তারকেশ্বরে বাবা তারকনাথের নামে মানত করে বহু ভক্ত বাবাকে ষাঁড় দান করে থাকেন। পুজো হয়ে গেলে যত্রতত্র ষাঁড়গুলো ঘুরে বেড়ায়। গোটা তারকেশ্বর চত্বর, সবজি বাজার এবং তারকেশ্বর-সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে পড়ে খাবারের সন্ধানে। খাবারে মুখ দিলে মানুষ বিরক্ত হয়, ওদের মারধর করে। গ্রামে ঢুকে জমির ফসল খাওয়ার চেষ্টা করে, মানুষকেও গুঁতোতে যায়। এদের তাড়াতে কেউ বাঁশ দিয়ে প্রহার করে, কেউ গরম জল ঢেলে দেয় গায়ে। অত্যাচারের চিহ্ন বয়ে ষাঁড়গুলো অসুস্থ অবস্থায় ঘুরতে থাকে। কোনও ষাঁড় আবার রেললাইন পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কা খেয়ে অকালে প্রাণ হারায়।
এমনই একটি ষাঁড় আমার বাড়ির কাছাকাছি ঘুরে বেড়ায়। হৃষ্টপুষ্ট শরীর ছিল আগে। হয়তো কেউ কখনও পায়ে আঘাত করেছিল। তাতে একটি পা খোঁড়া হয়ে যায়। ভাল করে চলতে পারে না। ঠিকমতো খাবার সংগ্রহ করতে না পারায় খুব রোগা হয়ে গিয়েছে। এদের যদি এক জায়গায় রেখে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা যেত, তা হলে এরাও পরিত্রাণ পেত। মানুষও স্বস্তিতে থাকত।
মঞ্জুশ্রী মণ্ডল
তারকেশ্বর, হুগলি
জীবে প্রেম
‘দেশি কুকুর পুষুন, আর্জি প্রধানমন্ত্রীর’ (৩১-৮) শীর্ষক সংবাদ পড়ে ভাল লাগল। পথকুকুর তীব্র অবহেলার শিকার। একটু এঁটোকাঁটা খেতে গিয়ে সবার লাথিঝাঁটা পায়। খেতে না পেয়ে হাড় জিরজিরে হয়ে যায়। পথকুকুর দেখলেই মানুষ তার ওপর রড, গরম জল দিয়ে নৃশংস অত্যাচার চালায়।
স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যখন নজর দিয়েছেন, তখন নিশ্চয়ই দেশি কুকুর নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়বে! তার আগে সমস্ত পথকুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার বন্দোবস্ত করুক সরকার।
বিবেকানন্দ চৌধুরী
কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান
অতিষ্ঠ
রাস্তার কুকুর আর বাড়ির কুকুরকে সেবা করে সময় কাটাচ্ছেন আমার প্রতিবেশী। আর আমরা উল্টো দিকের রাস্তার পাশে দিনরাত চিৎকার শুনছি। ঘরে নিজেদের মধ্যে কথা পর্যন্ত বলা যায় না। হঠাৎ এমন চিৎকার করে, বুক ধড়ফড় করে ওঠে। ওদের চিৎকারে বাড়িতে বৃদ্ধা মায়ের সারা রাত ঘুম হয় না। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। মোট সাতটি কুকুর দিনরাত চিৎকার করে চলেছে। রাস্তা দিয়ে কোনও ব্যক্তি বা প্রাণী হেঁটে গেলে চিৎকারের মাত্রা বেড়ে যায়। অন্য কুকুর এসে গেলে মারপিট করে। এত ভালবাসায় আজ এই অবসর জীবনে বড় অসহায় বোধ করছি। এর কি কোনও প্রতিকার নেই?
সমীর চক্রবর্তী
শ্রীরামপুর, হুগলি
এত রূপ
‘‘মোদীর ‘মিত্র’ ময়ূর...’’ (২৪-৮) প্রসঙ্গে বলি, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই সমাজমাধ্যমে দেখেছি, কখনও সমুদ্রের ধারে প্লাস্টিক কুড়োতে, কখনও ঝাঁটা নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করতে, কখনও আবার গুহায় ধ্যানরত অবস্থায়। নবতম সংযোজন, ময়ূরকে দানা খাওয়ানো। তিনি হতেই পারেন পশুপ্রেমী, মেডিটেশন-এর পূজারি অথবা পরিচ্ছন্নতার প্রতিরূপ। এগুলি মানবিক গুণ। সচেতন নাগরিকের অল্পবিস্তর এই সব গুণ আছে। কিন্তু তা যদি বিজ্ঞাপনের আকারে প্রকাশ পায়, আর নিন্দুকেরা ‘ট্রোল’ করে, ভাল লাগে না। ইতিপূর্বে কোনও প্রধানমন্ত্রীকে এমন করতে দেখিনি। শ্রদ্ধেয় অটলজিকেও না। একই অঙ্গে এত রূপ না-ই বা দেখালেন মোদী।
রাজা বাগচি
গুপ্তিপাড়া, হুগলি
মহানুভব
প্রধানমন্ত্রীর ময়ূরকে খাওয়ানোর চিত্রটি মনোমুগ্ধকর। আমিও প্রায়ই এক ঝাঁক শালিক-ছাতারেদের সঙ্গে প্রাতরাশে অংশ নিই। কিন্তু ব্যক্তিগত এই যাপনচিত্র সমাজমাধ্যমের পর্দায় দিয়ে আপন মহানুভবতাকে প্রকাশের বিন্দুমাত্র ইচ্ছা পোষণ করি না। বর্তমান সমাজ প্রতিনিয়তই ব্যক্তিগত জীবনের ছবি সর্বসমক্ষে তুলে ধরে মহানুভবতা প্রমাণের ব্যর্থ প্রচেষ্টা করে চলেছে। দেশের নেতাও ব্যতিক্রম নন।
সঞ্জয় রায়
দানেশ শেখ লেন, হাওড়া
বানকখানা
রবিবাসরীয় নিবন্ধে (‘বন্যার সঙ্গে বাঁচা’, ৩০-৮) সুপ্রতিম সরকার বলেছেন, বিহারের মুজফ্ফরপুরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা বাগমতীর ধারে ‘খুঁটা’ পোঁতা হত। খুঁটার মাথায় বাঁধা থাকত নিশান, যা দেখে মানুষ বুঝে নিত বাতাসের গতি। আর খুঁটার গোড়ার দিকে তাকিয়ে প্রবীণরা নদীর জল মাপতেন। জল বাড়তে শুরু করলে তাঁরা জানাতেন ‘বানসিপাহি’-দের। বানসিপাহিরা একযোগে হল্লা করতেন। ওই সমবেত চিৎকার ছিল গ্রামবাসীদের প্রতি সতর্কবার্তা।
প্রসঙ্গত জানাই, হাওড়া জেলার আমতা থানার সন্নিকটে, আমতা সেচ ডাকবাংলোর পূর্ব দিকে একটি জায়গার নাম, ‘বানকখানা’। প্রকৃতপক্ষে, বানকখানার নাম ছিল ‘বানহাঁকখানা’। অর্থাৎ, বান বা বন্যা এলে, হাঁক বা চিৎকার করে (চোঙার সাহায্যে) জানিয়ে দেওয়া হত যে জায়গা থেকে, তা-ই বানহাঁকখানা। খানা (ফারসি শব্দ। যেমন, ডাক্তারখানা, গোসলখানা, মক্তবখানা), অর্থাৎ জায়গা বা স্থান। এই বানহাঁকখানারই অপভ্রংশ এখন বানকখানা। আমতার প্রাচীনতা প্রসঙ্গে গ্রন্থেও এই বানকখানার উল্লেখ আছে।
এস মনিরউদ্দিন
কলকাতা-১৬
অক্ষরশিল্প
ট্রাম কলকাতার গর্ব। ট্রামের সঙ্গে জুড়ে আছে বাংলা ক্যালিগ্রাফি। গন্তব্য বোঝানোর জন্য এর গায়ে থাকে ধাতব বোর্ড, যেটা সহজেই খোলা যায়। রুট অনুসারে বদলে দেন চালক। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা থেকে শুরু করে শিল্পীর তুলিতে বা ক্যামেরার লেন্সে ট্রাম যত বার এসেছে, তত বার ফুটে উঠেছে বাংলা লিপিতে হাতে লেখা বোর্ড।
এক কালে হাতের লেখা ভাল হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি হত অনেকের, কাজ থাকত সার্টিফিকেট লেখার। পাড়াতেও এঁদের কদর ছিল। কিন্তু যন্ত্রের যুগে হাতের লেখার কদর উঠে যাচ্ছে, ক্যালিগ্রাফিও হয়ে যাচ্ছে যান্ত্রিক। তবুও এই রীতি টিকেছিল ট্রামগুলোর বোর্ডে। এখন সাঁটা হচ্ছে প্রিন্ট করা ইংরেজি স্টিকার। হারিয়ে যাচ্ছে দুটো জিনিস— সুন্দর ক্যালিগ্রাফি ও বাংলা লিপি। যদি আলাদা করে বাংলাতে হাতে-লেখা বোর্ডটাও রাখা যায়, তবে বোধ হয় একটা শিল্প হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচবে— অক্ষরশিল্প।
মাল্যবান চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৪১
শয্যার খরচ
‘হাসপাতালে খরচ, দেখা নেই তালিকার’ (৪-৯) শীর্ষক প্রতিবেদনে ছাপা হয়েছে, অ্যাপোলো গ্লেনইগলস হসপিটালের সর্বনিম্ন শয্যা খরচ প্রতি দিন ৯৫০০ টাকা। প্রকৃতপক্ষে, এই অঙ্কটি ৪০০০ টাকা। আমাদের পরিষেবার গ্রাহকরা আপনাদের দেওয়া তথ্যের ফলে বিভ্রান্ত হবেন।
রানা দাসগুপ্ত
সিইও, ইস্টার্ন রিজিয়ন, অ্যাপোলো হসপিটালস গ্রুপ
প্রতিবেদকের উত্তর: অ্যাপোলোর অ্যাডমিশন কাউন্টারে কর্তব্যরত কর্মী জানান, সর্বনিম্ন শয্যা খরচ ৯৫০০ টাকা। এর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার সময়ে এই প্রতিবেদক ওই খরচ (৯৫০০ টাকা) উল্লেখ করেন। কর্মরত আধিকারিক তা সংশোধন করেননি, শুধু জানিয়েছেন শয্যা খরচে কোনও বদল হয়নি। সেই বক্তব্য প্রতিবেদনে আছে। দু’টি কথোপকথনেরই অডিয়ো ক্লিপ রয়েছে। অতএব শয্যার খরচ নিয়ে বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy