বাঙালি রাজনীতি-সচেতন জাতি, সে নিয়ে সন্দেহ নেই। তবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের আবহে একটা কথা মনে হচ্ছে, মহাত্মা গাঁধী থেকে নেতাজি সুভাষ, জওহরলাল নেহরু থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নিয়ে আমরা যত জানি বা কথা বলি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তত বলি না। অথচ তাঁর রাজনৈতিক চেতনা ও কর্মকাণ্ডের মূলে ছিল সাধারণ মানুষ, এবং সেই সাধারণ মানুষ মানে বাঙালিই। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্সে সেই ঐতিহাসিক ভাষণের কিছু অংশ বাঙালির স্মৃতিতে অক্ষয় হয়ে আছে— ‘‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবা না... রক্ত যখন দিয়েছি তখন আরও দেব...’’ নেতাজির সেই রক্তের বদলে স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি মনে পড়ে যায় এ কথা শুনতে শুনতে। প্রসঙ্গত, মুসলিম লিগ-রাজনীতি করা বঙ্গবন্ধু নেতাজি সুভাষেরও গুণগ্রাহী ছিলেন। তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে তিনি লিখেছেন সিঙ্গাপুর থেকে ‘সুভাষবাবুর বক্তৃতা শুনে চঞ্চল’ হয়ে ওঠার কথা। আজকের বাঙালি বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে চর্চা করলে তার রাজনীতিবোধ সমৃদ্ধতর হবে।
তপস্যা আদক
কলকাতা-৯৪
শিক্ষক নিয়োগ
সম্প্রতি (২৬-২-২০২০) রাজ্যের বিদ্যালয় শিক্ষাবিভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য নতুন নিয়োগ বিধির জন্য গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছে।
বিগত বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ১৯৯৭ সালের ৩ অক্টোবর (৮৬৩ এসই) স্কুল সার্ভিস কমিশন আইন সহকারী শিক্ষকদের জন্য এবং পরে ১৯৯৮ সালের ৮ জানুয়ারি (১৪ এসই) প্রধান শিক্ষকদের জন্য নিয়োগ বিধি এবং তারও পরে রাজ্যের মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের জন্য গ্রন্থাগারিক, করণিক ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে নিয়োগ বিধি চালু হয়। উদ্দেশ্য ছিল, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে স্বজনপোষণ ও আর্থিক দুর্নীতির যে অভিযোগ বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে উঠত, তার অবসান ঘটানো এবং যোগ্য শিক্ষিত বেকার যুবক/যুবতীদের চাকরি সুনিশ্চিত করা। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি বামফ্রন্ট সরকারের এই সাধু উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছিল। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, এই স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে প্রায় প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষিত বেকার যুবক/যুবতীর বিদ্যালয়ে কর্মসংস্থান হয়েছে। পরবর্তী কালে নিয়োগবিধির ক্ষেত্রে কিছু কিছু পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। কিন্তু মূল নিয়মের কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।
কিন্তু এ বারে বিদ্যালয় শিক্ষাবিভাগ রাজ্যের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির জন্য সহশিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য যে নিয়োগবিধি জারি করল, তাতে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের নিরিখে প্রার্থীকে যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে। আবেদনকারী পরীক্ষার্থীর যে অ্যাকাডেমিক রেকর্ড, সে যত ভাল নম্বরই পাক না কেন, তার কোনও গুরুত্ব ও ‘ওয়েটেজ’ থাকবে না, কোনও মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভা বা কাউন্সেলিং হবে না। আমরা জানি আইএএস, ডব্লিউবিসিএস প্রভৃতি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেও ভাইভা বা মৌখিক উত্তীর্ণ হতে না পেরে অনেকে চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এর ভাল বা মন্দ উভয় দিকই আছে। কিন্তু তাই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্ত ডিগ্রি বা তার নম্বর কোনও ভাবেই গুরুত্ব পাবে না?
আমরা, যারা দীর্ঘ দিন স্কুলশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, প্রধান শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ দিন কাজ করেছি, শিক্ষাবিভাগের এই সিদ্ধান্তকে আন্তরিক ভাবে মেনে নিতে পারছি না। স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের আগে বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি শিক্ষক নিয়োগ করত, তখনও অ্যাকাডেমিক রেকর্ডকে সামনে রেখেই তা করা হত। এমনকি সর্বশিক্ষা মিশনের মাধ্যমে ২০০৪-০৫ সালে যে সব প্যারাটিচার বা পার্শ্বশিক্ষক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নিযুক্ত হয়েছিলেন, তখনও অ্যাকাডেমিক রেকর্ডকে সামনে রেখেই তা করা হয়েছিল। আজকের শিক্ষকদের জন্য আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতামানও ৫০ শতাংশ নম্বর নির্দিষ্ট প্রাথমিক শিক্ষক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদের জন্য। যদি শিক্ষক পদপ্রার্থী হওয়ার জন্য অ্যাকাডেমিক রেকর্ডের একটা মানদণ্ড থাকে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তা থাকবে না কেন?
নবকুমার কর্মকার
সাধারণ সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি
এত বৈষম্য?
প্রায়ই গণমাধ্যমে খবর দেখি, ‘মাস পয়লায় বেতন হল না স্কুল শিক্ষকদের’, ‘২ তারিখেও অ্যাকাউন্টে ঢুকল না বেতন’, ‘বাড়ি যাবেন বেতনের ব্যবস্থা করে, ডিআইদের নির্দেশ’, ‘আজকেই দিতে হবে বেতন, ডিআইদের নির্দেশ’। আমরা বিভিন্ন এজেন্সি দ্বারা নিযুক্ত ৭২৬টি সরকারি ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়ে নবম-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানে কর্মরত এনএসকিউএফ ভোকেশনাল ট্রেনার। আমাদের ভোকেশনাল বিষয়গুলি মাধ্যমিকে বোর্ডের এবং উচ্চ মাধ্যমিকে কাউন্সিলে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেয়। আমরা সাধারণ শিক্ষক নই মানলাম, কিন্তু সরকারি নির্দেশে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে এই সিএসএস-ভিএসই স্কিমে কর্মরত। ২০১৩ সালে এনভিইকিউএফ থেকে বর্তমানে নাম পরিবর্তিত হয়ে এনএসকিউএফ হয়েছে। আমরা সঠিক সময়ে তো নয়ই, মাসের পর মাস বেতন পাই না। শিক্ষিকারা মাতৃত্বকালীন ছুটি পর্যন্ত পান না। ভবিষ্যৎ একেবারে অনিশ্চিত। অবাক করা ব্যাপার, একই পদে, একই বিদ্যালয়ে দু’জন আলাদা বিষয়ে নিযুক্ত ভোকেশনাল ট্রেনারের পারিশ্রমিক আলাদা। এমতাবস্থায় কারিগরি দফতর এবং রাজ্য সরকার কেন কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করছে না? আমাদের সংসার চলবে কী করে? কেন এতখানি বৈষম্যের শিকার হব?
শুভদীপ ভৌমিক
বড়িশা গার্লস হাইস্কুল
এখানেও মাইক
৯-২ তারিখে সর্বভারতীয় স্তরে একটি শিক্ষামূলক সংস্থা আয়োজিত স্কুলভিত্তিক মেধা অন্বেষণ পরীক্ষার (২য় পর্ব) আয়োজন করা হয়েছিল রাজ্যের বেশ কিছু স্কুলে। পরীক্ষায় আমার ছেলের আসন পড়েছিল দমদমের একটি স্কুলে। পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশেই স্থানীয় পুরসভার উদ্যোগে একটি রক্তদান শিবির আয়োজিত হয়েছিল, যার অনুষঙ্গ হিসেবে পরীক্ষাকেন্দ্রের মূল গেটের সামনে দু’টি মাইক রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। আমি সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ওখানে ছিলাম। পুরো সময়টায় অনবরত মাইকের তীব্র আওয়াজ সহ্য করতে হয়েছে। আমার মতো, অন্য অভিভাবকেরাও, তাঁদের সন্তানের সঙ্গে ভাল ভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না তীব্র শব্দের কারণে। বোঝাই যাচ্ছে, পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে পরীক্ষার্থীরাও তীব্র অসুবিধের সম্মুখীন হয়েছে।
শুভঙ্কর পাল
দমদম
পক্ষপাত
‘উন্নত শির’ (১৬-৩) শীর্ষক সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘‘একটি সংবাদ চ্যানেল সকল পক্ষকে সমান সময় দিয়া দেখাইবে এমন কোনও দায় তাহার নাই।’’ সত্যিই এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের কোনও দায় নেই? আমরা তো জানি, সকল পক্ষের বক্তব্য সমান গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করাই সংবাদমাধ্যমের কর্তব্য। পাঠক বা দর্শক সব পক্ষের কথা শুনে, নিজ অবস্থান ঠিক করবেন। তবেই বলা হবে সংবাদমাধ্যম তার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। এক পক্ষের বক্তব্য শুনে সংবাদ প্রকাশ করলে, বা এক পক্ষের দিকে ঝুঁকে থাকা দৃষ্টিভঙ্গিতে সংবাদ দেখালে, তা কি নিরপেক্ষ হয়? এখন এ দেশে প্রায় সব সংবাদমাধ্যম কোনও না কোনও পক্ষ নিয়ে চলছে। কেউ প্রকট মোদীপন্থী, কেউ মোদীবিরোধী। এই কি সংবাদমাধ্যমের চরিত্র হওয়া উচিত?
দেবাশীষ দত্ত
কলকাতা-৬৩
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy