গত ১০ মার্চ আমার ও আমার স্বামীর পাসপোর্ট নবীকরণের জন্য পাসপোর্ট অফিসে হাজিরার সময় দেওয়া হয়েছিল দুপুর দুটো পনেরো মিনিটে। অবরোধ ও জ্যামের কথা মাথায় রেখে আমরা বাড়ি থেকে অ্যাপ ক্যাব নিয়ে কিছুটা আগেই রওনা হই এবং পৌনে দুটো নাগাদ আনন্দপুর পাসপোর্ট অফিসে পৌঁছে যাই। কিন্তু গেটে নিরাপত্তাকর্মী আমাদের আটকান এবং বলেন, হাজিরার সময় এখনও হয়নি, তাই প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। আমরা তাঁকে বলি, আমাদের দু’জনেরই বয়স আশির কাছাকাছি এবং তা বিবেচনা করেই আমাদের ভিতরে বসতে দেওয়া হোক। কিন্তু তিনি জানান, ভিতরে সে রকম কোনও ব্যবস্থা নেই। অগত্যা আমরা বাইরে প্রচণ্ড রোদের মধ্যে অপেক্ষা করতে বাধ্য হই। কিছু ক্ষণ পরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। দু’তিন জন অপেক্ষমাণ অল্পবয়স্ক মহিলা আমাকে ধরে ফেলেন এবং বড় রকমের বিপদ থেকে রক্ষা করেন। প্রাথমিক সেবা-শুশ্রূষার পর হুইলচেয়ারে করে আমাকে বাতানুকূল অপেক্ষা-ঘরে নিয়ে যান। কিছু ক্ষণ বসার পরে আমি খানিকটা সুস্থ বোধ করি। তার পর যখন আমাদের কাগজপত্র পরীক্ষার সময় আসে, তখন সেখানকার কর্মচারীদের তৎপরতায় আধ ঘণ্টার মধ্যেই যাবতীয় কাজ হয়ে যায়। ভবিষ্যতে আমাদের আবার পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয়তো হবে না। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি, অন্য প্রবীণদের কথা মাথায় রেখে পাসপোর্ট অফিসে অপেক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধার ব্যবস্থা করা হোক।
ঝর্ণা গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা-৯১
টাকা নেই
‘অবসরেও পেনশন অমিল অনেক শিক্ষকের’ (৬-৩) সংবাদটির প্রেক্ষিতে এই চিঠি। এর মূল বক্তব্য, শিক্ষকরা অবসরের কয়েক মাস পরও তাঁদের প্রাপ্য পাওনাকড়ি পাচ্ছেন না। তার জন্য অশক্ত দেহ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে বার বার ছুটে গিয়েও কোনও আশার কথা শুনতে পাচ্ছেন না। বদলে শুনছেন তাঁদের কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট বিভাগে না পৌঁছনোর গল্প। আসলে উক্ত শিক্ষকরা বুঝতে পেরেছেন সরকারের এখন ভাঁড়ে মা ভবানী। রাজ্যের অন্যান্য খাতের নির্ধারিত টাকা এনেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না ভান্ডারের টান। ফলে সামাজিক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ করতে পারছে না সরকার। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার সময় বর্তমান সরকারের ঘাড়ে দেনা ছিল এক লক্ষ বিরানব্বই হাজার কোটি টাকা। যত দূর জানি, বর্তমানে সেই ধার প্রায় ছ’লক্ষ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই। সম্প্রতি বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধারও নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে বেকারত্ব বাড়ছে, কমছে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। তাই অনুরোধ, অযথা খরচে এ বার সংযত হোক সরকার। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রাপ্য পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। না হলে ওই শিক্ষকদের দুর্দশার সীমা থাকবে না।
বীরেন্দ্র নাথ মাইতি
খড়্গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
অশনিসঙ্কেত?
সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ দামোদর অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে রাতের বেলায় নারকেল গাছের পাতার বেশ অনেকটা অংশ সাদা হয়ে যাচ্ছে। দিনের বেলায় কিন্তু সেই পাতার রং আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শুধু এই রাজ্যের অন্যান্য জেলায় নয়, অনেক রাজ্যেই নাকি একই ধরনের ঘটনা ঘটছে। এক-একটি ফসল ওঠার পর, ধানগাছের নাড়া বা শুকনো লতাপাতা পোড়ানোর দৃশ্য আজকাল গ্রামে হামেশাই দেখা যায়। রাতে হঠাৎ দেখলে মনে হয় বিস্তীর্ণ মাঠে হাজার হাজার চিতা জ্বলছে। এর ফলে ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে আকাশ। সেই সঙ্গে বায়ুদূষণ হচ্ছে ভয়ঙ্কর। সামান্য প্রচার ছাড়া এই ব্যাপারে সরকারের কোনও কার্যকর ভূমিকাও নেই। রাতে নারকেল গাছের পাতার রং বদল এই বায়ুদূষণের কারণে পরিবেশের সাড়ে সর্বনাশ হওয়ারই ফল কি না, সে বিষয়ে কোনও বিশেষজ্ঞ আলোকপাত করলে ভাল হয়।
সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়
সাদিপুর, পূর্ব বর্ধমান
পশুখাদ্যে টান
গত কয়েক দশকে কৃষিজমি যেমন কমেছে, তেমনই ঘাসযুক্ত জমির পরিমাণও কমেছে। ফলে পশুখাদ্যের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। একটি দুগ্ধবতী গাভীর প্রতি ১০০ কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ১ কিলোগ্রাম খড় এবং ৩ কিলোগ্রাম তাজা ঘাসের প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ, একটি ৫০০ কেজি ওজনের গাভীর জন্য দরকার ৫ কিলোগ্রাম শুকনো খড় এবং ১৫ কিলোগ্রাম সবুজ ঘাস। আবার গাভীর প্রথম ৩ লিটার দুধ পেতে ৩ কিলোগ্রাম দানাদার খাবার এবং পরবর্তী ৩ লিটারের জন্য আর ১ কিলোগ্রাম দানাদার খাবার দরকার হয়। গরু সাধারণত শুকনো খড়ের চেয়ে কাঁচা ঘাস খেতেই বেশি পছন্দ করে। কিন্তু কোথায় সে ঘাস? আবার যতটা পরিমাণ খাবারের উল্লেখ করা হল, সেই অনুপাতে কি আমরা গরুকে খাবার দিই?
হালের বলদের প্রতিও খাবারে বিষয়ে আমরা তেমন নজর দিই না। দানাদার খাবারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে গরু-মহিষদের আজকাল খাবারে টান পড়ছে। এরা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার না পায়, তা হলে গাভীরা দুধ উৎপাদন করবে কী করে? আর শরীর না চললে বলদগুলি লাঙল এবং জোয়াল টানবে কী করে? মানুষের চাহিদা মেটাতে এখন যেটুকু কৃষিজমি আছে, সেটুকুও বহুফসলি হওয়ার কারণে গরু, ছাগল, মহিষের মাঠে চরে খাওয়ার সুযোগ অনেক কমে গিয়েছে। ফলে যেটুকু ফাঁকা জায়গা আছে, সেখানেই গরু, মহিষ, ছাগলকে বার বার বেঁধে দিয়ে আসা হয়। ঘাস নেই, তবুও তারা সেখানে পেটের দায়ে মুখ একদম মাটিতে ঠেকিয়ে কামড় দেয়। কিন্তু পেটে তেমন কিছুই যায় না।
যে দেশের মানুষ নিজের খাদ্য জোগাড় করতে ঘর বাড়ি ছেড়ে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গিয়ে ঘর বাঁধেন, সেই দেশের পশুদের পেট ভরানোর কথা ভাববে কে?
সনাতন পাল
বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর
পুরনো পদ্ধতি
‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পটি
সরকার চালু করার চেষ্টা করেছিল, যাতে অনেক মানুষ বাড়ির সামনে রেশন তুলতে পারেন। নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা। কিন্তু বাস্তবে এই চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। ‘দুয়ারে রেশন’ কোনও না কোনও ক্লাবে, প্রাথমিক স্কুলে কিংবা হাইস্কুলে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, যাঁদের বাড়ির সামনে রেশন দোকান ছিল, তাঁদের দূরে গিয়ে কোনও বিদ্যালয়ে রেশন তুলতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, রেশন কবে দেওয়া হচ্ছে, কোন সময় দেওয়া হবে, তার নির্দিষ্ট তারিখ জানা যাচ্ছে না বা সেইমতো প্রচার করা হচ্ছে না। ফলে অনেকেরই সময়মতো রেশন নেওয়া হচ্ছে না, অনেকে পাচ্ছেনও না। গোটা ব্যাপারটা এক প্রকার প্রহসনে পরিণত হয়েছে। তাই এই ধরনের রেশন প্রক্রিয়া বন্ধ করা প্রয়োজন। আগে যেমন ছিল, সেই পদ্ধতি আবার চালু হোক।
সুজিত কুমার ভৌমিক
চণ্ডীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর
পথের কর
জাতীয় সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা সব যানবাহনের জন্য বিনা বিজ্ঞপ্তিতে এই দুর্মূল্যের বাজারে রাতারাতি যে হারে টোল ট্যাক্স বাড়ানো হল, সেটা কি খুবই যুক্তিযুক্ত? এর ফলে পণ্য পরিবহণ ও যাত্রী পরিবহণের খরচ বাড়বে। তার মাসুল দিতে হবে জনসাধারণকেই। যেখানে একটা সময়ের পর এই টোল ট্যাক্স উঠে যাওয়ার কথা, সেখানে কী করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই কর ব্যবস্থা চালু আছে? সড়ক উন্নয়নের খাতে বরাদ্দ টাকা থেকেই জাতীয় সড়কের উন্নয়ন হোক। আলাদা করে টোল আদায়ের প্রয়োজন কী? অবিলম্বে এই পথের কর বন্ধ হোক।
আলোক রায়
কলকাতা-১১০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy