Advertisement
E-Paper

পড়ুয়ার অধিকার

ভুল হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। সেই ভুল শুধরে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে চাকরির নিয়োগপত্র পেতে চলেছেন আরও ৫৪ জন প্রাথমিক শিক্ষক পদপ্রার্থী।

কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট।

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৫:৫০
Share
Save

ভুল হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। প্রশ্নের ভুল। সেই ভুলের জন্য ছ’বছর ধরে বিস্তর ভোগান্তি ও বঞ্চনার শিকার হয়েছেন শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। অবশেষে সেই ভুল শুধরে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে চাকরির নিয়োগপত্র পেতে চলেছেন আরও ৫৪ জন প্রাথমিক শিক্ষক পদপ্রার্থী। ইতিপূর্বে ২৩ জনকে একই ভাবে চাকরির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বলা হয়েছিল, শূন্যপদ না থাকলে প্রয়োজনে শূন্যপদ সৃষ্টি করে চাকরি দিতে হবে। এবং তাঁরা চাকরি পেলেন কি না, পরবর্তী শুনানির দিন আদালতকে জানাতে হবে। অর্থাৎ, দুর্নীতির অভিযোগ এবং তজ্জনিত যে অচলাবস্থা এত দিন ধরে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগের পথে বাধার সৃষ্টি করছিল, সেই অবস্থা কিছুটা হলেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত। শুভ ইঙ্গিত।

কিন্তু আলোর উল্টো পিঠটিও দেখা প্রয়োজন বইকি। নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে বঞ্চনা, ভোগান্তি, মামলা, আন্দোলন পেরিয়ে অবশেষে নিয়োগ সম্ভাবনাটি উজ্জ্বল হওয়া— প্রতিটি ধাপই বিশ্লেষিত হয়েছে শিক্ষকের প্রয়োজন এবং তাঁদের সমস্যার প্রতিকার অনুসারে। এই বিশ্লেষণ অতীব গুরুত্বপূর্ণ, সন্দেহ নেই। কিন্তু এর ফলে অন্য যে বাস্তবটি কিছুটা উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে, তা হল রাজ্যের সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক না থাকার বিষয়টি। ঘটনা হল, শিক্ষক নিয়োগে ঘাটতির সূত্রটিই শিক্ষক ও পড়ুয়া— উভয় পক্ষের বঞ্চনাকেই একত্রে বেঁধেছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় বহু জেলা স্কুলে পঠনপাঠন কার্যত শিকেয় উঠেছে। শিক্ষকের অভাবে স্কুলের উঁচু ক্লাসে বিজ্ঞান পড়ানো বন্ধ রাখতে হয়েছে, এমন উদাহরণও বিরল নয়। জেলার স্কুলগুলিতে বহু ক্ষেত্রে এক বা দুই জন পূর্ণ সময়ের শিক্ষকের উপরেই সমগ্র বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের ভার ন্যস্ত। কেউ অনুপস্থিত থাকলে হয় অশিক্ষক কর্মচারী ক্লাস নেন, নয়তো পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়। পার্শ্বশিক্ষকদের সাহায্যে অনেক স্কুলে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হলেও সমস্যা তাতে সম্পূর্ণ মেটে না। এবং এই চিত্র সাম্প্রতিক নয়, দীর্ঘ দিনের। তদুপরি, গত জুন মাসে আদালতের নির্দেশে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল হওয়ায়, এবং তাঁদের শূন্যপদে নতুন শিক্ষক না আসায় সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলি বিপদে পড়েছে।

অতিমারিতে ইতিমধ্যেই রাজ্যে স্কুলভিত্তিক পঠনপাঠন যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন। সেই প্রক্রিয়া পুনরায় ছন্দে ফেরার লগ্নে পাখির চোখ হওয়া প্রয়োজন ছিল গত দু’বছরের ক্ষতি পূরণ করে শিক্ষার স্বাভাবিক গতি বজায় রাখা। তার পরিবর্তে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে যদি শিক্ষকের অভাবে পড়ুয়ারা ক্রমাগত শিক্ষাবঞ্চিত থেকেই যায়, তবে অচিরেই বিদ্যালয় শিক্ষার প্রতি তারা আগ্রহ হারাবে। ফলত সকলের জন্য শিক্ষা ও বিদ্যালয়ভিত্তিক শিক্ষা— উভয় ভাবনারই অপমৃত্যু ঘটবে। সুতরাং, শিক্ষাক্ষেত্রে এটি আপৎকালীন অবস্থা। বেআইনি নিয়োগ, টাকার বিনিময়ে চাকরির থেকেও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হল— শিক্ষার মৌলিক অধিকারটি লঙ্ঘিত হওয়া। অবিলম্বে গয়ংগচ্ছ ভাব ত্যাগ করে সরকারকে শূন্যপদগুলি পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে। আদালতের হস্তক্ষেপে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জট কাটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, আশার কথা। কিন্তু ভবিষ্যতে যেন ফের মামলা, কমিশন, তদন্ত ইত্যাদির ফাঁসে অমূল্য সময় নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে সব পক্ষকেই।

WBBPE Calcutta High Court

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।