—প্রতীকী চিত্র।
“‘অবৈধ’ পার্কিংয়ে ভরেছে বিধাননগর, প্রশ্ন পুরসভার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে” (২৭-১২) খবরের পরিপ্রেক্ষিতে বিধাননগর নিবাসী হিসাবে কিছু কথা। ভারত তো বটেই, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে পরিকল্পিত নগর হিসাবে বিধাননগর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। বিধাননগরের গোড়াপত্তনে এক দিকে যেমন রয়েছে বাঙালি উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন ভাবনা, আর এক দিকে রয়েছে আধুনিক ভবিষ্যৎ-মুখী নগরচিন্তার ছাপ। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে, বিশেষ করে পুরসভা থেকে পুরনিগমে উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে লাগামহীন দিকশূন্যহীন পরিবর্তন হয়ে চলেছে বিধাননগরে। প্রতি রাস্তায় এখন ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে বিপজ্জনক ভাবে। বেশির ভাগ রাস্তা ভাঙাচোরা। মাঝেমধ্যেই সেখানে দু’চাকার যানে দুর্ঘটনা ঘটে। নিত্যনতুন জায়গায় এক শ্রেণির বহিরাগতরা অবৈধ পার্কিং আদায় করছে। লক্ষণীয়, বিধাননগরে একাধিক হাসপাতালের বাইরে রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের জন্য কোনও ট্যাক্সি কাউন্টার না থাকলেও, পার্কিং আদায়কারী দল সর্বদা হাজির। রাস্তার ধারে পুরনো বসতবাড়ি হঠাৎ বিশাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে অজানা নিয়মের মাধ্যমে। বিভিন্ন ব্লকে ঘুরে দেখলে দেখা যাচ্ছে যে, পুরনো বাড়ি ভেঙে কিছু সামঞ্জস্যহীন বিশালাকার স্থাপত্যের নির্মাণ চলছে। এ ছাড়া কিছু সরকারি জমিতে দীর্ঘকালীন ভাবে বেআইনি ঝুপড়ি গড়ে উঠেছে এবং সেখানে এক শ্রেণির মদতে ধর্মীয় উপাসনালয় পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে। বাগুইআটি-রাজারহাটের মানুষদের বিধাননগর পুরনিগম নিয়ে অভিযোগ ইতিমধ্যে সর্বজনবিদিত। সর্বোপরি জনবিন্যাস এবং নগর চরিত্রের এক নিয়ন্ত্রণহীন রূপ বিধাননগরে প্রকট।
তথ্যপ্রযুক্তির তালুক, আন্তর্জাতিক বইমেলার প্রাঙ্গণ, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন— এ রকম একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানের অবস্থান বিধাননগরে। ফলে, আগামী দিনে এই রাজ্যের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিধাননগর এক অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। তার জন্য বর্তমান শাসকশ্রেণির কর্তব্য স্বল্পমেয়াদি লাভকে অগ্রাহ্য করে দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিধাননগরকে পরিচালনা করা। ভারতের নগরোন্নয়নের ক্ষেত্রেও ডক্টর বিধান চন্দ্র রায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত বিধাননগর একটি অগ্রগণ্য উদাহরণ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যতম দায়িত্ব বিধাননগরের মর্যাদা এবং সৃজনশীলতাকে বজায় রাখা।
স্নেহাশীষ মিত্র, কলকাতা-৯
নালার দুরবস্থা
আমি দক্ষিণ দমদম পুরসভার অন্তর্গত ২৫ নম্বর ওয়র্ডের বাসিন্দা এবং এক জন প্রবীণ নাগরিক। পুরসভার দীর্ঘ দিনের একটি অমীমাংসিত সমস্যার বিষয়ে আমার এই পত্র। এই ওয়র্ডটির যে প্রধান নিকাশি নালাটি আছে, তার ঠিক উত্তর পাড়ে দমদম পুরসভা ও দক্ষিণ পাড়ে দক্ষিণ দমদম পুরসভা অবস্থিত। সমস্ত ছোট ছোট নিকাশি নালা এই প্রধান নিকাশি নালাটিতে এসে পড়েছে। নালাটি শুরু হয়েছে দমদম পুরসভার অন্তর্গত আইএলএস হাসপাতাল লাগোয়া বাঁ-দিক থেকে এবং পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে শেষে ক্যান্টনমেন্ট খালে এসে মিশেছে। আইএলএস হাসপাতালের সমস্ত নিকাশি জল এই নালাটিই বহন করে। আনুমানিক প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা ও চওড়ায় চার ফুটের নালাটি কোন পুরসভার তত্ত্বাবধানে আছে, তা দু’টি পুরসভার ইতিহাসে আজও ঠিক করা হয়ে উঠল না।
আশ্চর্যের বিষয় হল, এই প্রধান নিকাশি নালাটির দু’পাশেই বহুতল তৈরির নকশা দু’টি পুরসভাই অনুমোদন করে চলেছে। বহু বছর আগে নির্মিত নালাটি বর্তমানে কতখানি জল বহন করার ক্ষমতা রাখে, তা পরিমাপ না করেই ক্রমশ বহুতল গড়ে ওঠায় সমস্যা জটিল আকার ধারণ করেছে। কারণ, নালাটির রক্ষণাবেক্ষণ, অর্থাৎ এর সংস্কার, উন্নয়ন ও পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে দু’টি পুরসভাই উদাসীন। দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়া এবং অনিয়মিত পরিষ্কারের ফলে জল বহন করার ক্ষমতা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বেশির ভাগ জায়গায় গার্ডওয়াল ভেঙে পড়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই নালাটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। দু’পাশের একতলা বাড়িতে জল ঢুকে বাসিন্দাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তোলে।
এর সঙ্গে রয়েছে অন্য সমস্যাও। বাড়ির সামনে দিয়ে পুরসভার যে প্রধান রাস্তা গিয়েছে, বছরের পর বছর ধরে সেই রাস্তার সংস্কারের নাম করে রাস্তার আগেকার আস্তরণ না তুলেই নতুন করে স্টোন চিপস ও পিচ ফেলে ঢালাই হওয়ায়, রাস্তা ক্রমশ উঁচু হয়ে উঠেছে।ফলে পুরনো সব বাড়িই রাস্তা থেকে এখন প্রায় দু’ফুটের বেশি নীচে অবস্থান করছে। রাস্তার পাশে জল নিকাশি কোনও নর্দমা না থাকায়, বৃষ্টির জল রাস্তা থেকে নিচু বাড়িগুলোতে ঢুকছে।
২০২১ সালের অগস্ট মাসে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পে ও কিছু দিন আগে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-র হেল্পলাইন নম্বরে জানিয়েছিলাম। কয়েক দিন আগে দক্ষিণ দমদম পুরসভার এই বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন কর্মী আমার বাড়িতে এসে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাঁদের যথাসম্ভব বুঝিয়েছি। কিন্তু পরিস্থিতি যা, তাতে শেষ পর্যন্ত কোনও কাজ হবে বলে মনে হয় না। দুয়ারে সরকার-এ জানানোর দেড় বছর পরে যেখানে সরকারি আধিকারিকরা সমস্যার খোঁজ নিতে এলেন, সেখানে এই নালার দ্রুত সংস্কার হওয়ার আশা দুরাশা মাত্র। তৎসত্ত্বেও প্রশাসনের কাছে পুনরায় আবেদন, নালাটির দ্রুত সংস্কার করা হোক, যাতে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পান।
সমীর দত্ত, কলকাতা-২৮
হাঁটতে দিন
রাজডাঙা মেন রোড, যার এখন নাম হয়েছে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ কানেক্টর, তার উত্তর পাশে একটা বৃহৎ সবুজ গালিচা ছিল। মর্নিং ওয়াক, খেলাধুলো, অল্পবয়সিদের সমাগমের পীঠস্থান ছিল সেটি। নাম ছিল রাজডাঙা সমন্বয় সঙ্ঘের মাঠ। এক দিন শাসকের শ্যেন দৃষ্টি পড়ল এই দিকে। পূর্বতন সরকার মাঠটিকে পুঁজিবাদীর হাতে বেচে দিল। মাঠে গড়ে উঠল একটি বৃহৎ মল। মাঠের সামান্য অবশিষ্ট অংশ ঢেকে দেওয়া হল কংক্রিটে। কলকাতার ‘হার্টল্যান্ড’-এ এই ভাবে একটা অক্সিজেনের উৎস দিনেদুপুরে চুরি হয়ে গেল।
মূল মাঠের এক-দশমাংশ এখন পাঁচিল ও স্টেডিয়াম ঘেরাটোপে বন্দি। মাঠের এই সামান্য সবুজ অংশটি সারা বছরের প্রায় প্রত্যেক দিন স্কুল-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হয়। ফাঁকে পড়ে যান এলাকার কয়েক জন ষাটোর্ধ্ব মানুষ। এই প্রবীণ নাগরিকরা যদি পুরনো অভ্যাসবশে সকালে মাঠে পায়চারি করতে আসেন, তা হলে ওখানকার প্রাইভেট সিকিয়োরিটিরা তাঁদের বার করে দেন। এলাকার সমস্ত প্রবীণ নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন, সকালে মাঠে আমাদের অন্তত কিছু ক্ষণ পায়চারি করতে দেওয়া হোক। বিনা-পয়সায় নয়, অর্থের বিনিময়েই। পুরনো অভ্যাস সহজে ভোলার নয়।
ভাস্কর ঘোষ, কলকাতা-১০৭
পরিষেবা বৃদ্ধি
জোকা-তারাতালা মেট্রো আজ এক বছর হল চালু হয়েও যেন মেলার টয় ট্রেনে পর্যবসিত হয়েছে। সপ্তাহে সোম থেকে শুক্র যা শুরু হয় সকাল ৮-৫৫ মিনিটে ও শেষ হয় বিকেল ৪-৩৫’এ। সপ্তাহান্তে, সরকারি ছুটির দিনে কোনও পরিষেবা মেলে না। সারা দিনে যাত্রী-সংখ্যা হাজার ছাড়ায় কি না, সন্দেহ।
অপর দিকে অটোর রুট কাটার দৌরাত্ম্য, অফিস টাইমে তারাতলা না যাওয়ার স্বেচ্ছাচারিতা একই ভাবে চলছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, একটু পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি আপ সার্ভিস ন’টার পরিবর্তে সাতটায় এবং ডাউন-এর সার্ভিস ৪টে ৩৫-এর পরিবর্তে রাত ন’টায় করা হয়, তা হলে যাত্রীদেরও সুবিধা হয় আর মেট্রোরও আয় বাড়ে।
দিলীপ কুমার মুখোপাধ্যায়, কলকাতা-৬৩
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy