—ফাইল চিত্র।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার পাইকারি মূল্য প্রতি কিলোয় ২২ টাকা এবং খুচরো মূল্য ২৫ টাকা বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দাম নিয়ন্ত্রণ হয়নি। এমনকি টাস্কফোর্সের হুঁশিয়ারিতেও দাম কমার লক্ষণ নেই। কেন কমছে না, তা বুঝতে হলে একটু খরচের হিসেবে যাওয়া যাক।
এ বছর মাঠ থেকে আলু ওঠার সময় সর্বোচ্চ দাম ছিল কিলোগ্রাম প্রতি ১২ টাকার মতো। সেই দামে আলু কিনে হিমঘরে ঢুকিয়ে দিলে বাড়তি খরচ— কেজি প্রতি হিমঘর ভাড়া ১.৭০ টাকা, ব্যাগ বা বস্তার জন্য ০.২০ টাকা, বস্তায় ভরা এবং লোড-আনলোড করার জন্য মজুর খরচ ০.৪০ টাকা, গাড়ি ভাড়া ০.৫০ টাকা, এবং আলুর ওজন হ্রাসের জন্য ১.০০ টাকা। মোটের ওপর এই খরচগুলো এক কেজি আলুতে যোগ হলে তার মূল্য দাঁড়ায় ১৫.৮০ টাকা। ধরা যাক ১৬ টাকা।
তা হলে ব্যবসায়ী সেই আলু ১৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও এক ট্রাক আলুতে (১০০ কুইন্টাল) লাভ পান ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর যোগসাজশে সেই আলু হিমঘর থেকে বেরোচ্ছে ২৪ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম হিসেবে। স্বাভাবিক ভাবেই পাইকারি দর হয়ে যাচ্ছে ২৬-২৭ টাকা, আর খুচরো দাম ৩০-৩২ টাকা প্রতি কেজি। সুতরাং বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি করতে হলে ব্যবসায়ীদের বিক্রির দাম কমাতে হবে। শুধু দাম কমানোর কথা বলে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
কৃষ্ণা পালুই
বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া
দাম কমবে
দীর্ঘ দিন শেওড়াফুলি সবজি বাজারে যুক্ত থাকার ফলে কাঁচা আনাজের দাম ওঠাপড়ার ব্যাপারে একটি ধারণা তৈরি হয়েছে। এই হাটে চাষিরা লোকাল ট্রেনে তাঁদের খেতের আনাজ নিয়ে আসতেন। প্রধানত কাটোয়া লাইনের কাটোয়া, কালনা, বলাগড়, জিরাট প্রভৃতি অঞ্চল থেকে কাটোয়া লোকাল, আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জারে প্রচুর আনাজ খুব কম খরচে নিয়ে আসা যেত। এখন অতিমারির জন্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ। তাই আনাজ বাজারে আনতে ছোট চারচাকার গাড়ির প্রয়োজন হচ্ছে। একটা গাড়ি ভাড়া করতে কমপক্ষে ২০০০ টাকা খরচ পড়ে। এত ভাড়া দিয়ে হাটে মাল আনার ফলে সবজির দামও চড়া হচ্ছে। অনেক ছোট চাষি আনাজ বাজারে আনতেই পারছেন না। প্রাকৃতিক বিপর্যয় সত্ত্বেও আনাজের ফলন এখানে ভালই হয়েছে। লোকাল ট্রেন চালু হলে সবজির মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই হ্রাস পাবে, এই আশা রাখি।
অরূপ মুখোপাধ্যায়
শ্রীরামপুর, হুগলি
গুণময়
‘কল্পতরু’ (সম্পাদকীয়, ৫-৯) পড়ে জানলাম, ‘বিশ্ব নারকেল দিবস’ বলেও কিছু হয়! নারকেলের অনেক গুণ। আমাদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি নারকেল গাছের ছড়াছড়ি। কারণ, অন্য ফলের গাছ লাগালে তা হনুমান, বাদুড় নষ্ট করে, গাছপালা ভেঙে তছনছ করে। কিন্তু নারকেল গাছের সঙ্গে ওদের বন্ধুত্ব নেই। নারকেল অর্থকরী ফল। ঝড়, বন্যা এলে এই গাছ মাটি আঁকড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। পুষ্টিগুণ তো আছেই। শিল্পে ব্যবহার করা হয় বহু যুগ ধরে। কাজেই এমন গাছ যে ‘কল্পতরু’, তা বলাই যায়।
বিবেকানন্দ চৌধুরী
কাটোয়া, বর্ধমান
সেমাই-সুজি
এশিয়ার অনেক দেশেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে নারকেল— মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মলদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপিন্স, পাকিস্তান আর ভারতেও। নারকেলের দান মাত্রা মানে না। নেতা-মন্ত্রীরাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারকেল ভেঙে শুভসূচনা করেন। পিসি-মাসিদের হাতে দুটো কাঁচা পয়সা আসে নারকেল পাতা চেঁচে কাঠি বার করে বেচলে। ঝাঁটা তৈরি হয় এই কাঠির গুচ্ছ গোড়ায় বেঁধে। ফলের গায়ের উপরের অংশটি ছোবড়া। কাজে লাগে গদি-পাপোশ-দড়ি বানাতে। তৈরি হয়েছে কয়ার ইন্ডাস্ট্রি। মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে।
ইসলাম ধর্মের মানুষের কাছে নারকেলের দুধের কদর যথেষ্ট। সেমাই-সুজির হালুয়া রসুইয়ে নারকেলের দুধের ব্যবহার, বিশেষত পরবের সময়, অবশ্যই হবে। বোতলে-ভরা নারকেল দুধ ব্যবসার দুনিয়ায় পা রাখতে শুরু করেছে। কাঁটালি কলার মতো ডাবও সর্বঘটের। যে কোনও পুজোর ঘটে ডাবের অবস্থান। তা ছাড়া পানীয় হিসেবে তো আছেই। কয়েক দশক আগেও বিয়ে-শ্রাদ্ধ, নানা পুজোয় গুড়ের মুড়কি আর গুড়-মাখানো, কর্পূর-মেশানো নারকেল নাড়ুর বেজায় আদর ছিল। চিনির নারকেল-সন্দেশও কিছু কম যায় না— যেমন বিজয়াদশমীতে। হঠাৎ এসে পড়া অভ্যাগতের জন্যে কোরা বা দাউলি-ছাড়ানো নারকেল মুড়ির আপ্যায়নের রীতি অবশ্য উঠে যেতে বসেছে। নারকেল গাছ অনেক বছর বাঁচে। সাড়ে তিন ফুট উচ্চতার গাছে তিন-চার বছরের মধ্যে ফল আসে। প্রচুর ফলও দেয়।
রঘুনাথ প্রামাণিক
কালীনগর, হাওড়া
মহামূল্য পোস্ত
বাংলার, বিশেষত রাঢ় বাংলার মানুষের অতি প্রিয় পোস্ত। এই পোস্ত দিয়ে বহু পদ তৈরি হয়— আলু পোস্ত, বড়ি পোস্ত, পোস্তর বড়া, পোস্ত বাটা ইত্যাদি। কিন্তু সেই পোস্ত এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বাজারে পোস্ত বিক্রি হচ্ছে। এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলার মানুষ পোস্ত খাওয়া ভুলতে বসেছে। অথচ পোস্ত খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়াও ওষুধ তৈরিতেও কাজে লাগে। আমরা জানি উদরাময়ের বাড়াবাড়ি অবস্থায় গরম ভাতে অল্প পরিমাণে কাঁচা পোস্ত বাটা, অল্প লবণ সহযোগে খেলে তা দ্রুত রোগ অপসারণে সাহায্য করে।
পোস্তর খোলা থেকে মাদক জাতীয় দ্রব্য পাওয়া যায় বলে সর্বত্র এই শস্যের চাষ করার অনুমতি নেই। খুব ভাল কথা। কিন্তু যে ভাবে কেন্দ্রের মাদক নিয়ন্ত্রণ বুরো মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশের কিছু চিহ্নিত এলাকায় পোস্ত চাষের অনুমতি দিয়েছে, সেই পদ্ধতি অবলম্বন করে রাঢ় বাংলায় কি পোস্ত চাষের অনুমতি দেওয়া যায় না? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী গত বছর ২৬ অগস্ট বর্ধমানের সংস্কৃতি লোক মঞ্চে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব ও অন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, এই রাজ্যে যাতে পোস্ত চাষের অনুমতি পাওয়া যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য। বিধিনিয়ম মেনেই রাঢ়ের অনেক চাষি পোস্ত চাষের বৈধ অনুমতি চাইছেন। পোস্তর দাম যাতে নাগালে আসে, তার আবেদন করছি।
বিশ্ব দেব মুখোপাধ্যায়
গোলকুঁয়াচক, মেদিনীপুর
নিরুদ্দেশ
শোনা যাচ্ছে আনলকের চতুর্থ পর্বে লোকাল ট্রেন চলবে, তবে ট্রেনে হকার উঠতে দেওয়া হবে না। এখন আর কোনও নববধূ ট্রেনের জানালার কোণে বসে চেয়ে থাকবে না সেই ঝালমুড়িওয়ালার জন্য, যাঁর কাছে আরও একটু নারকেল কুচি আর লঙ্কামাখা চাওয়া যেতে পারে। ঘুম-ঘুম ভোরে শহর ছেড়ে আসা ব্ল্যাক ডায়মন্ড-এর যাত্রী ছিলাম আমি। ঘুম কাটাতাম ব্যান্ডেল স্টেশনের মাটির ভাঁড়ের চায়ে। সেই হকার ভাই কেমন আছেন, কে জানে। সন্ধের শহরের অলি-গলি ঘুরে ‘ঘটিগরম’ বিক্রি করে শেষ ট্রেনে ঘরে ফেরা সেই হকার ভাই কেমন আছেন, যিনি নাকি প্রিয় দল ময়দানে জিতলে কাছের লোকদের বিলিয়ে দিতেন উদ্বৃত্ত ঘটিগরম?
পার্থ দত্ত
কলকাতা-১০২
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy