকর করার পরিকাঠামো রাজ্যের সব কলেজে আছে কি না রাজ্যের তরফে তা দেখার কোনও ব্যবস্থা নেই, নেই তাগিদও, সিদ্ধান্ত ঘোষণাই কাজ শেষ। এত সব বিভ্রান্তির গোলকধাঁধায় এ রাজ্যের কলেজশিক্ষার পঠনপাঠন কোথায় যাবে, তা ভাবতেই আশঙ্কা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Education System Graduation WB Education Minister West Bengal government

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।