সঙ্গীতশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় একটি বাংলা ছবি পরিচালনা করেছিলেন ৫০ বছর আগে। ছবিটি নাম অনিন্দিতা, মুক্তি পায় ১৪ এপ্রিল ১৯৭২, রাধা, পূর্ণ ও অরুণা প্রেক্ষাগৃহে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়েরই প্রযোজনায় ‘গীতাঞ্জলি’ ব্যানারের এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, মৃণাল মুখোপাধ্যায়, গীতা দে, দীপ্তি রায়, অনুভা গুপ্ত, সুলতা চৌধুরী প্রমুখ। আশাপূর্ণা দেবীর কাহিনি অবলম্বনে চিত্রনাট্য লিখেছিলেন দ্বারিকানাথ মুখোপাধ্যায়। ছবির নায়িকা ভারতী (মৌসুমি) অনাথ, শহরে এক দূরসম্পর্কের দাদার আশ্রয়ে থাকে। সংসারের সব কাজ করেও বৌদির (সুলতা) লাঞ্ছনা সহ্য করে। পরিচিত লতিকাবৌদির (অনুভা) খুব ইচ্ছে তাঁর ঠাকুরপো বিরামের (শুভেন্দু) সঙ্গে ভারতীর বিয়ে হোক। শেষ অবধি অন্যত্র বিয়ে হয় ভারতীর। কিন্তু ঘটনাচক্রে বিরাম ফিরে আসে তার জীবনে। পালিয়ে গিয়ে বিয়ের কথা ভাবলেও, শেষ পর্যন্ত স্বামীর অসুস্থতার জন্য ছেড়ে যেতে পারে না ভারতী। বন্ধুত্বের স্বীকৃতি নিয়ে বিরাম চলে যায়। ছবিটি জনপ্রিয় হয়েছিল যেমন কাহিনির জন্য, তেমনই সঙ্গীতের জন্যও। সঙ্গীত পরিচালকও ছিলেন হেমন্ত। লতা মঙ্গেশকর গেয়েছিলেন ‘ওরে মন পাখি কেন ডাকাডাকি’, কিশোর কুমার গেয়েছিলেন ‘ওগো নিরুপমা করিয়ো ক্ষমা’। প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় ও লতা মঙ্গেশকর পৃথক ভাবে গেয়েছিলেন প্রচলিত ভক্তিগীতি, ‘কেমনে তরিব তারা ভাবি তাই দিনরজনী’।
এই ছবিতেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গেয়েছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে ঘোমটা পরা ওই ছায়া’। তিনি পঙ্কজকুমার মল্লিকের অনুমতি নিয়েই কাজ করেছিলেন, ছবির টাইটেল কার্ডে নাম-সহ কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয়েছিল। যদিও গানে ‘সাঁঝের বেলা ভাঁটার স্রোতে’ স্তবকটিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নিজে সুরারোপ করেছিলেন।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস
কলকাতা-১০৫
নীরব দর্শক
হাওড়া জেলার জগদীশপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতে ২০০৩ সাল থেকে টানা ১৮ বছর তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান গোবিন্দ হাজরার সামান্য দুধ ও মুড়ির ফেরিওয়ালা থেকে কয়েকশো কোটি টাকার মালিক হওয়ার প্রতিবেদন দুই কিস্তিতে প্রকাশিত হয়েছে (‘প্রধানের মুকুট দুধ বিক্রেতা হলেন কোটিপতি’, ২৩-৬; ও “গুন্ডাবাহিনী গড়ে সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন ‘রাহু’”, ২৪-৬)। বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তাঁর বিজেপিতে যোগদান ও বর্তমানে তিনি বিজেপি নেতা। এখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং তাঁর বিপুল উত্থান তদন্তকারীদের বিস্মিত করেছে। অবাক লাগছে এটা ভেবে যে, তাঁরা এই দীর্ঘ ১৮ বছরে কিছু টের পাননি? এর আগে তাঁর নামে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে, অনেকে আবার অভিযোগ জানাতে সাহস করেননি। যাঁরা দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তাঁদের কপালে মার ও ভোগান্তি জুটেছে। অনেকে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এখন বিজেপি করার অপরাধে পুলিশ তদন্ত শুরু করছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ-প্রশাসন শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনে চলে। পুলিশ বিভাগের সংস্কার তো দূর অস্ত্, চাকরির ভবিষ্যৎও শাসক দলের হাতে। তাই নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। অনেক প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র শাসক দল করার সুবাদে অনেক গোবিন্দ হাজরা আগেও পার পেয়ে গিয়েছেন, হয়তো ভবিষ্যতেও পার পেয়ে যাবেন।
জহর সাহা
কলকাতা-৫৫
আশার আলো
‘অভাবে বন্ধ অনলাইন ক্লাস, স্মার্টফোন কিনে দিচ্ছেন শিক্ষিকারা’ (১৮-৬) শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। হাওড়ার যোগেশচন্দ্র গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকারা মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে সমাজে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। স্কুলের পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ১৯ জন ছাত্রীকে স্মার্টফোন কিনে দিলেন এবং ৩৩ জনের মোবাইল রিচার্জ করানোর ব্যবস্থা করলেন। আপন আপন সুখের বৃত্ত রচনায় ব্যস্ত সমাজে ওই স্কুল শিক্ষিকাদের এই মানসিকতায় আগামী প্রজন্মও উদ্বুদ্ধ হবে। বর্তমান সময়ে সমাজের সবটুকু জুড়ে যে হতাশার অন্ধকার নয়, তা দেখিয়ে দিলেন তাঁরা।
সঞ্জয় রায়
দানেশ শেখ লেন, হাওড়া
আর বাকিরা?
যে সব শিশুর বয়স ১২ বছর বা তার কম, তাদের মায়েরা টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন বলে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন (‘শিশুরক্ষায় মাকে টিকা’, ২৪-৬)। তা হলে তো বাদ থেকে গেলেন যাঁদের সন্তানের বয়স বারো বছরের উপরে, সেই মায়েরা। তাঁরা কবে টিকা পাবেন, সেটা কে বলবে? ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে যে, তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী, এবং সেটা আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে। টিকাকরণ ছাড়া অন্য রাস্তা নেই। যদিও টিকা নিয়ে যা দুর্নীতি চলছে, তাতে কে যে আসল টিকা পাচ্ছেন, আর কে নকল টিকা, সেটা বোঝার চেষ্টা বৃথা।
ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য
চুঁচুড়া, হুগলি
সর্ষের মধ্যে ভূত
লোকালয়ে শিবির করে, দিনের পর দিন পুরসভা, প্রশাসনকে এড়িয়ে ভুয়ো ভ্যাকসিন প্রদানের দায় কার? সাংসদ-অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রতিষেধক প্রতারণা না হলে হয়তো এই বিষয়ে কিছুই জানা যেত না। মানুষের জীবন নিয়ে এ ভাবে খেলা করার অধিকার তাদের কে দিল? দেবাঞ্জন দেব-সহ, যারা এই কাণ্ডে জড়িত, তাদের কঠোর শাস্তি চাই। কিন্তু প্রশ্ন হল, সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকলে, তাকে কে তাড়াবে?
শিবপদ চক্রবর্তী
কাঁচরাপাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা
বয়স্কদের টিকা
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান ফিরহাদ হাকিম মহাশয় সম্প্রতি ডাক্তারের অপ্রতুলতার কারণে পুরসভার পক্ষে বাড়ি গিয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের করোনা টিকাকরণ এখনই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তি, শয্যাশায়ী ও দুরারোগ্য রোগী, প্রতিবন্ধীরা টিকাকরণ কেন্দ্রে পৌঁছতে পারছেন না। এই অবস্থায় এই ব্যক্তিদের স্বার্থে বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে এই দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় কি না, সরকারের এখনই গুরুত্ব-সহকারে ভেবে দেখা দরকার।
তারক নাথ ঘোষ
কলকাতা-৩
করদাতার ছবি
‘কেবলই ছবি’ (৭-৬) সম্পাদকীয় প্রসঙ্গে কিছু কথা। অফিস থেকে এক বার একটা টি-শার্ট দেওয়া হয়েছিল। তাতে কোম্পানির নাম বড়-বড় করে লেখা ছিল। আমিও মহানন্দে গায়ে চাপিয়ে ঘুরেছি। কারণ অফিস তার টাকায় আমাকে সেটা কিনে দিয়েছে। তাই সেই নাম বহন করেছি আনন্দে। কিন্তু, কোভিড শংসাপত্রে আমার ছবি থাকবে না কেন? আমি প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক। কখনও সকাল ছ’টায়, কখনও বিকেল পাঁচটায় কো-উইন ওয়েবসাইটে লগ-ইন করেছি। হাঁ করে বসে থেকেছি কখন দেখব সেখানে ছিটেফোঁটা সবুজ রং। তার পর যে দিনই স্লট পেয়েছি বুক করেছি। নির্ধারিত দিনে নিজের পয়সা খরচ করে টিকা নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। কিন্তু তাতেও আমার ছবি শংসাপত্রে দেওয়া হল না।
আমি প্রতি বছর নিয়মমাফিক কর দিয়ে থাকি। তা হলে কেন আমার ছবি থাকবে না? বিনা পয়সায় পেলেও তো এই টাকা আমাদের করের টাকা। তা হলে করদাতার ছবি সেখানে থাকা উচিত।
সুমন চক্রবর্তী
কলকাতা-৬৫
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy