রেহানা খাতুন।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশিত ‘মা: রেহানা খাতুন, বয়স ২৮, কোলে ২০ দিনের সন্তান, নয়াদিল্লিতে সোমবার রাতে সিএএ-বিক্ষোভে ঠায় বসে...’ (৩১-১২)— এই ক্যাপশনে ছবি দেখে বিস্মিত হলাম। ইনি কেমন মা? সিএএ-র বিরুদ্ধে রেহানা খাতুন প্রতিবাদ করতেই পারেন। কিন্তু ২০ দিনের শিশুসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে কেন? শিশুকে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে রেখে কষ্ট দিয়ে মা তো তাঁর মাতৃত্বকেই অপমান করলেন। এক বারও তিনি সন্তানের শরীরের কতটা ক্ষতি হতে পারে, সে কথা চিন্তা করলেন না। এই প্রতিবাদকে তীব্র আকার দিতে তিনি যে পথ অবলম্বন করলেন সেটাই তো প্রতিবাদযোগ্য।
সত্যকিঙ্কর প্রতিহার
যমুনা দেশড়া, বাঁকুড়া
মান্যতা দিলেন?
মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, কারও নাগরিকত্ব কাড়া হবে না। কিন্তু তাঁরই এক প্রতিমন্ত্রী বিরক্ত হয়ে এক মুসলিম নামধারী মানুষকে এ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবেন বলেছেন। শুধু নামটি জেনেই উনি কী ভাবে বুঝে গেলেন, সেই মানুষটির নাগরিকত্ব নেই? না কি যে-বিভাজনের জন্য নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতা চলছে সারা দেশ জুড়ে, তাকেই মান্যতা দিলেন এই প্রতিমন্ত্রী? মানুষের মনে বিরোধীরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলে শাসক বা শাসক দলের যে দাবি, সেই দাবি তা হলে নস্যাৎ হয়ে গেল।
নরেন্দ্রনাথ কুলে
কলকাতা-৩৪
হুমকির রাজনীতি
দিলীপ ঘোষের বাণী, ‘‘যে সরকার পাকিস্তানের বদমাইশি বন্ধ করার জন্য এয়ার স্ট্রাইক, সার্জিকাল স্ট্রাইক করতে পারে, তার আমলে ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত। না হলে অসম, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটকে যেমন বিরোধীদের লাশ গুনতে হচ্ছে, তেমন সারা দেশে গুনতে হবে’’ (‘ফের শাসানি,...’, ৩১-১২) পড়ে চমকে উঠলাম। ইনি একটি রাজনৈতিক দলের রাজ্য সভাপতি!
‘যোগী’ মুখ্যমন্ত্রীর ‘বদলা’য় এত জন মানুষের মৃত্যুতে সারা দেশ যখন শিউরে উঠছে, প্রবল ঠান্ডায় সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে বিক্ষোভ জানাতে আসা মায়ের ছবি দেখে দেশের মানুষ যখন লজ্জায় মাথা নিচু করছেন, তখনও অবলীলায় লাশ গোনার হুমকি দিয়ে চলেছেন ইনি! সংবেদনশীলতার অভাব কতখানি হলে এমন মন্তব্য করা যায়, ভেবে থই পাওয়া যায় না।
আসলে বিজেপি দলটির মতাদর্শই এমন। এদের চিন্তার ধারাটি ‘পাকিস্তান’, ‘মুসলমান’, ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’, ‘বদলা’, ‘লাশ গোনা’— এ সব শব্দের মাঝেই ঘুরপাক খায়। দলীয় কর্মশালায় কর্মীদের বিজেপি-রাজনীতির এই অসংবেদনশীলতা, হুমকি আর দাপটের পাঠ দিতেই দিলীপবাবু ও-কথা বলেছেন। নিজেদের অপকর্মে দেশজোড়া মানুষের ধিক্কারেও চুপ করবার পাত্র এঁরা নন।
শ্রীরূপা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা-৪
কলরব
এখন চারিদিকে কলরব, আমরা সবাই নাগরিক। হোক কলরব। সত্যি, আমরা সবাই নাগরিক, কোনও ধর্ম বর্ণের বিচার নেই। তার সঙ্গে এটাও সত্যি, যদি আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক হই, তবে আমাদের নাগরিক অধিকারও সমান হোক সমস্ত নাগরিকের জন্য। এক আইন হোক। সেখানে ধর্ম বর্ণের গোঁজামিল চলবে না। আসুন কলরব তুলি, এক দেশের এক আইন চাই। কী, দাদা-দিদিরা, কলরব তুলবেন তো?
সুব্রত কুমার দে
কলকাতা-১২
বৈদ্য সম্পর্কে
প্রজিতবিহারী মুখোপাধ্যায়ের ‘জীবন মশায়’ (রবিবাসরীয়, ৩-১১) লেখার প্রেক্ষিতে প্রকাশিত জয় সেনগুপ্তের ‘বৈদ্য’ (১২-১২) শীর্ষক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্যের অবতারণার প্রয়োজন।
জয় সেনগুপ্ত বৈদ্যদের জাতি হিসেবে না দেখে, উচ্চ ব্রাহ্মণ হিসেবে দেখেছেন। কিন্তু প্রাচীন ভারতের সাহিত্য ও লেখমালা থেকে প্রাপ্ত তথ্যসূত্র থেকে প্রাপ্ত কায়স্থ জাতির ন্যায় বৈদ্যদের একটি পেশাভিত্তিক জাতি হিসেবে বিবর্তনের চিত্রটি প্রতিফলিত হয়, প্রকৃতপক্ষে এরা মূলত চিকিৎসা বৃত্তিকে অবলম্বন করে একটি পেশাভিত্তিক শ্রেণির অন্তর্গত ছিল এবং পরবর্তী কালে বিশেষত আদি মধ্যযুগীয় (৬০০-১২০০ খ্রি.) বাংলায় একটি পেশাভিত্তিক জাতিতে পরিণত হয়েছিল।
১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে বৈদ্য লেখক ভরত মল্লিকের লিখিত ‘চন্দ্রপ্রভা’তে বৈদ্য বা চিকিৎসকদের জাতি হিসেবে উল্লেখ করে তাঁদের প্রাচীন অম্বষ্ঠ জাতির সঙ্গে শনাক্ত করা হয়েছে। উশনসংহিতা এবং ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ (খ্রি. ত্রয়োদশ শতক) নামক উপপুরাণে বৈদ্য ও অম্বষ্ঠদের সমার্থক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহদ্ধর্মপুরাণ (খ্রি. চতুর্দশ শতক) নামক আরও একটি উপপুরাণে সংকর জাতির প্রসঙ্গে অশ্বিনের মাধ্যমে আয়ুর্বেদ সৃষ্টি এবং অম্বষ্ঠদের আয়ুর্বেদ প্রদান ও বৈদ্য নামকরণের সাক্ষ্য উপস্থিত (বৃহদ্ধর্মপুরাণ ৩.১৪.৪৪-৪৫), যদিও বৈদ্য ও অম্বষ্ঠদের এখানে সমার্থক হিসেবে দেখা হয়নি।
মনুস্মৃতিতে ব্রাহ্মণ পিতা ও বৈশ্য মাতার অনুলোম সংকর জাতি হিসেবে অম্বষ্ঠদের উল্লেখ করা হয়েছে (মনুস্মৃতি ১০. ৪৭ ও ৮), বৈদ্য হিসেবে নয়। এবং চিকিৎসাবৃত্তি অবলম্বনকারী এই অম্বষ্ঠরাই প্রাচীন বাংলার পেশাভিত্তিক বৈদ্য জাতি কি না, তা বিস্তৃত গবেষণার দাবি রাখে। পাশাপাশি স্মৃতিশাস্ত্রগুলির সংকর জাতিগুলির প্রতি মনোভাব ছিল নেতিবাচক এবং তাদেরকে কখনওই মূল চতুর্বর্ণের সঙ্গে এক সমীকরণে দেখা হয়নি।
প্রাচীন ভারতে কেবল ব্রাহ্মণেরা নন, তাঁদের পাশাপাশি অপর দুই বর্ণ ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যরাও আয়ুর্বেদ চর্চার অধিকারী ছিলেন, কারণ ব্রাহ্মণ ব্যতীত উক্ত অপর দুই বর্ণ দ্বিজ বর্ণ ছিলেন, অর্থাৎ এই দুই বর্ণেরও সকল বৈদিক শিক্ষাগ্রহণের অধিকার ছিল। বৈদিক শিক্ষার অধিকার ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের আয়ুবের্দ চর্চায় যোগ্য করে। এই অর্থে চিকিৎসক হওয়ার সক্ষমতা শুধু ব্রাহ্মণ নয়, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদেরও ছিল।
বৈদ্য জাতির মধ্যে ব্রাহ্মণ বর্ণের উপাদান যেমন— ঘোষ, গুপ্ত, দত্ত প্রভৃতি ব্রাহ্মণ পদবি প্রাচীন বাংলার লেখমালাসমূহে পাওয়া গেলেও, সেগুলি এখন ব্রাহ্মণ নয়, বরং কায়স্থ বা বৈদ্যদের পদবি।
অর্থাৎ বৈদ্য ব্রাহ্মণ বর্ণের সঙ্গে যুক্ত কোনও উপাধি নয়, বরং প্রাচীন ভারতের সঙ্ঘবদ্ধ স্বতন্ত্র এক পেশাভিত্তিক জাতি।
শুভজিৎ আওন
মাকড়দহ, হাওড়া
ভাষা উদ্যান
বেশ কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আব্দুল, বরকতদের স্মৃতির উদ্দেশে কলকাতার নিজস্ব ভাষা উদ্যান। আজ তা রীতিমতো সর্বজনীন শৌচালয়! অতীতের অসামান্য মানুষদের আমরা স্মরণ না-ই করতে পারি; কিন্তু তাঁদের অসম্মান করার অধিকার আছে কি? কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, অবিলম্বে সাইনবোর্ডটা সরানোর ব্যবস্থা করুন।
দেবাশিস মিত্র
কলকাতা-৭০
গড়ের অযত্ন
2 চন্দননগর ১৫ নং ওয়ার্ডের লালবাগান গোলাপবাগান ও বড়পুুকুরধার সংলগ্ন গড়টির অবস্থা দিনের পর দিন শোচনীয় হয়ে পড়ছে। গড়টি কোনও দিন পরিষ্কার করা হয় না। বর্যাকালে গড়টির দু’ধার উপচে নোংরা দূষিত জল বাড়ির মধ্যে ঢুকে যায়। তার সঙ্গে সাপ ব্যাঙ শামুক ও বিষাক্ত পোকামাকড়ও ঢুকে আসে। গড়টি বাঁধাবার জন্য জয়েন্ট পিটিশন দেওয়া হয়েছে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বহু বার কথাবার্তাও হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।
সমর নাথ ভড়
চন্দননগর, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy