E-Paper

খেতাবের উষ্ণতা

ইতিপূর্বে উষ্ণতম বছরের শিরোপাটি ধরে রেখেছিল ২০১৬ এবং ২০২০ সাল। এই দুই বছরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ছিল প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগের তুলনায় মোটামুটি ১.২৫ ডিগ্রি বেশি।

summer.

—প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:১১
Share
Save

উষ্ণতম বছরের শিরোপা পেতে চলেছে ২০২৩ সাল। জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এর কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সতর্কবার্তা বহু পূর্বেই দিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এ বছর তার সঙ্গে জুড়েছে আবহাওয়ায় এল নিনো প্রভাব। তাপমাত্রা বেড়েছে পূর্ব ও মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরের জলভাগের। দুইয়ে মিলেই এমন ভয়ঙ্কর খেতাব প্রাপ্তির আশঙ্কা। বস্তুত উষ্ণতম বছরের তালিকায় ২০২৩ সালটিকে একেবারে প্রথম স্থানে ঠেলে তোলার কৃতিত্ব এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসটির। বিশাল ব্যবধানে আগের সব রেকর্ড ভেঙে সে নিজেও উষ্ণতম সেপ্টেম্বরের স্থানটি দখল করেছে। সেপ্টেম্বরের এই চরম তাপমাত্রা বৃদ্ধি কিছুটা অপ্রত্যাশিত হলেও সামগ্রিক ভাবে ২০২৩ সালটি যে তাপমাত্রার নিরিখে রেকর্ড ভাঙার ক্ষমতা রাখে, তেমনটা আন্দাজ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই অনুমানই সত্য প্রমাণ হওয়ার পথে। এবং বছর এখনও ফুরোয়নি। চলতি অক্টোবর ও বছর শেষের দু’টি মাসও যে সাধারণ সময়ের তুলনায় উষ্ণতর হবে, তেমন সম্ভাবনার কথাও শোনা গিয়েছে।

ইতিপূর্বে উষ্ণতম বছরের শিরোপাটি ধরে রেখেছিল ২০১৬ এবং ২০২০ সাল। এই দুই বছরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ছিল প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগের তুলনায় মোটামুটি ১.২৫ ডিগ্রি বেশি। গত বছর সেই রেকর্ড ভাঙেনি। বরং কিছুটা কমে তা ছিল ১.২ ডিগ্রি বৃদ্ধির কাছাকাছি। কিন্তু এই বছরের গতিপ্রকৃতি দেখে বিজ্ঞানীদের অনুমান, তা বৃদ্ধি পাবে প্রাক্-শিল্পবিপ্লব যুগের তুলনায় ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেঁধে রাখার প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছিল বিশ্বের তাবড় দেশের মুখে। অথচ, সাম্প্রতিক কালে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির বহরে সেই সীমারেখাও আর আদৌ নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে না। এই বছরই তা ভাঙবে কি না, তার জন্য আরও কিছু কাল অপেক্ষা করতে হবে। এর অর্থ অবশ্যই এমনটা নয় যে, অতঃপর এই বৃদ্ধিই চিরস্থায়ী হবে। কিন্তু এ-হেন বিরাট ঊর্ধ্বগতিকে নীচে টেনে নামানোর পন্থা হিসাবে এত কাল যা উচ্চারিত হয়ে এসেছে, যে সমস্ত লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে, তা যে আদৌ যথেষ্ট নয়, সেটাও যেন স্পষ্ট হয়ে উঠল এই বছরে।

তাপমাত্রার ক্রমশ বৃদ্ধিতে যে পরিবর্তনগুলির আশঙ্কা এত কাল করে আসা হয়েছে, তার অধিকাংশই আজ বাস্তব। সারা বিশ্ব জুড়ে কোথাও অতিবৃষ্টি, কোথাও অনাবৃষ্টির কারণে খাদ্য উৎপাদন মার খাচ্ছে। ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হচ্ছে উপকূল অঞ্চল। সম্প্রতি সিকিমে যে মহা বিপর্যয় নেমে এল, তার এক সম্ভাব্য কারণ হিসাবে হিমবাহ-সৃষ্ট হ্রদের ফেটে যাওয়ার কথা আলোচিত হচ্ছে। উষ্ণায়ন বাড়তে থাকলে উচ্চ পার্বত্য এলাকায় হিমবাহের গলনে হ্রদগুলি টইটম্বুর হয়ে থাকবে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেও এ-হেন বিপর্যয় নেমে আসার সম্ভাবনা প্রবল। সম্প্রতি আন্টার্কটিকায় বিজ্ঞানীরা যে অকাল-বসন্তের সন্ধান পেয়েছেন, বরফের চাদর সরিয়ে ফুল ফোটার যে নমুনা সেখানে মিলেছে, পশ্চিম ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মঁ ব্লাঁ যে গত দু’বছরে দু’মিটারেরও বেশি উচ্চতা খুইয়েছে— এ সবই এক সর্বনাশের দিকে ইঙ্গিত করে। ‘আধুনিক’ বিশ্ব দ্রুতবেগে সেই দিকেই ধাবমান।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Summer Climate Change

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।