Advertisement
E-Paper

অপ্রস্তুত

সংক্রমণের চাপ সরকারের সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা দিবার ক্ষমতা অতিক্রম করিয়াছে, তবু সেন্ট্রাল ভিস্টার কাজে এতটুকু ভাটা পড়ে নাই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২১ ০৫:০৯
Share
Save

গত দুই মাসে কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা যখন অতি দ্রুত ঊর্ধ্বমুখী, তখন একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ঘটিতেছে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে, অদ্যাবধি প্রাণ হারাইয়াছেন ৫৯ জন মানুষ। অগ্নিকাণ্ডের কারণ লইয়া বিশেষজ্ঞদের মনে দ্বিধা নাই— উহা সাধ্যাতিরিক্ত চাপের ফল। শয্যা-সরঞ্জাম-কর্মিবর্গ দ্রুত বৃদ্ধি করা সম্ভব হইলেও বৈদ্যুতিক তারের ব্যবস্থা রাতারাতি পাল্টাইয়া ফেলা যায় না। চিকিৎসা সরঞ্জামের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে প্রবল উত্তপ্ত হইয়া উঠে বিদ্যুৎবাহী তার, অতঃপর অগ্নিস্ফুলিঙ্গ। কোথাও শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধিই কাল হইয়াছে, আগুন লাগিবার পর তাহা অতি দ্রুত ছড়াইয়া পড়িয়াছে। দমকল কর্তৃপক্ষের অভিমত, ইতিপূর্বে বহু হাসপাতালেই কদাপি পূর্ণক্ষমতায় কাজ করে নাই আইসিইউ। এক্ষণে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, ভেন্টিলেটর এবং অপরাপর সরঞ্জাম সর্বক্ষণ চালু রাখাই এই বিপত্তির কারণ। কারণ স্পষ্ট হইলেও ফলাফল লইয়া প্রশ্ন মুছিয়া যায় না। অতিমারি কখনও আসে নাই, যন্ত্রগুলি পুরাদমে চালাইবার প্রয়োজনও হয় নাই, কিন্তু তাহার ক্ষমতা নাই কেন? না থাকিলে তাহা কী রূপে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইল? অতএব বৃহত্তর প্রশ্নটি— দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য ব্যবস্থাটি প্রস্তুত নহে কেন?

ভ্রম হইতে শিক্ষা লইতে হয়, ভ্রম শুধরাইলে তবেই অগ্রগমন সম্ভব। ইহা জীবনের নিয়ম, সরকারের নহে। গত বৎসর যখন করোনাভাইরাসের আকস্মিক প্রকোপে দেশ অভিভূত হইয়াছিল, তখনও স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রস্তুতিহীনতা লইয়া বিস্তর কথা খরচ হইয়াছিল, প্রশ্ন উঠিয়াছিল সরকারের দূরদর্শিতা লইয়া। তথাপি পাতা নড়ে নাই, দ্বিতীয় ঢেউয়ে অধিকতর দুর্দশা তাহার প্রমাণ। ভেন্টিলেটর পাওয়া ক্রমশ দুঃসাধ্য হইতেছে, অক্সিজেন অভাবে হাসপাতালের বাহিরে মৃত্যু হইতেছে বহু রোগীর, জীবনদায়ী ঔষধের কালোবাজারি চরমে পৌঁছাইতেছে, এবং সমগ্র ব্যবস্থার উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ শিথিলতর হইতেছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পূর্বাভাস ও সাবধানবাণী সত্ত্বেও সরকারি ভ্রমের পুনরাবৃত্তি অগ্রাধিকারের প্রশ্নটিই উত্থাপন করে। এই প্রসঙ্গে উদ্যোগী হইতে সরকারের যে অনীহা প্রকট হইয়াছে, তাহা গভীর উদ্বেগের কারণ। লক্ষণীয়, দিল্লি শহরে দৈনিক মৃত্যু আড়াইশো ছাড়াইয়াছে, সংক্রমণের চাপ সরকারের সুষ্ঠু চিকিৎসা পরিষেবা দিবার ক্ষমতা অতিক্রম করিয়াছে, তবু সেন্ট্রাল ভিস্টার কাজে এতটুকু ভাটা পড়ে নাই। পশ্চিমবঙ্গের ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর যে আকিঞ্চন উৎকট রূপে প্রকাশিত হইয়াছিল, এক্ষণে সেই দৃঢ়তার সিকিভাগও নাই!

অতিমারি আসিবে, চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হইবে, বহু মানুষ সর্বস্ব হারাইবেন, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ প্রতিবাদে মুখর হইবে, শেষাবধি নূতন বিষয় আসিয়া সব কিছুই চাপা পড়িয়া যাইবে। অতঃপর, ফের এক বিপর্যয়ের অপেক্ষা। কোভিড মোকাবিলায় বৎসরকালে ভারত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই চক্রেই আবর্তিত হইয়াছে। ভারতের গ্রামেগঞ্জে পোক্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা নাই, সংক্রমিত হইলেও তাই বহু জনকেই হাসপাতালে লইয়া যাইবার উপায় নাই; হাসপাতালে পৌঁছাইয়াও শয্যার অভাবে চিকিৎসা মিলিতেছে না আরও বহু জনের; যাঁহারা সেই সুযোগ পাইতেছেন, পরিকাঠামোর অভাবে তাঁহাদের চিকিৎসা সুসম্পন্ন হইতেছে না। আপাতত সমালোচকদের দোষারোপেই ব্যস্ত সরকার। এহেন কার্যক্রম না পাল্টাইলে ভয়াবহ অপ্রস্তুতিই ভবিতব্য।

COVID-19 coronavirus

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।