E-Paper

প্রতারণার ফাঁদে

বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে গত কয়েক বছরে দেশের অর্থব্যবস্থায় অনলাইন লেনদেনের দ্রুত প্রসার ঘটেছে। কিন্তু, ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল জালিয়াতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪ ০৯:০০
Share
Save

অনলাইন জালিয়াতি এখন আর নতুন বিষয় নয়। হামেশাই এই সংক্রান্ত খবর সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেল, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী দেশের ৩০২টি জেলার বাসিন্দা মোট ২৩,০০০ জনের মধ্যে গত তিন বছরে ৪৭% মানুষ আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ৪৩% মানুষ ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মুখে পড়ার অভিযোগ করেছেন, আর ৩৬% বলেছেন ইউপিআই লেনদেনে প্রতারণার কথা। অন্য দিকে, অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী অভিযোগ করেছেন যে, দেশি-বিদেশি সব ধরনের সংস্থা এবং ওয়েবসাইটেই ক্রেডিট কার্ডে অননুমোদিত চার্জ নেওয়া হয়ে থাকে। প্রতারণা রুখতে আগেভাগে ব্যবস্থা করা এবং গ্রাহক সচেতনতা জরুরি বলে জানিয়েছে সমীক্ষা আয়োজক সংস্থাটি।

বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে গত কয়েক বছরে দেশের অর্থব্যবস্থায় অনলাইন লেনদেনের দ্রুত প্রসার ঘটেছে। কিন্তু, ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল জালিয়াতি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ফলে প্রতারণা ঠেকাতে নিত্যনতুন পথ খুঁজতে হচ্ছে। যার সূত্রে সম্প্রতি এক ডিজিটাল পেমেন্ট ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার প্রস্তাব পেশ করেছে ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক, যেখানে সুরক্ষিত ডিজিটাল পেমেন্টের পরিবেশ গড়ে তুলতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে। গত ফেব্রুয়ারিতেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা কিংবা সাইবার অপরাধ বা আর্থিক জালিয়াতিতে অপব্যয়িত এক লক্ষ চল্লিশ হাজার মোবাইল সংযোগও বাতিল করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সময়ের সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে প্রতারকরাও যে ভাবে প্রতারণার নিত্যনতুন ফন্দিফিকির বার করছে, তাতে প্রতিনিয়ত জালিয়াতদের থেকে এক কদম এগিয়ে থাকা ছাড়া নজরদারি সংস্থা বা সরকারের কোনও উপায় নেই।

অনলাইন লেনদেনের এই দ্রুত অগ্রগতি ভারতীয় অর্থব্যবস্থার পক্ষে সুসংবাদ হলেও, আর্থিক সাক্ষরতার অভাব এবং অবিবেচকের মতো প্রযুক্তির ব্যবহারের জেরে জনসংখ্যার এক বিরাট অংশকে প্রতারকদের হাতে পড়তে হচ্ছে। যদিও অনলাইন জালিয়াতি বিষয়ে নাগরিককে সচেতন করার জন্য উদ্যোগ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, শুধুমাত্র সেটুকুই কি যথেষ্ট? তা ছাড়া গ্রাহকের প্রান্ত থেকে তথ্য চুরি যাওয়ার ঘটনা যেমন ঘটে, তেমনই বিভিন্ন সংস্থার তথ্যভান্ডার থেকেও চুরি যাচ্ছে তথ্য। ফলে, সরকারকে প্রতারণার এই বিষয়টিকে সামাল দিতে হবে বিভিন্ন স্তর থেকে। যেমন, ব্যাঙ্ক পরিষেবায় বৈদ্যুতিন লেনদেন বাড়াতে পরিকাঠামো গড়ে তোলা এবং তার খরচ কমানোর উপরে জোর দেওয়া প্রয়োজন। বৃদ্ধি করতে হবে সাইবার সুরক্ষাও। এই প্রক্রিয়ায় কোনও ত্রুটি রয়েছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারির পাশাপাশি সেগুলির মানোন্নয়নও দরকার। প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়লে দ্রুত সক্রিয় হতে হবে ব্যাঙ্কগুলিকেও। যে সংস্থা তথ্য চুরি এড়াতে যথেষ্ট ব্যবস্থা করবে না, তথ্য চুরির আর্থিক দায় বর্তাবে সেই সংস্থার উপরেই। অন্য দিকে, ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের ক্ষেত্রে বিমা বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে, যেখানে জালিয়াতি হলে তার জন্য বিমার টাকা পাওয়া যাবে। দেশকে যখন ডিজিটাল লেনদেনের দিকে ঠেলে দিতে আগ্রহী সরকার, তখন গ্রাহকের স্বার্থরক্ষার দায়িত্বটিও বর্তায় তার উপরেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Financial Fraud Online fraud Cyber fraud Financial Risk

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।