বাঘের হানা। ফাইল চিত্র।
‘বাঘের হানায় মৃত্যু’ (১৩-১১) শীর্ষক খবরের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের গোসাবা, কুলতলি, মৈপীঠ থানা এলাকার মানুষজনের জীবন-জীবিকা সুন্দরবনের নদী-নালা-জঙ্গলের উপর নির্ভর করে। নদী-জঙ্গল থেকে মধু, মাছ, কাঁকড়া, মিন এবং শুকনো কাঠপাতা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে প্রায়শই তাঁদের বাঘ ও কুমিরের মুখে পড়ে প্রাণ হারাতে হয়। খুব অল্প ক্ষেত্রেই লড়াই করে কোনও মতে বেঁচে ফেরেন কয়েক জন। বাঁচলেও তাঁদের বাকি জীবনটুকু কাটিয়ে দিতে হয় কর্মক্ষমতা হারিয়ে। এবং বাঘে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আক্রান্তের পরিবারগুলি প্রায় কোনও ক্ষেত্রেই ক্ষতিপূরণ পান না (ব্যতিক্রম দুটো পরিবার)। এ সব ক্ষেত্রে মৃত বা আহতদের পরিবার বাঘে আক্রমণের বিষয়টি স্থানীয় বন দফতরে জানাতে গেলে বেশির ভাগ সময় তাঁদের দরখাস্ত জমা নেওয়া হয় না বা জমা নিলেও রিসিট কপি দিতে অস্বীকার করা হয়।
নিয়মানুসারে বাঘে আক্রমণের ক্ষেত্রে মৃতদেহ যে স্থানে পাওয়া যায়, সেখানে নিহতের পরিবারের এক জন সদস্যকে নিয়ে তথ্যানুসন্ধানে যাওয়ার কথা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, নিহতের পরিবারের কাউকেই সেই তথ্যানুসন্ধান দলে রাখা হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নদীতে (বিএলসি পাশ নিয়ে) মাছ-কাঁকড়া ধরার সময় নৌকাতেই বাঘ আক্রমণ করে কাউকে টেনে কোর এরিয়ায় নিয়ে গেলে, ‘মৃত ব্যক্তি নিষিদ্ধ জায়গায় প্রবেশ করেছিল’ এমন দাবি করে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এড়িয়ে যায় বন দফতর। আবার, অনেক সময় জাল কেটে গ্রামে বাঘ ঢুকে গবাদিপশু হত্যা করলে, মেলে না তার ক্ষতিপূরণও। সে সময় গ্রামবাসীদের দিয়ে বন দফতর বাঘ তাড়ানো এবং জাল মেরামতের কাজে খাটিয়ে নিলেও, তাঁদের প্রাপ্য মজুরিটুকুও দেওয়া হয় না।
এলাকার এক বড় সংখ্যক মানুষের কাছে যেখানে এটা জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন, সেখানে স্থানীয় প্রশাসন বা সরকারের একটা দায় ও দায়িত্ব থেকে যায়, এই ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় তাঁদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার, বাঘের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য উপযুক্ত সরঞ্জাম সরবরাহ করার, জীবনবিমার ব্যবস্থা করে দেওয়ার। কিন্তু এত বছরেও এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকার বা প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনও মাথাব্যথা নেই!
বাঘে আক্রান্ত পরিবারের একমাত্র রোজগেরে চলে যাওয়ায় পরিবার পড়ে অথৈ জলে! এবং এটাই ঘটে চলেছে বছরের পর বছর! গত ১১ নভেম্বর এ রকমই একটি ঘটনা ঘটে। কুলতলির দিলীপ সর্দার (৩৭) জীবিকার তাগিদে নদীতে গেলে ওই দিন সকালে বাঘের আক্রমণে নিহত হন। সঙ্গে প্রশাসনিক অসহযোগিতা তো আছেই! আর কত মৃত্যু হলে সরকারের টনক নড়বে? বা আদৌ কখনও নড়বে কি?
আলতাফ আমেদ, কলকাতা-১২
কল্পনাহীন
পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায়ের ‘হারিয়ে যাচ্ছে কল্পনার রং’ (১৪-১১) শীর্ষক প্রবন্ধটি জরুরি। আজকের নতুন প্রজন্ম সারা ক্ষণ ব্যস্ত কার্টুন বা ভিডিয়ো গেমস নিয়ে। ফলে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠছে না। পাশাপাশি থাকে পড়াশোনার প্রবল চাপও। যদি কেউ কখনও কাল্পনিক কিছু বলার চেষ্টা করে, তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। অথচ, শিশুমনের ভাবনার পরিসরটা আকাশ সমান করে তোলাই তো আমাদের কাজ। প্রথাগত পড়াশোনা বা ভাবনার বাইরে না বেরোলে তার বিকাশ হবে কী ভাবে? শিশুদের শিশু হিসাবে দেখতে চাওয়া এবং পাওয়াটা খুব জরুরি। সেই দায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে বড়দের। তাদের কল্পনার জগৎ প্রসারিত করতে বাংলা সাহিত্যের থেকে ভাল আর কী হতে পারে?
সুমন চক্রবর্তী, কলকাতা-৬৫
হারাচ্ছে শিশুমন
‘হারিয়ে যাচ্ছে কল্পনার রং’ শীর্ষক প্রবন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি। পুরনো দিনের একটি গানের কলির কথা উল্লেখ করা যায়— ‘সেই লাল নীল হলদে, রাজা রানি পুতুলে ভরা ছিল জানালার কোণটা’। আজ আর ছোট খুকুর নিজস্ব জানলার কোণে খুঁজে পাওয়া যাবে না কোনও রঙিন পুতুল। আজ সে যেন অনেকটাই পরিণত। বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সে এগিয়ে চলেছে বড় হওয়ার প্রতিযোগিতায়। এখন শিশুরা অতি দ্রুত কল্পনার জগৎ থেকে সরে যাচ্ছে। কিন্তু এই কল্পনার ডানায় ভেসে খেলাধুলো করার মধ্য দিয়েই সে স্বাভাবিক নিয়মে বেড়ে উঠত।
একটি বা দু’টি সন্তান ঘেরা বর্তমান পরিবারগুলির অভিভাবকদের সন্তানকে ঘিরে প্রত্যাশা অনেক সময়ই লাগামহীন। সেই প্রত্যাশা পূরণে শিশুটি কতখানি সফল, সেই মাপকাঠিতে তাকে মেপে চলেছে এ সমাজ। সবুজ মনের সোনালি বিকেলগুলি একের পর এক বিসর্জন দিয়ে পরীক্ষার খাতায় হয়তো অনেক নম্বর আনা যায়, কিন্তু মানুষ হতে গিয়ে অনেক সময়ই তারা শেষপর্যন্ত এক যন্ত্রমানবে পরিণত হয়। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের যখন প্রশ্ন করা হয় খেলাধুলো সম্পর্কে, তখন কোন খেলা তাদের পছন্দের সেটা আমরা শুনি। কিন্তু কোন খেলায় তারা সাবলীল, নিয়মিত অংশগ্রহণ করে, সেটা বড় একটা শোনা যায় না। বিরামহীন প্রতিযোগিতার হাতছানির এই দুনিয়ায় শিশুমনের স্বাচ্ছন্দ্য হারিয়ে গিয়েছে হয়তো বেশ কিছু বছর আগেই। আর তাতে শেষ পেরেক পুঁতল অতিমারির আগমন। স্কুলের উঠোনে শিশুমনের যতটুকু আদানপ্রদান ছিল, সেটা নজরবন্দি হল চার দেওয়ালের মধ্যে প্রায় দু’বছরের জন্য। মোবাইল ফোন হল পড়াশোনা ও খেলার সঙ্গী। অনেক শিশুই মনোরোগের শিকার হয়েছে এই অমানবিক পরিস্থতিতে।
মনে রাখতে হবে, শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাই এদের কল্পনার পরিসরটুকু ফিরিয়ে দিতে পারলে তবেই গড়ে উঠবে সুস্থ সমাজ।
দিলীপ কুমার সেনগুপ্ত, কলকাতা-৫১
বোমায় মৃত্যু
‘মর্মান্তিক’ (২৮-১০) শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রসঙ্গে এই চিঠি। প্রায়ই রাস্তার ধারে বা খেলার মাঠে শিশুরা পড়ে থাকা বস্তুকে বল ভেবে খেলতে গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়। অনেকে বাড়ির মাচায় থাকা বস্তুকে নারকেল ভেবে পাড়তে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শুধু কি শিশু, বোমা নামক বস্তুটি বাঁধতে গিয়ে কত কিশোর বা যুবকের মৃত্যু হয়, তার হিসাব আমরা কি রাখি? অথচ, এই শিশু-কিশোর-যুবকরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। এই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভুলে গিয়ে, আমরা রাজনৈতিক বা পারিবারিক কারণে প্রতিনিয়ত হিংসা-প্রতিহিংসার খেলায় মাতি। আর এমন ঘটনা ঘটলে এ ওর দিকে দায় ঠেলে দিয়ে নিজের কাঁধ থেকে দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলি। কেন ভাবি না, কাল আমার বাড়ির কোনও সদস্য এই বিপদে পড়তে পারে?
কাকলি সামন্ত, বালিচক, পশ্চিম মেদিনীপুর
পুকুর চুরি
গার্ডেন হাই স্কুলের বিপরীতে একটি বিশাল মজা পুকুর ছিল। কিছু দিন আগে দেখি পুকুরটি প্রায় নেই। মাটি দিয়ে অনেকটাই ভরাট করে তাতে বড় বড় পিলার বসানো রয়েছে। জলাশয়টি শুধু যে পরিবেশ সংরক্ষক ছিল তা নয়, ওই অঞ্চলে যে বাড়ি, অফিস, স্কুল আছে, সেখানে আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রয়োজনে জলেরও জোগান দিতে পারত। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সুমিতা ঘোষ , কলকাতা-৮৪
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy