Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
India-China

সম্পাদক সমীপেষু: বিনিময় সম্ভব?

চিনে আরও দেখলাম, যে কোনও দ্রষ্টব্য স্থানে প্রবেশের পথে পাসপোর্ট স্ক্যান করা বাধ্যতামূলক।

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

তানসেন সেন (‘জাতিরাষ্ট্র যখন বিপন্ন করে’, ৪-৬) লিখেছেন, ভারত ও চিনকে বুনিয়াদি স্তরে ভাববিনিময়ের উপর বিধিনিষেধ শিথিল করতে হবে, এবং মানুষের মতের আদানপ্রদানের উপর নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রশ্ন হল, চিনের সরকার এমন সুপরামর্শে কান দেবে, তার সম্ভাবনা কতটুকু? গত বছর চিনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন-ভারত বাণিজ্য নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। ওই কলেজে নিযুক্ত এক মার্কিন শিক্ষক-বন্ধু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে আমার বক্তৃতার তর্জমা করে দিতে অনুরোধ করলে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়-নিযুক্ত অনুবাদক ছাড়া আর কারও বিদেশিদের কথা অনুবাদ করার নিয়ম নেই। সেই অনুবাদক এলেন। ক্লাসের পরে বন্ধু জানালেন, বক্তৃতার বড় জোর তিরিশ শতাংশ যথাযথ অনুবাদ হয়েছে, বাকিটা অনুবাদক ইচ্ছেমতো বাদ দিয়েছেন বা পরিবর্তন করেছেন।

চিনে আরও দেখলাম, যে কোনও দ্রষ্টব্য স্থানে প্রবেশের পথে পাসপোর্ট স্ক্যান করা বাধ্যতামূলক। বস্তুত রাষ্ট্রের নজরদারি যে কী নিরন্তর এবং কত ব্যাপক হতে পারে, নাগরিকের স্বাধীন মত প্রকাশের ঝুঁকি কত তীব্র হওয়া সম্ভব, তার সুযোগও কত কম, তা চিনে না গেলে বোঝা কঠিন। তাই রাষ্ট্রের নজরদারির বাইরে নাগরিকদের ভাববিনিময়ের সম্ভাবনা নিয়ে ধন্দ থাকছে। লেখকের মতো আশান্বিত হতে পারছি না।

অমল ভরদ্বাজ

কলকাতা-৬৯

কোটনিসের কথা

তানসেন সেন প্রতিবেশী জাতিরাষ্ট্রের মিত্রতা বিষয়ে বলেছেন, ‘‘দ্বারকানাথ কোটনিস ও অন্য ভারতীয় চিকিৎসকদের ভূমিকাও বিস্মৃতপ্রায়।’’

এই প্রসঙ্গে বলি, ১৯৩৫ সালে জাপান ভয়াবহ এক সমরাভিযান শুরু করেছিল উত্তর চিনে। চিনের বেদনা ভারতকে বিচলিত করেছিল। কিন্তু পরাধীন দেশ কী-ই বা করতে পারে? নেহরুর পরিকল্পনায় জাতীয় কংগ্রেসের তরফ থেকে অগস্ট, ১৯৩৮ সালে অর্থ, ওষুধ, চিকিৎসার সরঞ্জাম ইত্যাদি নিয়ে একটি মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল চিনে। মহাত্মা গাঁধী, জওহরলাল নেহরু ও ডা. বিধানচন্দ্র রায় যে পাঁচ জন চিকিৎসককে মনোনীত করেছিলেন, তাঁরা হলেন— উত্তরপ্রদেশের এম অটল, নাগপুরের ষাটোর্ধ্ব এম চোলকার, মহারাষ্ট্রের শোলাপুরের দ্বারকানাথ কোটনিস, কলকাতার ডি মুখোপাধ্যায় ও বিজয়কুমার বসু। সাম্রাজ্যবাদী জাপানের বিরুদ্ধে চিনের দীর্ঘ সাত বছরের সংগ্রাম চলে, তার মধ্যে এই ভারতীয় ডাক্তারদের পাঁচ বছরের লাগাতার সেবার কথা ভোলার নয়।

যুদ্ধ শেষ হলে চার ডাক্তার ভারতে ফিরে আসেন। দ্বারকানাথ কোটনিস ও তাঁর সহযোগী নার্স কুও চিং লান বিয়ে করেন, কোটনিস থেকে যান ফুপিং-এ। তাঁদের সন্তান ইন হুয়া (নামের অর্থ, ভারত-চিন) মাত্র ২৪ বছর বয়সে প্রয়াত হন। এই আখ্যান নিয়ে সাংবাদিক-সাহিত্যিক খাজা আহমেদ আব্বাস ১৯৪৪ সালে রচনা করেন ‘অ্যান্ড ওয়ান ডিড নট কাম ব্যাক’ বইটি। সেটি ‘ফেরে নাই শুধু এক জন’ নামে অনুবাদ করেন নেপালশঙ্কর সরকার।

১৯৪৭ সালে প্রথম প্রকাশের পর বিংশ শতক জুড়ে অন্তত সাত বার ছাপা হয়েছে বইটি। আহমেদ আব্বাসের বই থেকে চিত্রপরিচালক ভি শান্তারাম নির্মিত ‘ডা. কোটনিস কি অমর কহানি’ (১৯৪৬) ছবিটিও সাড়া ফেলেছিল।

মেধা মণ্ডল

কলকাতা-১২

কবির সমাদর

‘বিতর্কিত অতিথি’ চিঠি (২৮-৬) এবং ‘নেশন’ সভ্যতার সঙ্কট’ নিবন্ধ (২১-৬) প্রসঙ্গে কিছু সংযোজন করতে চাই।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিনে ভ্রমণকালে নাগরিকদের থেকে, বিশেষত চিনা যুবকদের কাছ থেকে কেবলই বিরূপ ব্যবহার পেয়েছিলেন, এ কথা সত্য নয়। ১২ এপ্রিল, ১৯২৪ কবি শাংহাই পৌঁছলেন। পিকিং (বর্তমান বেজিং) পৌঁছলেন ২৩ এপ্রিল সন্ধ্যায়। তার আগে কবি চিনের আরও কিছু জায়গা ভ্রমণ করেন এবং বক্তৃতা দেন।

তাঁর বক্তৃতায় অবশ্য বেশ কিছু মানুষ অসন্তুষ্ট হন এবং অনেক ইংরেজি কাগজে তাঁর বক্তৃতার সমালোচনা প্রকাশিত হয়। কিন্তু এটাও সত্যি যে, রবীন্দ্রনাথের শাংহাই ত্যাগের পূর্বে প্রায় পঁচিশটি সংস্থা একত্রে কবির জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করে। নানকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে কবির বক্তৃতায় এত ভিড় হয় যে হলঘরের বারান্দা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছিল, জানা যাচ্ছে জীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের বর্ণনা থেকে।

পিকিং-এর উদ্দেশ্যে যাত্রাপথে রবীন্দ্রনাথের জন্য স্পেশাল ট্রেনের আয়োজন করা হয় এবং দেহরক্ষীর দল নিযুক্ত হয়। পিকিং স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে কবি দেখেন, তাঁকে অভ্যর্থনা করার জন্য প্রচুর মানুষ সমবেত হয়েছেন। বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা হল, আগেও তো বহু বিখ্যাত মানুষ চিন দেশে এসেছেন, কিন্তু এত উৎসাহ, উচ্ছ্বাস আগে অন্য কাউকে নিয়ে দেখা যায়নি।

কবি প্রচুর বক্তৃতা দিয়েছিলেন এই সময়ে। তার পর তিনি সপ্তাহখানেক পিকিং-এ থেকে কিছু দূরে একটি কলেজে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসবাস করতে থাকেন। এখানে প্রচুর ছাত্র বিচিত্র প্রশ্ন লিখে পাঠাত, কবি উত্তর লিখে পাঠাতেন। এর ফলে কবি চিনা যুবসমাজের মনে জায়গা করে নেন।

৮ মে (২৫ বৈশাখ) পিকিং শহরে রবীন্দ্রনাথের জন্মোৎসব পালন করা হয়েছিল। চিনা মনীষী এবং চিন্তাবিদ হু শি সেখানে সভাপতিত্ব করেছিলেন। চিনা ভাষায় ‘চিত্রা’ অভিনীত হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথকে ‘চু চেন তান’ (বাংলা অর্থ, মেঘমন্দ্রিত প্রভাত) উপাধি প্রদান করা হয়।

সুদীপ বসু

অধীক্ষক, মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার

মন্ত্রীর মানহানি

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত ‘তৃণমূলের জমি ফেরাতে একক দায়িত্ব শুভেন্দুকে’ (১১-৭) শীর্ষক সংবাদ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে তাঁর আইনজীবী হিসেবে জানাচ্ছি, প্রকাশিত সংবাদের তিনটি অংশ আপত্তিকর। প্রথম অংশটি হল, ‘‘দলীয় সূত্রে খবর, তাতেই ‘অসন্তুষ্ট’ হয়ে তিনি ধীরে ধীরে সাংগঠনিক কাজ কমিয়ে দেন। ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষা বা মন্ত্রী হিসেবে সরকারি কর্মসূচি ছাড়া সাংগঠনিক কাজে একেবারেই নিস্পৃহ ছিলেন তিনি। দুই জেলার ঘনিষ্ঠ সাংগঠনিক পদাধিকারী ও বিধায়কদের কাছে একান্তে তা জানিয়েও দিয়েছিলেন পরিবহণমন্ত্রী।’’ দ্বিতীয় অংশটি হল, ‘‘এই অবস্থায় ফের এক বার শুভেন্দুকে ‘পূর্ণশক্তি’ দিতে চাইছে তৃণমূল।’’ এবং তৃতীয় অংশটি হল, ‘‘তাতে শুভেন্দুর ‘বাধাহীন’ কাজের শর্ত মঞ্জুর করেছেন দলীয় নেতৃত্ব।’’ এই অংশগুলি মিথ্যা এবং এগুলি মাননীয় মন্ত্রীর মানহানি করার জন্য লেখা হয়েছে।

শুভেন্দু বিকাশ বেরা

কাঁথি, পূর্ব মেদিনীপুর

প্রতিবেদকের উত্তর: সংবাদের মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে কোনও আপত্তি জানানো হয়নি। আপত্তি, একক দায়িত্ব না থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে দলীয় কাজে নিস্পৃহ ছিলেন, এ কথা বলায়।

প্রথমত, শুভেন্দুবাবুর বক্তব্য জানার জন্য তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে ‘হোয়াটস অ্যাপ’ করা হয়েছিল। তিনি তা দেখেছেন সেটা বোঝা গিয়েছে। কিন্তু কথা বলার সুযোগ দেননি। দ্বিতীয়ত, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দুবাবু সরকারি কাজ ছাড়া দলীয় কাজে ওই সব জেলায় কত বার গিয়েছেন এবং কী কী কর্মসূচি নিয়েছেন, সেটা কিন্তু প্রতিবাদপত্রে পরিষ্কার করা হয়নি। এ নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য পেলে নিয়মমাফিক যাচাই করে প্রকাশ করা যেতে পারে। শুভেন্দুবাবু বা অন্য কোনও নেতা, মন্ত্রী বা পদাধিকারীকে অসম্মান করার অভিপ্রায় আমাদের নেই। প্রকাশিত সংবাদের কোনও অংশে শুভেন্দুবাবুর আঘাত লেগে থাকলে দুঃখিত।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

অন্য বিষয়গুলি:

India-China India China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy