পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় রাজ্য সরকারপোষিত দেড় শতাধিক গ্রন্থাগার আছে। গ্রন্থাগারগুলিতে গ্রন্থাগারিক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক মিলিয়ে ওই সংখ্যার দ্বিগুণ থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা পঞ্চাশেরও কম। স্বাভাবিক ভাবেই কর্মীর অভাবে অধিকাংশ গ্রন্থাগারে তালা ঝুলছে। কোন্নগরে রামেন্দ্র পাঠভবন ও কোন্নগর পাবলিক লাইব্রেরি নামে দু’টি গ্রন্থাগার আছে। এখানেও কোনও কর্মী নেই। অধিকাংশ গ্রন্থাগারে পঠনপাঠন ও বই নেওয়া-দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ। কিছু গ্রন্থাগারে অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ও কমিটির লোক মিলে সপ্তাহে কয়েক দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য গ্রন্থাগার খুলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে অবশ্য। কিন্তু সপ্তাহে প্রতি দিন পূর্ণ সময়ের জন্য খুলে না রাখার ফলে গ্রন্থাগারে পাঠক আসা ও বই নেওয়া-দেওয়া কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। অথচ, সরকারের এই নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। দশ-পনেরো বছর আগে বই কেনার জন্য গ্রন্থাগার-পিছু সরকার থেকে সাড়ে উনিশ হাজার টাকা করে দেওয়া হত। বইয়ের মূল্য বর্তমানে আকাশছোঁয়া হলেও সরকার থেকে বই কেনার অনুদান এক টাকাও বাড়ানো হয়নি। গ্রন্থাগারে বিভিন্ন মনীষীদের জন্মদিন পালন ও অনুষ্ঠান করার জন্য ১২০০ টাকা করে অনুষ্ঠান পিছু দেওয়া হত। তাতে যেমন এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে সংস্কৃতি চর্চা করা যেত, তেমনই গ্রন্থাগারে বইপ্রেমীরা আসার একটা সুযোগ পেতেন। করোনাকালীন অবস্থার পরে তা-ও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আশ্চর্য লাগে, রাজ্য সরকারের খেলা, মেলা, পুজোয় অনুদান দেওয়ার সময় অর্থের অভাব পড়ে না, কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে পিছপা হয় না। কিন্তু গ্রন্থাগারগুলিতে কর্মী নিয়োগের বেলায় এত টালবাহানা কেন? কেন গ্রন্থাগারগুলি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে না রাজ্য সরকার? সরকার কি চায় না বইপ্রেমীরা গ্রন্থাগারে নিয়মিত আসুন, তাঁদের মধ্যে পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠুক?
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল, কোন্নগর, হুগলি
বিজ্ঞাপনে লাগাম
কোথাও কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন, তো কোথাও গোপনে নেশা ছাড়ানোর ঠিকানা। কোথাও যৌন চিকিৎসার হদিসও থাকছে। বাদ যাচ্ছে না মাসাজ-এর অছিলায় যৌনব্যবসার বিজ্ঞাপনও। হয়তো কারও কারও উপকারও হয় এই সব বিজ্ঞাপন থেকে। সমস্যা হল, এমন পোস্টার এখন স্থান-কাল না বুঝেই যত্রতত্র সাঁটানো হচ্ছে— কখনও স্কুল-কলেজের গেটের পাশে, লোকের বাড়ির দেওয়ালে অথবা ট্রেনের অন্দরে। ফলে এতে দৃশ্যদূষণ হচ্ছে। তা ছাড়া, কিছু কিছু পোস্টারে এমন ভাষা লেখা থাকে যে, পরিবারের সঙ্গে থাকলে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। বাস কিংবা টোটো নাহয় ব্যক্তিগত সম্পত্তি, তাই মালিকের অনুমতিক্রমে এই পোস্টার সাঁটানো হয়। কিন্তু স্কুল কলেজ বা ট্রেনের মতো সরকারি সম্পত্তিতে কার অনুমতিতে কিংবা সম্মতিতে এই পোস্টার লাগানো হয়? পোস্টারে থাকা নাম-ঠিকানা-ফোন নম্বর মারফত খুব সহজেই পৌঁছনো যেতে পারে বিজ্ঞাপনদাতার কাছে। কিন্তু প্রশাসন পদক্ষেপ করছে কই? এই কাজের জন্য জরিমানা কিংবা আইনি ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, শুধুমাত্র ‘বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষেধ’ লিখে দায় ঝেড়ে ফেললে হবে না।
সন্দীপন সরকার, পাল্লারোড, পূর্ব বর্ধমান
আনাজের দাম
গত কয়েক বছর যাবৎ দেখা যাচ্ছে দুর্গাপুজোর আগে ও পরে, এপ্রিল থেকে জুন এবং বর্ষার শুরুতে বাংলার আনাজের বাজারে আগুন লাগে। কলকাতা ও আশেপাশের ছোট-বড় বাজার আর সুপার মার্কেটের স্থায়ী ও অস্থায়ী সমস্ত বাজারে সব আনাজের দামে আগুন লাগে। আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য বাজারে সময়ের আনাজের দামে সামান্য পরিবর্তন হয়। গ্রামের বাজারে চাষিরা নিজেরাই আনাজ নিয়ে বসেন, সামান্য লাভে সেগুলো বিক্রি হলেই তাঁরা খুশি। বড় ব্যবসায়ীরাও ওখানে একই আনাজ রাখেন। তবে, এখন দিনকাল পাল্টেছে। এক শ্রেণির ফড়েদের কাছে তাঁরা সরাসরি পাইকারি দামে আনাজ বিক্রি করছেন সামান্য লাভে। আর স্থানীয় পাইকারি বাজারে এলেও ফড়েদের বলা দামেই আনাজ বিক্রি করছেন তাঁরা।
জেনে রাখা দরকার, আমাদের দৈনন্দিনের ব্যবহৃত আনাজ স্থানীয় বাজারে আসার আগে ২-৩ জন ফড়ের হাত ঘুরে আসে। গত দশ-বারো বছর যাবৎ এই ফড়েদের রমরমা আরও বেড়েছে, আর এদের পিছনে বড়সড় নেতাদের হাত রয়েছে। ফলে স্থানীয় বাজারে আমাদের কমপক্ষে ৪-৫ জন ফড়ের টাকার অংশের দাম দিতে হচ্ছে। রাজ্য সরকার একটা ‘টাস্ক ফোর্স’ তৈরি করেছে বাজারে জিনিসপত্রের দামের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য। আশ্চর্যের বিষয়, এই টাস্ক ফোর্সে রাখা হয়েছে শিয়ালদহের বিখ্যাত ‘কোলে মার্কেট’-এর এক কর্মকর্তাকে। ফলে যা হওয়ার তা-ই হচ্ছে— বাজারে জিনিসপত্রের লাগামছাড়া দামের অবস্থা দেখেও ওই ‘টাস্ক ফোর্স’ কোনও ব্যবস্থা করে না, অপেক্ষা করে কখন ‘মুখ্যমন্ত্রীর ডাক আসে’ ব্যবস্থা করার। ফলে বাজারে বাড়তি টাকা নেতা-ফড়েরা পকেটে পুরে ফেলার পর ‘সরকার ব্যবস্থা করা’র কথা ঘোষণা করে। সঙ্গে সঙ্গে তড়িঘড়ি বাজারে এসে পড়ে টাস্ক ফোর্স ও পুলিশ বাহিনী, যাদের সঙ্গে বাজারের দোকানদারদের ‘লুকোচুরি খেলা’ চলতে থাকে। গত দশ-বারো বছরে কলকাতা ও আশপাশের সমস্ত বাজারে আনাজ বিক্রেতার সংখ্যা তিন-চার গুণ বেড়েছে অন্য কোনও আয়ের পথ না থাকায়। সাধারণ লোকের পকেট কেটে সরকার বা টাস্ক ফোর্স ও আনাজ ব্যবসায়ীদের এই অলিখিত লুকোচুরি খেলা বন্ধ হওয়া দরকার।
অসিত কুমার চক্রবর্তী, কলকাতা-১৪১
ভদ্রতার অভাব
সম্প্রতি গ্যাস বুকিং করতে গিয়ে অত্যন্ত তিক্ত অভিজ্ঞতা হল। আমার যে ফোনে বুকিং হয়, সেটা পনেরো বছরের পুরনো। ইদানীং বুকিংয়ের পরে ডেলিভারির আগে ওটিপি আসে ফোনে। ডেলিভারি পার্সনকে সেটা বলতে হয়। এ বারে কোনও ওটিপি আসেনি, এমনকি বুকিং যে কোড নম্বর, তাও আসেনি। ডেলিভারি পার্সন ওটিপি চাইলে দিতে না পারায় উনি সিলিন্ডার ফেরত নিয়ে যান এবং বলেন অফিসে যোগাযোগ করতে। সেইমতো অফিসে ফোন করলে এক জন কর্মচারী ফোনে অত্যন্ত উদ্ধত ভাবে বলেন যে এই ফোন নম্বর নাকি রেজিস্টার্ড নয়। সঙ্গে পুরনো ওটিপি মেসেজ দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারিনি, কারণ পুরনো মেসেজ ফোনে রাখি না।
পরের দিন অফিসে গিয়ে নতুন করে আবার ফোন নম্বর দিয়ে আমাকে রেজিস্টার করাতে হল। লক্ষ করলাম কী অসম্ভব রূঢ় ভাবে ছেলেটি এক জন প্রবীণ নাগরিকের সঙ্গে কথা বলছে। প্রবীণদের অনেক সময় নিয়মকানুন বুঝতে সময় লাগে। ভদ্রলোক বার বার প্রশ্ন করছিলেন, থতমত খাচ্ছিলেন। ভীষণ খারাপ লাগল দেখে। আমার সঙ্গেও একই রকম ব্যবহার ছিল ছেলেটির। আমার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনটুকুও সে বোধ করেনি। ওই গ্যাসের ডিলারকে অনুরোধ, অফিসে লোক রাখার আগে ভদ্র, সভ্য, মার্জিত ছেলে রাখুন, যারা অন্তত প্রবীণদের সঙ্গে একটু ধৈর্য সহকারে কথা বলবেন।
চৈতালী বন্দ্যোপাধ্যায়, বালিগঞ্জ-১৯
রাস্তা খারাপ
বিরাটিতে ১৭ ও ১৯ নম্বর ওয়র্ডের সাধারণ মানুষের যাতায়াতের মাধ্যম টোটো ও রিকশা। অনেক দিন যাবৎ রাস্তার বেশির ভাগ জায়গা ভাঙাচোরা। ফলে শুধু অসুস্থ বা প্রবীণদেরই নয়, সুস্থ মানুষেরও অসুবিধা হচ্ছে যাতায়াতে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
শুক্লা রায়চৌধুরী, কলকাতা-৫১
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy