—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মিটারে না গিয়ে হলুদ ট্যাক্সির চালকদের অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার অভিযোগ বহুকালের। এর পরে অ্যাপ ক্যাবের আগমন সেই অরাজকতায় কিছুটা রাশ টেনেছিল বটে, তবে কয়েক বছর যাবৎ তারাও অত্যধিক ভাড়া বাড়িয়েছে। এখন আবার নতুন বিড়ম্বনা দেখা দিচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে নামার পর। বুকিংয়ের সময় যা ভাড়া দেখায়, নামার পরে তার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া দাবি করা হয়। বাধ্য হয়েই সেই ভাড়া মেটাতে হয়। সম্প্রতি কলামন্দির থেকে তেঘরিয়া বুকিংয়ের সময় রাজ্য সরকারের বিশেষ অ্যাপে ক্যাবের ভাড়া দেখিয়েছিল ৩০১ টাকা। নামার সময় তা দাঁড়াল ৩৩৩ টাকা। অথচ, রাস্তায় কোনও যানজট ছিল না, কোথাও দাঁড়াইনি। এর পরে বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে মা’কে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য বেসরকারি অ্যাপ থেকে ক্যাব বুক করি ৫২০ টাকায়। অন্য দিন এই একই দূরত্বে ভাড়া লাগে ৩০০-৩৫০ টাকার মধ্যে। অথচ, এ বার নামার সময় ভাড়া দেখাল ৬৬২ টাকা। বাধ্য হয়ে আরও ১৪২ টাকা বেশি দিতে হল। ড্রাইভারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, তাঁর কিছু করার নেই। ওটা ক্যাব কোম্পানির ব্যাপার। প্রশ্ন, এক ভাড়া দেখিয়ে আর এক ভাড়া কী করে নেয় সংস্থাগুলি? এটা এক প্রকারের অনিয়ম তো। কী করে এমন অনিয়ম করে সংস্থাগুলি পার পেয়ে যাচ্ছে? সরকার কি কিছুই জানে না?
মণিদীপা কলকাতা-৫৯
শব্দদানব
শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, প্রয়োজনের বেশি আলোর রোশনাই— অতিরিক্ত সব কিছুই প্রভাব ফেলে মানুষের শরীরে ও মনে। প্রতি বছরই পুজোর মরসুমে, বিশেষত কালীপুজো, ছট ইত্যাদি উপলক্ষে দূষণ কিংবা শব্দের মাত্রা নিয়ে বিভিন্ন সতর্কতা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফে। সংবাদমাধ্যমেও সেই নিয়ে প্রকাশিত হয় প্রচুর খবর ও রিপোর্ট। অথচ, আসল দিনে দূষণ বা শব্দের বহর দেখে মনে হয় না এই বিধিনিষেধের পরোয়া কেউ করেন। গত বছর শব্দদূষণের মাত্রা আবার ৯০ ডেসিবেল থেকে বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবেল করা হয়েছে বলে সংবাদে প্রকাশিত হয়েছিল। ফলে শব্দদানবের মাত্রাছাড়া আস্ফালনের কারণে আবার মানসিক ভাবে অস্থির হতে হবে মানুষকে। প্রতি বছরই এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। প্রশ্ন হল, এই সমস্যার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ কার কাছে প্রতিকার চাইবে?
শুক্লা সেনগুপ্ত কলকাতা-৭৪
খারাপ রাস্তা
কিছু দিন আগেই বাঁশদ্রোণী এলাকায় খারাপ রাস্তার জেরে এক বিশাল পে-লোডারের ধাক্কায় মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরের। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অনুরূপ অবস্থা আর একটি রাস্তারও, যেটি টালিগঞ্জ থেকে ডায়মন্ড হারবার রোডকে সংযোগ করেছে। গত প্রায় তিন বছর ধরে এই রাস্তায় পানীয় জল ও নিকাশি পাইপ বসানোর কাজ চলছে তো চলছেই। ফলে ঘোর বর্ষায় ভাঙাচোরা রাস্তায় নিত্য যাতায়াত করা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। এতে প্রবীণদের চলাফেরায় আরও বেশি করে সমস্যা হচ্ছে, মাঝেমধ্যে দু’এক জন পড়ে গিয়ে আহতও হচ্ছেন। বর্তমানে পুজোর জন্য কাজ বন্ধ করে গর্তগুলি জোড়াতালি দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে বটে, কিন্তু আমরা জানি বৃষ্টি হলেই আবার রাস্তার পুরনো রূপটি বেরিয়ে পড়বে। জানি না কবে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব।
সুব্রত সেনগুপ্ত কলকাতা-১০৪
আশা-নিরাশা
একটি আড্ডার আলাপচারিতার আবহে অমিতাভ গুপ্ত শেয়ার বাজারের উত্থান পতন এবং সন্তানের সুস্বাস্থ্যের মূল্য নির্ধারণে শিক্ষিত মানুষজনের সঠিক সময়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার কারণে সারা জীবন আফসোস করার বিষয়টি হালকা চালে সুন্দর ভাবে উত্থাপন করেছেন তাঁর ‘আফসোস থেকেই গেল’ (২২-৯) প্রবন্ধে।
ডালহৌসি পাড়ায় কর্মস্থল হওয়ার সুবাদে দেখেছি মধ্যবিত্ত চাকুরে বাঙালির একটি অংশ শেয়ার বাজারে রীতিমতো লগ্নি করায় ওস্তাদ। তাঁরা ব্রোকারের মাধ্যমে শেয়ার বাজার সম্পর্কে খুব একটা পড়াশোনা না করে টাকা লাগান। রিটার্ন ভাল পেলে কান এঁটো করা হাসি সমলগ্নিকারীদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। এবং শেয়ারের মূল্য পতনে আফসোস করেন। অন্য দিকে দেখেছি, কয়েক জন সহকর্মীর শেয়ার সম্পর্কিত বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকার বিষয়টিও। তবে, তাঁরা আমাদের মতো, ও-সব পথে না-যাওয়া চাকরিজীবী। এক দিক থেকে ওই আফসোস-করিয়েদের দল থেকে তুলনামূলক ভাবে ভাল ছিলাম বা আছি বলে মনে হয়। যদিও জানি, ঝুঁকি নিতে না পারাটা যে এক ধরনের ব্যর্থতা, সেটা মেনে নিয়েই এই সন্তোষ। ‘হ্যাপিনেস’ বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল গিলবার্টের উদাহরণ তাই ভাবায়— ‘ভাবিয়া করিয়ো কাজ’ কথাটির খাঁটি সত্য দিক। সাধারণ মানুষ তাঁর স্বভাবের সঙ্গে মিল না থাকা কোনও কাজে হাত দেওয়ার আগেই ভেবে নেন, কাজে ভুল হলে কতখানি খেসারত দিতে হবে। হয়তো কার্যক্ষেত্রে নামলে ঠিক ততটা ভুলের মাসুল দিতে হত না। কিন্তু, পাছে ভুল হয়, এই ভাবনায় পিছিয়ে আসা এক ধরনের আশঙ্কা-জাত। ‘এই আশঙ্কা বিলক্ষণ কাজে লাগায় শেয়ার বাজার’। বোঝা না বোঝার দোলাচলে যাঁরা শেয়ার বাজারে লগ্নি করেন, তাঁদের অপটু জ্ঞান থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, ওই যে দালালের খপ্পরে পড়ে লগ্নি করা হল, শেয়ার মূল্যের পতনে লাভের গুড় পিঁপড়ে খেল। আফসোস আজীবন ধাওয়া করে চলে তখন।
পরবর্তী উদাহরণ, সন্তানের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। সন্তানকে সুস্থ রাখতে গিয়ে সাধারণত একটি ওষুধ বাদ দিয়ে জরুরি অন্যটা কিনতে ইতস্তত করেন না কেউই। কারণ, আগেই খারাপ দিকটার কথা মনে পড়ে। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই ‘ট্রেড অফ’-এর ভিন্ন উদাহরণও দেখা যায়। সন্তানকে পাঁচ-ছয় জায়গায় পড়ানোর খরচ সামলাতে না পারলে একটি-দু’টি বিষয়ে পড়ানো বন্ধ রাখতে হয়। সেগুলোর দায়িত্ব তখন বাবা-মায়েরাই নেন। বরং, অন্য যে বিষয়টির জন্য আদৌ গৃহশিক্ষক রাখা হয়নি, তার জন্য শিক্ষক রাখার কথা ভাবেন, সন্তানের উন্নতিকল্পে। ‘আফসোসের সম্ভাবনা’ থেকে জাত নৈতিক, অনৈতিক ধারণাকে ‘ট্যাবু ট্রেড অফ’ হিসাবে মান্যতা দেওয়া হয়েছে এই কারণেই।
আর ‘ন্যারো ফ্রেমিং’ কার্যত শেয়ার কেনা-বেচার বিচারশক্তিকেই তুলে ধরে। লোকে যে শেয়ারের বাজার দর চড়তে দেখে, তাতেই লগ্নি করে। আবার ‘ক্ষতিতে থাকা’ শেয়ারটা ধরেও রাখে এই আশায় যে এক দিন তার দাম চড়বে। আশাই তো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।
এই আশা-নিরাশার দোলাচলের নামই জীবন। প্রতিটি পদক্ষেপে আগুপিছু ভাবনা, খুঁটিয়ে পরখ করে পরিশেষে অনুতাপে দগ্ধ হওয়ার চাইতে ‘চরমপন্থা’ই হোক আশ্রয়। ‘ভাবনার জন্য ভাবনা’ না করে, ‘ফল ফলানোর আশা আমি মনে রাখিনি রে’কেই মান্যতা দিলে আফসোস থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
ধ্রুবজ্যোতি বাগচি কলকাতা-১২৫
চালের ব্যবসা
রাজ্যের এক শ্রেণির মানুষকে প্রতি মাসে বিনা-পয়সায় যে চাল দেওয়া হচ্ছে, সেই চাল তাঁরা খাচ্ছেন না। দেখা যাচ্ছে এক-একটি এলাকায় ওই চাল অনেক কম পয়সায় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন এক শ্রেণির কারবারি। ফলে, সরকার যে ভাবনা নিয়ে দরিদ্র মানুষদের জন্য ওই বিনা পয়সায় চাল দিচ্ছে, তা সঠিক ভাবে মান্যতা পাচ্ছে না। প্রশাসনের দেখা উচিত কেন এই চাল ওই মানুষগুলো নিতে চাইছেন না। একই সঙ্গে যে কারবারিরা চাল ঘুরপথে কেনাবেচা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ করা উচিত প্রশাসনের।
স্বপন কুমার আঢ্য ভান্ডারহাটি, হুগলি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy