‘হিন্দি আধিপত্যের বিরোধী: স্ট্যালিন’ (৩০-১) শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। তামিল ভাষার জন্য লড়াই করতে গিয়ে যে ৭৩ জন তামিল প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁদের সম্মান জানাতে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন অভিযোগ করে বলেন, যাঁরা জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চান তাঁদের জানা উচিত, এটা আধিপত্যবাদের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দি, হিন্দু, হিন্দুস্থান কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। কেবলমাত্র হিন্দি ভাষাভাষীদের স্বার্থকে সর্বত্র অগ্রাধিকার দেওয়া হলে অন্য ভাষার মানুষদের কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখার অভিপ্রায় বোঝায়। এক জনের মাতৃভাষার উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া কিছুতেই মানা যায় না। হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা বলে প্রচার করে পরোক্ষে এই কাজ করা হচ্ছে। অথচ, সংবিধান অনুযায়ী হিন্দি রাষ্ট্রভাষা নয়, ভারতে কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই।
মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন দাবি করেন, সব ভাষার সমান অধিকার থাকলেও কেবলমাত্র হিন্দিকে কেন্দ্রের সরকারি ভাষা করা হয়েছে। তাই তামিল ভাষাকেও কেন্দ্রের সরকারি ভাষা করতে হবে। তামিল রাজ্যে সব ভাষার সংখ্যালঘুদের তামিল ভাষা শেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আইন পাশ করে। কর্নাটক এবং মহারাষ্ট্রও সব ভাষার সংখ্যালঘুর প্রতি এই একই ব্যবস্থা নিয়েছে। তামিল ভাষা হিন্দির আগ্রাসন থেকে সহস্রগুণ নিরাপদে আছে বাংলা ভাষার তুলনায়। তা সত্ত্বেও তামিল রাজ্য তামিল ভাষাকে রক্ষা করার জন্য অবিরাম লড়াই করে চলেছে।
বাংলা ভাষা চারিদিক থেকে আক্রান্ত ও বিপন্ন— এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই। তবুও পশ্চিমবঙ্গের কোনও দল ও সরকার আজ পর্যন্ত বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেনি। বাংলা ভাষা, বাঙালি জাতি ও পশ্চিমবঙ্গের অখণ্ডতা রক্ষা করাই সব দল ও সরকারের মুখ্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হওয়া উচিত।
মুকুন্দ মজুমদার
কলকাতা-৬৪
কল্লোলিনী
‘সাগরসঙ্গমে ভিড়সমাগমে’ (১৪-১) প্রবন্ধে খুব সন্তর্পণে গঙ্গাকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন গৌতম চক্রবর্তী। তার জন্য বহুল ভাবে জানা কিছু পৌরাণিক গল্প ও উপাখ্যানের খণ্ডচিত্রও তিনি তুলে ধরেছেন। তাতে অবশ্য ভারত বা বাঙালির সংখ্যাগরিষ্ঠ জনমানসে গঙ্গা সম্পর্কে পুরনো ধর্মীয় পবিত্রতার ধারণা প্রভাবিত হবে বলে আমার মনে হয় না। প্রবন্ধকারের প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েও বলতে পারি, শিশুবয়স থেকে গঙ্গা নিয়ে যে ধর্মীয় সামাজিকীকরণের বাতাবরণ ভারতীয় চিন্তায় ও মননে গ্রথিত, তাকে সরানো প্রায় অসম্ভব বলে মনে হয়। অ্যালিস অ্যালবিনিয়া-র লেখা গ্রন্থ এম্পায়ারস অব দ্য ইন্ডাস-এর সঙ্গে তার তুলনা চলে। তাই বহু দিন ধরে সব ধরনের রাজনৈতিক দল বিভিন্ন সময়ে তার সুযোগ নিয়ে চলেছে ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’ (গ্যাপ) বা ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে। তাতে গঙ্গায় পলি পড়া কমেছে বলে শুনিনি। গঙ্গাকে ঘিরে আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টেছে বলেও জানি না। ফেব্রুয়ারিতে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনের মুখে গঙ্গা আবার রাজনৈতিক পণ্য হয়ে উঠেছে। গত বছর উত্তরপ্রদেশের গঙ্গায় হাজার হাজার লাশ ভেসে এসেছিল। এই ঘা মনের মধ্যে দগদগে হয়ে রয়েছে।
নির্মাল্য মুখোপাধ্যায়
কলকাতা-২৬
বিলুপ্তির পথে
বাঘরোল বা মেছোবিড়াল হল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপ্রাণী। কিন্তু, এই বিরল প্রাণীটি আজ কেবল ভারত নয়, বিশ্ব জুড়েই বিপন্ন। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ, কৃষিখেতকে বাস্তুজমিতে রূপান্তর, বনভূমির পরিমাণ সঙ্কোচন এবং জলাভূমি হ্রাস পাওয়ার মতো বিষয়গুলিকে এই অবলুপ্তির নেপথ্যে অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা যায়। ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজ়ারভেশন অব নেচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস’-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পৃথিবীতে এই মুহূর্তে বাঘরোলের সংখ্যা সাকুল্যে হাজার তিনেক। ভারত, তাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ-সহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে এদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ রাজ্যে হাওড়ায় এদের বসবাসের ঘনত্ব সর্বাধিক। অন্যতম কারণ, খাদ্য-সংস্থান ও নিরাপদ বাসস্থানের উপযুক্ত পরিবেশ। যেমন— জলাভূমি, হোগলা বন, পানের বরজ, খড়িগাছের বাগান প্রভৃতি অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় গ্ৰামীণ হাওড়ায় বেশি।
বাঘরোল নিয়ে জনসমাজে প্রচলিত রয়েছে কিছু ভ্রান্ত ধারণা। যার জেরে, ‘বাঘ ভ্রমে’ অনেকে প্রায়ই নির্বিচারে হত্যা করেন এই অ-হিংস্র বন্য বিড়াল প্রজাতিটিকে। এরা কেবল মাছই শিকার করে না, খেতের বড় বড় ইঁদুর খেয়ে পরোক্ষে কৃষি ও কৃষক— উভয়ের উপকার করে। কিন্তু, অতি মাত্রায় বিপন্ন এই প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে সরকার যদি অবিলম্বে কোনও সুষ্ঠু ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্ৰহণে উদ্যোগী না হয়, তবে পৃথিবী থেকে এদের বিলুপ্তি শুধু সময়ের অপেক্ষা।
দীনদয়াল বসু
নারিকেলবাড়, হাওড়া
বন্ধ হোক
বীরভূমের নানুরে কবি চণ্ডীদাসের স্মৃতি বিজড়িত স্থান তথা চণ্ডীদাসের ভিটেতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ খোঁড়াখুঁড়ি করে তাম্রপ্রস্তর এবং বেশ কিছু মধ্যযুগের সাংস্কৃতিক নিদর্শন উদ্ধার করেছিল। আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র কলকাতা সার্কেলের পক্ষ থেকে পরবর্তী কালে রেলিং দিয়ে ঘিরে স্থানটি দেখভালের জন্য কয়েক জন লোক রাখা হয়। জায়গাটির প্রবেশপথে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে ওই স্থান সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়া আছে। সঙ্গে বলা আছে, জায়গাটির কেউ ক্ষতি করতে চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে। জায়গাটায় রয়েছে চণ্ডীদাসের ঢিবি, পাশের পনেরোটি শিবমন্দির, একটি বিশালাক্ষী মন্দির ও একটি চণ্ডীমণ্ডপ। অভিযোগ, আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশালাক্ষী মন্দিরের সামনে, তথা কয়েকটি শিবমন্দিরের মাঝখানের স্থানটিকে এলাকার কয়েক জন প্রভাবশালী মানুষ বিয়ে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দিচ্ছেন। অবিলম্বে এ বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি।
মেহের সেখ
মহুগ্রাম, বীরভূম
বেআইনি
১ ফেব্রুয়ারি আমরা তিন জন ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে হাওড়া- মালদহগামী ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ধরতে আসি। কিন্তু টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী জানান, ‘রিজ়ার্ভেশন ফুল’। আমরা কাকুতিমিনতি করে জঙ্গিপুর রোড পর্যন্ত ১৩৫ টাকা জনপ্রতি দিয়ে টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে গেলে ‘ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’ ব্যাজ পরা দুই ব্যক্তি আমাদের টিকিট দেখে ট্রেন থেকে নেমে যেতে বলেন। আমরা নামতে উদ্যত হলে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দু’জন দালাল বলেন, জনপিছু ৪০০ টাকা দিলে ব্যবস্থা হয়ে যাবে। কর্তব্যরত টিকিট পরীক্ষক দালালদের সঙ্গেই রফা করে নিতে বলেন। বাধ্য হয়ে ১২০০ টাকা দিয়ে কামরায় বসার অনুমতি পাই। এই বেআইনি লেনদেন রেল দফতরের কর্তাদের সামনে কী ভাবে দিনের পর দিন চলছে?
গৌতম সিংহ রায়
মিঠিপুর, মুর্শিদাবাদ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy