Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Train

সম্পাদক সমীপেষু: ট্রেন কম যেন না হয়

-ফাইল চিত্র।

-ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৫০
Share: Save:

মেট্রো এত দিন বন্ধ থাকার পর আবার চালু হচ্ছে, লোকাল ট্রেন নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। খুব ভাল কথা। শহরতলির সাধারণ মানুষকে সাধ্যের বাইরে গিয়ে বিরাট টাকার বিনিময়ে বাহনের বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যেই তেলের দাম বাড়ায় বেশ কয়েক দফা গাড়ির ভাড়াও বাড়িয়েছেন গাড়ির মালিক। নাভিশ্বাস উঠেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের।

এই অবস্থায় লোকাল ট্রেন চালু হলে তাঁরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচবেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষকেও অনেক দিক বিবেচনা করে যথেষ্ট সাবধানে পদক্ষেপ করতে হবে। লোকাল ট্রেন চালু করতে গিয়ে শুরুতে এক-চতুর্থাংশ ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারে। এক বার ট্রেনে যাতায়াতের সুবিধা হলে কত জন আর নিজেদের ভাড়া করা গাড়িতে যাবেন? বেশির ভাগই ছুটবেন ট্রেন ধরতে। কর্তৃপক্ষের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দু’বার ভাবুন। ট্রেন কম চালালে বিধি মেনে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতায়াত অসম্ভব হয়ে পড়বে। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে পৌঁছতে মরিয়া মানুষ বিপজ্জনক ভাবে যাতায়াত করবেন।

ট্রেন, মেট্রো পরিষেবার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুক রাজ্য সরকার। না হলে অপ্রতুল গণপরিবহণে চূড়ান্ত ঠেলাঠেলিতে ভয়াল আকারে নেমে আসবে বিপদ।

বিশ্বনাথ পাকড়াশি

শ্রীরামপুর-৩, হুগলি

সুলভ সুচিকিৎসা

‘তা হলে আর কোন পথ রইল’ (২৭-৮) লেখাটি পড়ে কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলার তাগিদ অনুভব করছি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আমার ছ’বছরের কন্যার ডেঙ্গি ধরা পড়ল। ওর চিকিৎসক জানালেন, হাসপাতালে ভর্তি করা জরুরি। কলকাতায় তখন ঘরে ঘরে ডেঙ্গি, কোনও হাসপাতালে একটা শয্যা জোগাড় করাও দুঃসাধ্য। ঘটনাক্রমে সে দিন ওর স্কুলের এক সহপাঠীরও ডেঙ্গি ধরা পড়ল। দুই কন্যার অভিভাবকই হাসপাতালের খোঁজে হন্যে। শেষ অবধি আমার মেয়েকে ভর্তি করা গেল ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ-এ। অন্য মেয়েটি ভর্তি হল সল্টলেকের এক নামী বেসরকারি হাসপাতালে। আট দিন চিকিৎসার পরে দু’টি মেয়েই সুস্থ হয়ে ছাড়া পেল। আমাদের বিল হল ১৪,৩০০ টাকা; অন্য মেয়েটির বিল হল এক লক্ষ টাকারও বেশি।

প্রতি দিন অভিজ্ঞ ডাক্তাররা দেখে গিয়েছেন আমার মেয়েকে, সব পরীক্ষা হয়েছে নিয়মিত। চিকিৎসক, কর্মীরা বিপুল চাপের মধ্যেও হাসিমুখে উত্তর দিয়েছেন সব প্রশ্নের, সব উদ্বেগের। মেয়ের সঙ্গে আট দিন হাসপাতালের শয্যায় থাকার সুবাদে দেখেছি, রোগীর আর্থিক বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষেই ডাক্তার, কর্মীরা সবার সঙ্গে সমান ব্যবহার করছেন। এই সব পরিবারের অনেকের পক্ষেই সন্তানের জন্য অন্য কোথাও এত কম খরচে ভাল চিকিৎসার নাগাল পাওয়া অসম্ভব।

বেসরকারি কর্পোরেট হাসপাতালের সঙ্গে আইসিএইচ-এর মতো প্রতিষ্ঠানকে গুলিয়ে ফেললে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধারণ রোগীর। এই হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেলে অনেকেই বাধ্য হবেন সাধ্যাতীত অর্থব্যয়ে চিকিৎসা পরিষেবা কিনতে।

মাসুমা পরভীন

কলকাতা-৫৫

কোন সমাজ?

২৮ অগস্ট ভোর সাড়ে চারটের সময় জানতে পারলাম, আমার পাশের বাড়ির ৪৮ বছরের ভদ্রমহিলার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। এই পাড়ায় চার জন চিকিৎসক থাকেন পাঁচ মিনিট দূরত্বের মধ্যে। সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চার জন ডাক্তারবাবুকে কাকুতিমিনতি করলাম, বাড়ি এসে রোগীকে দেখে যাওয়ার জন্য। কেউ এলেন না। এক উত্তর— শরীর খারাপ, যেতে পারব না। কোনও মতে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে হাসপাতালে আনলাম। হাসপাতাল ইসিজি করে জানাল, দেহে প্রাণ নেই।

মুমূর্ষু রোগীকে বাড়ি এসে দেখতে ডাক্তারবাবুরা মুখের উপর ‘না’ বলছেন। ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া তো দূর অস্ত্। যে হেতু হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়নি, তাই ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হাসপাতালের কাজ নয়। অতএব আর এক প্রস্ত হয়রানি ডেথ সার্টিফিকেট জোগাড়ের জন্য। এ কোন সমাজে বাস করছি আমরা?

কুমার শেখর সেনগুপ্ত

কোন্নগর, হুগলি

সৌজন্য

কয়েক দিন আগে আমার এক নিকটাত্মীয় মারা যান। তাঁর মরদেহ জিটি রোড দিয়ে শববাহী গাড়িতে নিয়ে আসতে গিয়ে এক অন্য রকম অভিজ্ঞতা হল। কয়েক বছর ধরে জিটি রোডের প্রধান গতি নিয়ন্ত্রক রূপে এসেছে ই-রিকশা, ডাক নাম টোটো। এই টোটোর আকারের সঙ্গে তার গতির এতটাই অসামঞ্জস্য যে, সে হয়ে দাঁড়াচ্ছে মিছিলের সামনের সারির অশীতিপর নেতার মতো। তাকে না যায় পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া, আর না সহ্য হয় তার পিছু পিছু চলা। টোটো সচরাচর কাউকে পাশ দেয় না। এতে তার মানে লাগে।

শববাহী গাড়িতে মরদেহ নিয়ে আসার সময় প্রথম লক্ষ করলাম, টোটোচালকরা অবলীলায় পাশ দিচ্ছেন, হাত দেখিয়ে এগিয়ে যেতে বলছেন! এই ঔচিত্যবোধ জীবিত মানুষের প্রতি কখনওসখনও দেখালে করোনা পরিস্থিতিতে সড়কপথ-নির্ভর অফিসযাত্রা একটু স্বস্তির হত।

প্রিয়ম মজুমদার

শ্রীরামপুর, হুগলি

পরিযায়ীর দাবি

লকডাউনে সবচেয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকরা। যাঁরা পেটের দায়ে ভিন্‌রাজ্যে অসংগঠিত ক্ষেত্রে জরি, সোনা, নির্মাণ, ফুল দোকান বা মণ্ডপ সাজানোর কাজ-সহ বিভিন্ন কাজে গিয়েছিলেন, তাঁদের বাড়ি ফেরার মর্মন্তুদ ছবি চোখের সামনে এখনও জ্বলজ্বল করছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কত দিনে তাঁরা সেই পুরনো কাজের জায়গায় ফিরবেন, সেখানে ফিরে সেই কাজ পাবেন কি না, সবটাই অনিশ্চিত। এই অবস্থায় যে কোনও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল তাঁদের পাশে দাঁড়ানো। অথচ আমরা দেখলাম, কেন্দ্রীয় সরকার জনগণের দেয় সাহায্যের টাকা থেকে তাঁদের জন্য এক হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করার কথা ঘোষণা করলেও, এ রাজ্যে কারা কী ভাবে তা পাবে, তা অজানাই থেকে গেল।

ইতিমধ্যেই ওই শ্রমিকরা ‘মাইগ্র্যান্ট ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (পরিযায়ী শ্রমিক সমিতি) নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন। তাঁদের দাবি, সমস্ত শ্রমিকের সরকারি ভাবে নাম নথিভুক্ত করে পরিচয়পত্র প্রদান, যত দিন না কাজে যুক্ত হতে পারছেন তাঁরা, তত দিন অন্তত সাড়ে সাত হাজার টাকা মাসিক ভাতা প্রদান, ইচ্ছুক শ্রমিকদের জব কার্ড প্রদান করে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ দেওয়া, আইবিএস স্কিমে ফল বাগান তৈরি প্রভৃতি। লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জন্য অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

নারায়ণ চন্দ্র নায়ক

কোলাঘাট, পূর্ব মেদিনীপুর

পর পর তিন

সেপ্টেম্বর মাসের লকডাউনের যে ঘোষণা হল, সেখানে তিনটে দিন একই সপ্তাহের মধ্যে রয়েছে। দিনগুলি হল ৭, ১১ এবং ১২ তারিখ। ১৩ তারিখকে (রবিবার) ধরলে এক সপ্তাহে মোট ৪ দিন সব বন্ধ থাকছে। লকডাউনের উদ্দেশ্য কি এ ভাবে সফল হবে? লকডাউন ঘোষণারও একটা নিয়ম থাকা দরকার। মানুষের কম অসুবিধে করে কী ভাবে করোনার মোকাবিলা করা যায়, সেটা ভেবে দেখতে হবে।

সমীর বরণ সাহা

কলকাতা-৮১

অন্য বিষয়গুলি:

Train Metro Rail Railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy