Advertisement
E-Paper

আর কত কুনাট্য

মন্ত্রী, নেতা ও কর্তাদের স্বীকার করা উচিত, জনসংযোগের কাজটি কী ভাবে করলে তা সুফলপ্রদ হয়, সে কথা তাঁদেরও ঠিক জানা নেই।

পরীক্ষার্থী সমাজেরও কিছু বোঝা ও মানার বিষয় থেকে যায়।

পরীক্ষার্থী সমাজেরও কিছু বোঝা ও মানার বিষয় থেকে যায়। প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:২৯
Share
Save

একটি পরীক্ষা নিয়ে এ-হেন উপর্যুপরি কুনাট্যরঙ্গ, এ বোধ হয় কেবল পশ্চিমবঙ্গ নামক রাজ্যেই সম্ভব। অবশেষে টেট পরীক্ষা হল, কিন্তু পরীক্ষার সময়েও কুনাট্যের কমতি হল না। একের পর এক গুরুতর অভিযোগ, দুর্নীতি, মন্ত্রী থেকে শুরু করে কেষ্টবিষ্টুদের শাস্তিবিধান, চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না, অভিযোগকারী প্রার্থীদের মধ্যেই একাধিক দল ও তাদের সংঘর্ষ, আদালতের বারংবার হস্তক্ষেপ, মাননীয় বিচারপতির তীব্র ভর্ৎসনা, এমনকি ক্রুদ্ধ বার্তা— এ সবের পর যখন পরীক্ষাগ্রহণের সময় এল, তখনও এত বিরাট পরিমাণ অভিযোগ তৈরি হওয়া অতীব দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্য প্রশাসন আর একটু যত্নশীল হতেই পারত, দেখতে পারত যাতে এই পরীক্ষা ঘিরে এত রকম অব্যবস্থা এবং অস্থিরতা তৈরি না হয়। সেই যত্নের অনুপস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় উদ্ভূত সমস্যার দায় সরকারকেই নিতে হবে। মন্ত্রী দাবি করেছেন, পরীক্ষা নির্বিঘ্ন হয়েছে। বাস্তবিক, মন্ত্রীর দাবি যে সদর্থক হবেই সে কথা জানাই ছিল। দরকার— পরীক্ষার্থী সমাজের সন্তোষ ও আশ্বাস তৈরি। সেটা শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত করা গেল কি না, প্রশাসন ও সরকার সেই সংবাদ রাখছেন আশা করা যায়।

প্রসঙ্গত, পরীক্ষাক্ষেত্রটিকে যুদ্ধক্ষেত্র মনে হওয়াই তো যথেষ্ট আপত্তিকর। পরীক্ষার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং অন্যান্য কড়াকড়ি প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না— বিশেষত যে পরীক্ষা নিয়ে এত দিনকার ক্রোধ ও ক্ষোভ জমে আছে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা রাখাই স্বাভাবিক। কিন্তু আর একটু সুশৃঙ্খল ভাবে কড়াকড়ি করা যেত, নির্দেশগুলি আগে থেকেই স্পষ্ট ও প্রাঞ্জল করা যেত। সংবাদমাধ্যমের সাহায্য নিয়ে তার প্রচারও করা সম্ভব ছিল। ব্যাগ নেওয়া যাবে কি না, পরীক্ষার্থিনীরা হাতে কোনও আভরণ পরতে পারবেন কি না, সঙ্গে কী নেওয়া যাবে আর যাবে না, এই সবই যদি আগে থেকে বলে দেওয়া হত, সঙ্কট অনেক কমতে পারত। কিছু কিছু সর্বভারতীয় পরীক্ষার ক্ষেত্রে ঠিক এই নিয়মগুলিই মানা হয়, তার দৃষ্টান্ত দেখিয়েই প্রশাসন বলে দিতে পারত কোন স্তরের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলার ব্যবস্থা হচ্ছে। মন্ত্রী, নেতা ও কর্তাদের স্বীকার করা উচিত, জনসংযোগের কাজটি কী ভাবে করলে তা সুফলপ্রদ হয়, সে কথা তাঁদেরও ঠিক জানা নেই।

এবং, পরীক্ষার্থী সমাজেরও কতকগুলি বোঝা ও মানার বিষয় থেকে যায়। দুর্ভাগ্যজনক, পরীক্ষা একটি নিয়মতান্ত্রিক ঘটনা। নিয়মনীতি মেনেই পরীক্ষা দিতে হয়, উপায় নেই। পরীক্ষার জন্য আজকাল যে যুদ্ধকালীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়, তা কর্তৃপক্ষের গোঁয়ারতুমি নয়, বরং পরীক্ষাকালে অন্যায় ও অনৈতিক কাজের মাত্রা এতখানি বেড়ে যাওয়ার কারণেই তার প্রয়োজন। সুতরাং, যা কিছু নিয়ম, আপত্তিকর ও বিরক্তিকর হলেও তা মেনে চলাটাই কর্তব্য। এবং তা নিয়ে যথাসম্ভব কম অশান্তি করলেই নিজের ও অন্যের শান্তিভঙ্গের সম্ভাবনা কম। বিমানযাত্রার সময়ে যে ধরনের নিরাপত্তানীতি যাত্রীরা বিরক্ত হয়েও মেনে নেন, এ ক্ষেত্রেও তাই। ‘শাঁখানোয়ার সাহায্যে কারচুপি’ করা যাবে কি না, এই সব প্রশ্ন, প্রতিপ্রশ্ন, সবই তাই সম্পূর্ণ অবান্তর। প্রশাসন ও নাগরিক সমাজ— দুইয়ের রকমসকম দেখে মনে হয়, পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশই একটি বিশালাকার মাৎস্যন্যায়ের দিকে অতি দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। এই বেলা তার রাশ না টানলে সমূহ সর্বনাশ।

West Bengal TET 2022 TET Examinations

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।