—ফাইল চিত্র।
দেবাশিস ভট্টাচার্যের ‘কী আছে শেষে...’ (২-১১) প্রবন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এই পত্র। এখন আমাদের রাজ্য যেন সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কবলে। বাম আমলে খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, স্বয়ং খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘সিন্ডিকেট’ তৈরি করে চাল পাচারের চক্র চালানোর যে অভিযোগ ইডি আদালতে করেছে, তা কিন্তু ছিল না। ইডি-র তদন্তে খাদ্য দফতরে যে বিপুল দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে, তা রাজনৈতিক মদত ছাড়া সংগঠিত করা সম্ভব নয়। একটার পর একটা দফতরের দুর্নীতি দেখতে দেখতে রাজ্যের কিছু মানুষ হয়তো মনে করছেন, দুর্নীতিটা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম, এটা দোষের কিছু নয়।
সরকারি চাকরি, বা কোনও সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পেতে গেলে কিছু ‘দিতে হবে’— এই মানসিকতাটা রাজ্যের কিছু মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে। সেই জন্যই দোকান খুলে চাকরি বিক্রি করতে পারছেন শাসক-ঘনিষ্ঠরা। রাজ্যের দুর্নীতির বেশির ভাগ তদন্তই মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশেই হচ্ছে। তা সত্ত্বেও শাসক দলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা ঠিক যে, বিরোধী দল পরিচালিত সরকারের রাজ্যগুলির নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে প্রতি দিন যত দুর্নীতির রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে, তার সবই কি রাজনৈতিক চক্রান্ত? সবই কি রাজ্য সরকারকে কালিমালিপ্ত করার প্রচেষ্টা? সেই কারণেই রাজ্যের মানুষ আজ উদ্বেগের সঙ্গে দেখার অপেক্ষায় আছে, কী পরিণাম হয় কেন্দ্রের তদন্তের।
শেষাদ্রি বন্দ্যোপাধ্যায়, ভদ্রেশ্বর, হুগলি
অতীতের ঢাল
বিজেপি-বিরোধী রাজ্যগুলির সরকার ও শাসক দলের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয়তার পিছনে একটা চতুর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে, সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু অভিযোগ আছে বলেই তো নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে, কেউ কেউ জেল হেফাজতেও দিন কাটাচ্ছেন। দেবাশিস ভট্টাচার্য যথার্থই বলেছেন, এই রাজ্যে দুর্নীতির যে অভিযোগে তৃণমূলের লোকের সাজা হয়, সেই একই অভিযোগে বিজেপি নেতার কেশাগ্র স্পর্শ করা হয় না। এ কথা অবশ্য প্রতিটি বিরোধী দলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
তবে এই দুর্নীতি রাতারাতি হয়নি। দুর্নীতির ঘটনাগুলি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানতেন না, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এখন নিজেদের অপরাধকে আড়াল করা, কিংবা খাটো করার জন্য অতীত টেনে আনা, বা অপরের অপরাধকে ঢাল করা শুভবুদ্ধির পরিচায়ক নয়। আসন্ন কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়, কিংবা কোনও অলৌকিক ঘটনাই একমাত্র পারে রাজ্যের শাসক দলকে এই দুর্বিপাক থেকে উদ্ধার করতে।
অশোক দাশ, রিষড়া, হুগলি
রেশন রেউড়ি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী পাঁচ বছর বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করেছেন, তার জন্য দেশবাসী কৃতজ্ঞ। তবু বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে আসছে। বিনামূল্যে রেশন দিয়ে মানুষকে হয়তো সাময়িক ভাবে কিছু পাইয়ে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু অর্থনীতির উন্নয়ন কী ভাবে হবে? দেশে বেকারত্ব হুহু করে বাড়ছে। গরিবি দূর করতে গেলে প্রথমেই দরকার প্রত্যেকটা পরিবারের অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন। দেশের শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীরা কর্মহীনতায় ভুগছেন। এই পাইয়ে-দেওয়ার রাজনীতি দেশের মানুষকে যেন বর্জ্যে পরিণত করে। বিনামূল্যে রেশন হয়তো সাময়িক ভাবে পেটের জ্বালা নিবারণ করবে। তবে শুধু চাল এবং গমের উপর নির্ভর করেই একটি পরিবারের সারা মাস চলতে পারে না। তেল, লবণ থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক ১৪টি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসও দরকার।
