Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Astronomy

একাকী মানব ভ্রমি

১৯৫০ সালে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এনরিকো ফের্মি বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড টেলরকে প্রশ্ন করেন, আগামী দশ বছরের মধ্যে উড়ন্ত চাকি দেখার সম্ভাবনা কতটা?

—প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৪৯
Share: Save:

আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) এখন আনআইডেন্টিফায়েড অ্যানোম্যালাস ফেনোমেনা বলে পরিচিত। বহু দিন ধরে বিতর্কিত দাবি পেশ করার পরে কিছু পাওয়া যায়নি। ভিনগ্রহীদের সন্ধান মেলেনি ফলে এখন নাম পরিবর্তন করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞানীরা ভিনগ্রহীদের পাঠানো সঙ্কেত আবিষ্কার করেছেন, অনেক বার শোনা গিয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েক বার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছেন, এবং ভুল শুধরে নিয়েছেন। এমন ভুল ঘটেছিল ১৯৬৭ সালের ২৮ নভেম্বর। একটি তারা থেকে সঙ্কেত আসছিল নির্দিষ্ট সময় অন্তর। দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানী ওই সঙ্কেত শনাক্ত করেছিলেন, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যান্টনি হিউইশ এবং পিএইচ ডি-র ছাত্রী জসিলিন বেল। পরে দেখা যায়, ওই সঙ্কেত নক্ষত্র-আবর্তনকারী কোনও গ্রহ থেকে আসেনি, ওই নক্ষত্র থেকেই এসেছে। এই ধরনের নক্ষত্রকে বলে পালসার (পালসেটিং স্টার), যারা একেবারে নির্দিষ্ট সময় অন্তর আলোক-সঙ্কেত ছাড়ে।

পালসার আবিষ্কারের জন্য হিউইশ নোবেল প্রাইজ় পান। পালসারের নাম দেন এলজিএম বা লিটল গ্রিন মেন। ভিনগ্রহীদের এক সময় ওই নামেই ডাকা হত। সব বারেই যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নতুন আবিষ্কারে পৌঁছেছেন, এমন নয়। অনেক সঙ্কেতের ক্ষেত্রে উৎসসন্ধানও করা যায়নি। যেমন ১৯৭৭ সালের ১৫ অগস্ট ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেরি এমান যে সঙ্কেত দেখে চমকে উঠেছিলেন, তা জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে ‘wow’ সিগন্যাল হিসাবে পরিচিত, যা এমান ওই সঙ্কেতের পাশে লিখে রেখেছিলেন। পরে আর পাওয়া যায়নি সেই সঙ্কেত।

১৯৫০ সালে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী এনরিকো ফের্মি বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড টেলরকে প্রশ্ন করেন, আগামী দশ বছরের মধ্যে উড়ন্ত চাকি দেখার সম্ভাবনা কতটা? টেলর উত্তর দিয়েছিলেন, টেন টু দ্য পাওয়ার মাইনাস সিক্স। অর্থাৎ, ১০০০,০০০-এর মধ্যে ১। চার্লস রবার্ট ডারউইনের ব্যাখ্যা যদি ঠিক হয়, যদি প্রাগৈতিহাসিক রাসায়নিক মাঝে বিদ্যুৎপাত চালু থাকা নিশ্চিত হয়, তা হলে পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহে প্রাণের অঙ্কুরোদ্‌গমের সুযোগ ঘটতেই পারে। এমতাবস্থায় ভিনগ্রহীদের বেরিয়ে পড়ার কথা ব্রহ্মাণ্ডে আর কোথাও প্রাণ আছে কি না, তার সন্ধানে। ‘ইটি’রা তা হলে গেল কোথায়? উত্তর দিয়েছেন ১৯৭৫ সালে বিজ্ঞানী মাইকেল হার্ট। কোয়ার্টারলি জার্নাল অব রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি-তে। বলেন, এক, মহাকাশে দূরযাত্রা অসম্ভব এবং দুই, ইটিরা নেই। ইটি খোঁজার এখন মস্ত উপকরণ হল ‘ড্রেক ইকোয়েশন’। ১৯৬০ সালে এর প্রণেতা ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার ন্যাশনাল রেডিয়ো অ্যাস্ট্রোনমি অবজ়ারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক ড্রেক। ড্রেক ইকোয়েশনে আছে নানা হিসাব, একটা গ্যালাক্সিতে কত নক্ষত্র থাকে, সেই সব নক্ষত্রের গ্রহে কত শতাংশে পৃথিবীর মতো আবহাওয়া বজায় থাকে, সেই সব গ্রহের কত শতাংশের মধ্যে প্রাণের আবির্ভাব ঘটেছে, সেই সব গ্রহের কত শতাংশে বুদ্ধিমান প্রাণী জন্মেছে ইত্যাদি। বিজ্ঞান তো কেবল জ্ঞান নয়, দর্শনও বটে। ইটি-গবেষক জন উলফ-এর মন্তব্য মনে করলেই বোঝা যায়, কেন বিজ্ঞান আসলে দর্শন। তিনি বলেছিলেন, “কেউ কোত্থাও না থাকলে আমরাই তো ঈশ্বর।” এ দর্শন কেবল গৌরবের কথা নয়, দায়িত্বেরও। মানুষ তা জানে তো?

অন্য বিষয়গুলি:

Astronomy Science Earth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy