সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের অন্য অঞ্চলের বাসিন্দা এক বন্ধুর সঙ্গে চক্ররেলে সফর করলাম। আমার বহু কাল ও-পথে যাওয়া হয়নি, আর সে-ও গেল প্রথম বার, নতুন অভিজ্ঞতার জন্য। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে খুবই নিরাশ হতে হয়েছে। ট্রেন পরিষেবা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, অসুবিধাটি লাইনের আশপাশের অবস্থা নিয়ে। চক্ররেল একটি বিশেষ রেলপথ, নদীর ধার বরাবর শহরকে পরিক্রমা করে। লাইনটির এই বিশেষত্বের জন্য এটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়ও হতে পারে। কিন্তু লাইনের আশপাশের বেশ কিছু জায়গা এতটাই অপরিষ্কার ও নোংরা যে, বাইরের কোনও বাসিন্দা কলকাতার রিভারফ্রন্ট দেখার ইচ্ছা নিয়ে এই রেলে চড়লে শহরের প্রতি তাঁর বিতৃষ্ণা জন্মাবে। লাইনের ধারে ঝুপড়ি অন্য জায়গাতেও আছে, কিন্তু এখানকার ঝুপড়িগুলোর অবস্থা যেন আরও করুণ। তা ছাড়া, ঝোপঝাড়, গাছপালাগুলো লাইনের এত কাছে ছিল যে, যাত্রার একাধিক অংশে সেগুলি জানলা দিয়ে প্রায় ঝাপটা দিয়ে যাচ্ছিল মুখে।
বড়বাজারের গুদাম দেখা, হাওড়া ব্রিজের তলা দিয়ে যাত্রা অনেকের কাছেই চমকপ্রদ হতে পারে। কিন্তু বড়বাজার থেকে বিবাদী বাগ স্টেশন পর্যন্ত অংশটি এতটাই নোংরা যে, সম্পূর্ণ উল্টো অভিজ্ঞতা হয়। অন্য সাবার্বান লাইনগুলি কিন্তু এত অপরিষ্কার নয়। প্রশ্ন হল, যেখানে কিছু পর্যটক টানার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে এই অবহেলা কেন? ওই ঝুপড়িবাসীদের কোথাও ভদ্রস্থ পুনর্বাসন কি দেওয়া যায় না? আমার বন্ধুটি বঙ্গেরই বাসিন্দা, ফলে এই বেহাল অবস্থা দেখেও অবাক হয়নি। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন, চক্ররেলের আশপাশের অংশগুলির দিকে একটু নজর দেওয়া হোক।
দীপ্তক সরকার, নরেন্দ্রপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
কার্ড পাইনি
যে কোনও গণতন্ত্রে ভোটাধিকার হল একটি মৌলিক অধিকার, যা নাগরিকদের তাঁদের পছন্দের সরকার গঠনের ক্ষমতা দেয়। ভোটাধিকারের পাশাপাশি কোনও ব্যক্তির পরিচয়ের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল ভোটার কার্ড। অথচ, ২০২১ সালে শুরু হয়ে এ বছর জুলাই পর্যন্ত ভোটার কার্ড না পাওয়ার অভিজ্ঞতা ভোটার কার্ড তৈরির প্রক্রিয়ার ত্রুটিকেই আরও প্রকট করে।
তিন বছর আগে স্থানীয় ভোটকেন্দ্রে ভোটার কার্ডের আবেদন ফর্মটি যথাযথ ভাবে পূরণ করেছিলাম। কয়েক মাস পরে কার্ডের বিষয়ে জানতে ভোটকেন্দ্রে গেলে, সেখানকার দায়িত্বরত ব্যক্তি একটি ফোন নম্বর দেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেন যে, কার্ডের বিষয়ে তাঁরাই সরাসরি যোগাযোগ করবেন বা তাঁদের দেওয়া নম্বরে এই বিষয়ে খোঁজ পাওয়া যাবে। কিন্তু তার পরে আরও কয়েক মাস কেটে যাওয়ায়, তাঁদের দেওয়া নম্বরে কল করি। জানানো হয় যে, আমার ভোটার কার্ড পোস্টের মাধ্যমে আমার ঠিকানায় পাঠানো হবে। এই কথোপকথনের আরও ছ’মাস অতিক্রান্ত হলে বাধ্য হয়েই নতুন কালেক্টর অফিসে যেতে হয়। সেখানে বলা হয় যে, আমার ভোটার কার্ড ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গেলেও তা প্রেরিত হয়েছে ভুল ঠিকানায়। ঠিকানা সংশোধনের জন্য ফর্ম ৮ পূরণ করতে বলা হয়। যখন ফর্ম জমা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট অফিসে পৌঁছই, তখন তাঁরা আমার মূল ভোটার কার্ডটি দেখতে চান। এ ক্ষেত্রে আমার কাছে শুধুমাত্র অভিযোগের প্রাপ্তি নম্বর থাকায়, আমি প্রশাসনিক চক্রে আটকে যাই।
সঠিক ঠিকানায় আমার ভোটার কার্ড দ্রুত ডাকের মাধ্যমে পৌঁছনোর বারংবার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও কাজ হয়নি। ভোটার কার্ড উদ্ধার করার মরিয়া চেষ্টায় আমি সেই ভুল ঠিকানাতেও বহু বার গিয়েছি, কিন্তু কোনও ফল পাইনি। এই দুর্দশা তিন বছর ধরে চলছে, কিন্তু আজও আমার ভোটার কার্ড হাতে এসে পৌঁছল না।
যদি এমন প্রক্রিয়াগত ত্রুটি অব্যাহত থাকে, তা হলে আরও কত নাগরিক তাঁদের মৌলিক ভোটাধিকারের থেকে বঞ্চিত হবেন। কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই সমস্যাগুলির সমাধানে উদ্যোগী হোক। ভোটার কার্ডটি যাতে দ্রুত পেতে পারি, তার ব্যবস্থা তাঁরা অবিলম্বে করবেন, এমন আশাই রইল।
অর্পিতা পাত্র, হাওড়া
চড়া প্রিমিয়াম
বিশ্ব জুড়ে এখন রমরমিয়ে চলছে স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবসা। আসলে, এ ক্ষেত্রে সেবার নামে চলছে শোষণ। সব কিছু দেখে মনে হয়, যে দিন থেকে স্বাস্থ্যবিমা বাজারে এসেছে সে দিন থেকেই হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলো পরিষেবা ভুলে স্বাস্থ্য ব্যবসায় নেমেছে। শুনেছি, রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের মোট বেড সংখ্যা যা, তার চেয়ে বেসরকারি হাসপাতালের শয্যা অনেক বেশি। ২০২১-এর এক সমীক্ষা বলছে, ভারতে সরকারি হাসপাতালে ৮,২৫,২৩৫ শয্যা আছে। অর্থাৎ, প্রতি ১০০০ জনসংখ্যায় ০.৬ শতাংশ শয্যা রয়েছে। মানুষ তাই বাধ্য হচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যেতে।
বেসরকারি ক্ষেত্রে চিকিৎসা করাতে গেলে মোটা টাকার প্রয়োজন। তার জন্যই মানুষকে যেতে হচ্ছে বিমা কোম্পানিগুলির কাছে। এক দিকে চিকিৎসা খরচ আকাশছোঁয়া আর অন্য দিকে বিমা কোম্পানিগুলো তাদের বিমার প্রিমিয়াম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে চলেছে। বিশেষত, প্রবীণদের জন্য বিমা সংস্থাগুলো যে হারে প্রিমিয়াম বৃদ্ধি করছে, তা অমানবিক। এক জন অবসরপ্রাপ্ত মানুষ তাঁর ও তাঁর স্বামী বা স্ত্রী’র স্বাস্থ্য বিমা করতে গেলে এখন খরচ পড়ছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকার মতো। তার সঙ্গে দিতে হচ্ছে চড়া জিএসটি-ও। মজার বিষয় হল, ৭৫ হাজার টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে ৮০ডি-তে আয়কর ছাড় মিলছে ৫০ হাজার টাকা। কেন এমন নিয়ম? অর্থাৎ, বার্ধক্যের সুযোগ যেমন বিমা কোম্পানিগুলো নিচ্ছে, তেমনই নিচ্ছে সরকারও। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত প্রবীণ নাগরিকদের বিমার প্রিমিয়াম কমানোর জন্য আইআরডিএ-কে কড়া নির্দেশ দেওয়া আর বিমার পুরো প্রিমিয়ামেই আয়কর ছাড় দেওয়া। আর, বিমার জিএসটি বিমা গ্রহীতার কাছে থেকে নয়, নিতে হবে বিমা কোম্পানিগুলির থেকেই।
অন্য দিকে, বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে রোগীদের উপর যে অস্বাভাবিক খরচ চাপানো হয়, তাতে নজরদারি চালাতে হবে রাজ্য সরকারকে। তা ছাড়া, ১৮ শতাংশ জিএসটি-র যে ৯ শতাংশ তারা পায়, সেটাও মকুব করলে কিছুটা সুবিধা হয় প্রবীণদের। এ ছাড়া, অনেক সরকারি হাসপাতালে এখনও ভাল চিকিৎসা হয়, আর খরচও মানুষের সাধ্যের মধ্যে। এখানে যে প্রবীণদের চিকিৎসা পরিষেবার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা যেন তাঁরা পান সে বিষয়ে নজর দিক সরকার।
পার্থময় চট্টপাধ্যায়, কলকাতা-৯৪
বিশৃঙ্খল
দমদমের যশোর রোড একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে বারাসত, বালি, দক্ষিণেশ্বরের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এই রাস্তা। অনেক দিন ধরেই লক্ষ করছি, এই রাস্তার সেন্ট্রাল জেলের মোড় থেকে এয়ারপোর্ট যাওয়ার ডান দিকের ফুটপাত ধরে গজিয়ে উঠেছে বেশ কিছু খাবারের দোকান। এর সঙ্গেই ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে গ্যারাজ। দিব্যি রাস্তার অনেকটা দখল করে গাড়ির মেরামতি চলছে। ফলে ফুটপাত তো হাতছাড়া হয়েইছে, খাবার দোকানের সামনে এবং গ্যারাজের সামনে গাড়ির লাইন লেগে থাকায় রাস্তা দিয়ে হাঁটারও কোনও উপায় নেই। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। উল্টো দিকেই রয়েছে একটি স্কুল। স্কুল শুরু এবং ছুটির সময় ছাত্রছাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে। এই সময় যে ভাবে এই রাস্তার ডান পাশে বিশাল বিশাল বাস, মালবাহী গাড়ি পার্ক করে রাখা হয় তাতে মনে হয় আইন-শৃঙ্খলার বালাই নেই। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসা দরকার যাতে তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারে।
বাসুদেব দাস, কলকাতা-২৮
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy