E-Paper

ইতিকর্তব্য

রাজনীতির দলাদলি, ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধি সরিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে এই কর ও তার পূর্বাপর নিয়ে ভাবা, এবং সরকার কী ভাবছে তা নাগরিকদের সামনে স্পষ্ট ভাবে বলা।

Artificial Intelligence

—প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৭
Share
Save

সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে আলাদা করে কৃত্রিম মেধা বা এআই নিয়ে ভারতের চিন্তাভাবনা, গবেষণা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, কিছুই খোলসা করেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এরই মধ্যে কথা উঠেছে তা নিয়ে— যে জিনিসটি ভবিষ্যৎ বিশ্বের অবধারিত নিয়ামক, এরই মধ্যে বিশ্বের উন্নত দেশগুলিতে যার বহুল ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে, তা থেকে মুখ ঘুরিয়ে আর কত দিন? বরং নতুন অর্থবর্ষের বাজেটে তার সুচিন্তিত উল্লেখ এবং এআই সংক্রান্ত উদ্ভাবন ও গবেষণা বিষয়ে উপযুক্ত ব্যয়-বরাদ্দ এই বার্তাটি দিত, এআই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ঠিক কী হতে চলেছে। কেবল সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্যই নয়, এ কাজ আরও প্রয়োজন কারণ এআই-এর প্রভাব প্রত্যক্ষ ভাবে কাজের বাজারে তথা বিশেষ বিশেষ কর্মক্ষেত্রে পড়তে বাধ্য; এরই মধ্যে তা ভারতে শুরুও হয়ে গিয়েছে, এআই-এর জেরে আগামী তিন বছরে দেশে ১ কোটি ৬০ লক্ষ কর্মহানি ঘটাবে বলে সমীক্ষায় জানিয়েছে একটি সংস্থা।

এআই-এর বিরোধিতা করে যে তাকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বরং অবিলম্বে প্রয়োজন এআই-এর কারণে যে যে কর্মক্ষেত্রে যে কর্মী-মানুষগুলির প্রয়োজন ফুরোচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, সেই কাজের জায়গা ও কর্মীদের দিকে মনোযোগ দেওয়া। এই সূত্রেই উঠে এসেছে ‘রোবট ট্যাক্স’ বা ‘এআই ট্যাক্স’-এর কথা— যে শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রগুলি এমন ভাবে এআই-এর ব্যবহার করছে যার কারণে কাজ হারাচ্ছেন মানুষ, তাদের উপরে একটি বিশেষ করের বোঝা চাপানো। সারা বিশ্বেই এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে, মাইক্রোসফট সংস্থার কর্ণধার বিল গেটস-ও এই করের সমর্থন করেছেন, এবং লক্ষণীয়— গত মাসে ‘স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ’ নামে একটি আরএসএসপন্থী সংগঠন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে এক আলোচনায় ভারতেও এই কর চালু করার প্রস্তাব করেছে। সাম্প্রতিক লোকসভা ভোটের ফল থেকে শিক্ষা নিয়েই হোক কিংবা নিজেদের দলের লোকের কাজ হারানোর আশঙ্কা থেকে, তাদের প্রস্তাব— রোবট ট্যাক্সের টাকা ব্যয়িত হোক কাজ হারানো বা হারাতে বসা কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের কর্মসামর্থ্য উন্নত করার কাজে।

রাজনীতির দলাদলি, ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধি সরিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে এই কর ও তার পূর্বাপর নিয়ে ভাবা, এবং সরকার কী ভাবছে তা নাগরিকদের সামনে স্পষ্ট ভাবে বলা। একুশ শতকের বাজার ও অর্থনীতি যে অভিমুখে চলেছে তাতে এআই বিনা গতি নেই, এমনকি তা দক্ষতা ও দ্রুততার প্রশ্নে মানুষ-কর্মীর কর্মচ্যুতির মূল্যে হলেও। এ হয়তো কঠিন ও অপ্রিয় সত্য, কিন্তু সত্য। অন্য দিকে, এআই-এর কারণে কাজ হারানো মানুষের পারিবারিক সামাজিক ও আর্থিক সুরক্ষার দিকটিও সরকারেরই দেখা কর্তব্য, নতুন প্রযুক্তির দোহাই পেড়ে সে নাগরিকের অধিকার থেকে মুখ ফেরাতে পারে না। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)-এর মতো সংস্থাও সম্প্রতি বলেছে, সরকারের উচিত করব্যবস্থা ও সামাজিক সুরক্ষা পরিকাঠামো পোক্ত করা, যাতে এআই-এর কারণে হওয়া উৎপাদন, উন্নয়ন ও লাভের ন্যায্য ভাগ কর্মী তথা নাগরিকেরা পান। ভারতে কী হবে তা সময়ই বলবে, কিন্তু সরকারের ভাবনা বা দূরদর্শিতা কিছুই এখনও নজরে পড়ছে না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Artificial Intelligence India Nirmala Sitharaman Union Budget 2024

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।