শুধুমাত্র রামমন্দিরকে সামনে রেখে ধর্মীয় ভাবাবেগের স্রোতে ২০২৪-এর নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়া সম্ভব নয়। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, খালি পেটে ধর্ম হয় না। মহান পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের প্রান্তিক মানুষের উন্নতির স্বপ্ন তখনই সফল হবে, যখন দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের হবে কর্মসংস্থান।
কুন্তল পাল চক্রবর্তী, বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা
ভোটের টানে
‘দীপাবলির আগেই জ্বালানি তেলের দর কমানোর ভাবনা কেন্দ্রের’ (৬-১১) সংবাদটি পড়লাম। কেন্দ্রীয় সরকার ৮০ কোটি মানুষকে ফের আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণার পর জ্বালানি তেলের দাম কমানোর দিকে এগোচ্ছে। এটা কতটা জনগণের কষ্টের কথা বিবেচনা করে, আর কতটা আগামী ভোটবাক্সের কথা মনে রেখে, তা সচেতন নাগরিকমাত্রই জানেন। যে ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে কত কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাওয়ার যোগ্য, তা সরকারের ফের খতিয়ে দেখা উচিত। লক্ষ লক্ষ সচ্ছল পরিবার বিনামূল্যে রেশনের আওতায় ঢুকে পড়েছে। অথচ, প্রকৃত দরিদ্রদের অনেকেই এই সুবিধা পাচ্ছেন না। সচ্ছল পরিবার বিনামূল্যে চাল, গম তুলে খোলা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। দোকানে এবং গম ভাঙানো কলে খোঁজ করলেই এই সত্য জানা যাবে। তা ছাড়া পাঁচ বছর আগে যে পরিবার দরিদ্র ছিল, পাঁচ বছর পরে সেই পরিবার তো দরিদ্র না-ও থাকতে পারে। সরকার অযোগ্যদের বিনামূল্যে রেশন বন্ধ করলে শত শত কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
মানুষকে ভিক্ষা বা দয়া নয়, সরকারের উচিত প্রতিটি মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলে তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো।
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল, কোন্নগর, হুগলি
খাদ্যবঞ্চিত
‘ভুয়ো রেশন কার্ডে খাদ্য উঠছে, দাবি ডিলারদের’ (৪-১১) প্রসঙ্গে জানাই, রেশন কার্ড থাকা সত্ত্বেও অনেক বয়স্ক মানুষ আধার কার্ড সংক্রান্ত ঝামেলায় রেশন পাচ্ছেন না। আমার মায়ের বয়স ৯০-এর কাছাকাছি। হাতের ছাপ না আসায় মায়ের আধার কার্ড হয়নি। তাঁর রেশন বন্ধ হয়ে গেলে কোলাঘাট ব্লকে গিয়ে একটা ফর্ম পূরণ করে পরিবারের অন্য সদস্যদের ছাপ দিয়ে যাতে রেশন তোলা যায়, তার ব্যবস্থা করা হয়। রেশন চালুর কিছু দিন পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। আবার কোলাঘাট ব্লকে গেলে পঞ্চায়েত প্রধানের থেকে লাইফ সার্টিফিকেট জমা দিতে বলা হয়। সেই সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার পরও রেশন চালু হয়নি। প্রাপ্য রেশন পেতে বয়স্ক মানুষদের পরিবারের সদস্যদের কাজকর্ম ফেলে, গাড়ি ভাড়া দিয়ে কত বার বিডিও অফিসে ছুটতে হবে?
কৃষ্ণপদ ভৌমিক, পাঁশকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর
অনুরোধ
ভারত সরকার ঘোষণা করেছে, আরও পাঁচ বছর মানুষ ফ্রি রেশন পাবেন। অনুরোধ— যে পরিমাণ চাল-গম পশ্চিমবঙ্গের মানুষ রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে পান, সমপরিমাণ শস্য যেন ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে।
অনুপ কুমার তোকদার, কলকাতা-৫৯
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy