Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: নির্বোধ রাজনীতি

আরও কিছু বিষয়ের মধ্যে উষ্ণায়নকেও লোকসভায় আলোচনার একটা বিষয় হিসাবে প্রস্তাব তৈরি করেছিল দু’টি জাতীয় রাজনৈতিক দল। তাতে জোটের অন্য এক দলের গোঁসা হয়।

ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:৫১
Share
Save

পর পর দু’দিন পত্রিকার দু’টি প্রতিবেদনে (‘উষ্ণায়ন নোটিস কেন, তপ্ত তৃণমূল’, ১৬-১২; এবং সম্পাদকীয় ‘অনিশ্চিত’, ১৭-১২) আজকের পৃথিবীর প্রবলতম বিপদ উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে রাজনীতিকদের প্রাতিষ্ঠানিক অনাগ্রহের দৃষ্টান্তমূলক ছবি প্রকাশ পেল। সম্পাদকীয়তে যথার্থই লেখা হয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের বিপদ ঘাড়ের উপর এসে পড়লেও তার মোকাবিলা করতে রাজনীতি স্থবিরই থাকছে।

আরও কিছু বিষয়ের মধ্যে উষ্ণায়নকেও লোকসভায় আলোচনার একটা বিষয় হিসাবে প্রস্তাব তৈরি করেছিল দু’টি জাতীয় রাজনৈতিক দল। তাতে জোটের অন্য এক দলের গোঁসা হয়। প্রতিক্রিয়ায় তড়িঘড়ি প্রস্তাবকরা পশ্চাৎপদ হন ও দুঃখপ্রকাশ করে বলেন যে, ওই প্রস্তাবটা নাকি ভুলক্রমে অনুমোদিত হয়েছিল। এ ভাবে প্রস্তাবটি বানচাল না হলে লোকসভায় আলোচনা এবং তার থেকে জলবায়ু সঙ্কট প্রতিরোধে জনচেতনা তৈরি ও অর্থবরাদ্দের দাবির এক কার্যকর সুযোগ আসতে পারত। এ বার লক্ষ করা যাক, ইতিহাসের কোন সময়ে দাঁড়িয়ে প্রস্তাবটিকে হত্যা করা হল।

ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে গত তিন বছরে সুন্দরবনে ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই অঞ্চলের প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ রুজি-রোজগার ও বাসস্থান হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগ ‘হ্যাজ়ার্ড অ্যাটলাস’ প্রকাশ করে জানায়, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, পশ্চিমবঙ্গের তিন জেলা বাদে সর্বত্র অতিবৃষ্টিজনিত বন্যা— এই হতে চলেছে এই রাজ্যের ভবিষ্যৎ চিত্র। শহর কলকাতার প্রতি দিন উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ কঠিন বর্জ্যের মধ্যে সামান্য পরিমাণেরই প্রক্রিয়াকরণ হয় উদ্যোগ ও অর্থের অভাবে। বাকি চার হাজার টন থেকে দৈনিক উৎপাদিত মিথেন গ্যাস বাতাসে ঢুকছে। এই গ্যাস বিশ্ব-উষ্ণায়নের এক অতি শক্তিশালী ধ্বংসদূত। কৃষিক্ষেত্রে গ্রিনহাউস গ্যাস উদ্গিরণকারী ডিজ়েল থেকে মুক্ত করে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে পাম্প চালানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ৪৮০০০ কোটি টাকার পিএম কুসুম যোজনা হয়েছে। কিন্তু তাকে দ্রুত সফল করার উদ্যোগে ঘাটতি থাকছে। অথচ, শুধু উষ্ণায়ন রোধ করাই নয়, গ্রামে প্রচুর কর্মসংস্থানের উপায় আছে এই প্রকল্পের রূপায়ণে। একে গতিময় করার লক্ষ্যে লোকসভায় আলোচনা করার সুযোগ ছিল। কিন্তু যুক্তি দেওয়া হল, উষ্ণায়ন অনেক দূরের সমস্যা।

এমন উদাহরণ প্রচুর আছে, যা নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যাবে রাজনীতিকদের উপরোক্ত কাণ্ডটি কত অজ্ঞানতাপ্রসূত। ডোনাল্ড ট্রাম্প-ই শুধু কেন, ‘এজ অব স্টুপিড’ (‘এটাই কি নির্বোধের যুগ’, অতনু বিশ্বাস, ১-১১-২১)-এর রূপকার আমাদের চারিদিকে প্রচুর।

সুব্রত দাশগুপ্ত, কলকাতা-১৫৭

বিপন্ন উপকূল

‘উপকূলের ক্ষয় বঙ্গে সর্বাধিক’ (২৩-১২) সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আমার এই চিঠি। বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং তার ফলস্বরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলীয় ক্ষয় ভারত-সহ প্রায় সারা বিশ্বে পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রতি লোকসভায় পেশ করা কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতের সামগ্রিক উপকূলীয় অঞ্চলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয় সর্বাধিক ভাবে লক্ষ করা যায়। আমাদের রাজ্যের ৫৩৪.৩৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ উপকূলের মধ্যে ক্ষয়ের গ্রাসে প্রায় ৩২৩ কিলোমিটার এলাকা। অর্থাৎ, প্রায় ৬০.৫ শতাংশ।

অন্য দিকে, সার্বিক ভাবে দেশের উপকূল ক্ষয় মাত্র ৩৩ শতাংশ। অর্থাৎ, সমগ্র দেশের মধ্যে আমাদের রাজ্য উপকূলের ক্ষয়ের বিচারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। এর প্রধান কারণ হল, নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ধ্বংস। অপরিকল্পিত ও অবৈধ নির্মাণ কাজ এবং মাছের ভেড়ি তৈরির জন্য বছরের পর বছর ধরে সমগ্র সুন্দরবন এলাকায় বৃক্ষ নিধনের যজ্ঞ চলছে। অত্যধিক মাত্রায় বৃক্ষ নিধনের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ না করার ফলে এক দিকে তা যেমন উপকূলীয় ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করছে, তেমনই সুন্দরবনের দ্বীপভূমিতে বসবাসকারী পশুপাখি-সহ মানুষদের জীবনহানির আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে, এমনকি নবগঠিত দ্বীপগুলির ক্ষয়ও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনই ক্ষয়রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না করলে ভবিষ্যতে হয়তো অনেক দ্বীপ সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। প্রশাসনের উচিত, অবিলম্বে উপকূলীয় অঞ্চলে অরণ্য ধ্বংস বন্ধ করে পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃক্ষ রোপণ করা এবং এর পাশাপাশি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও উপকূলীয় অঞ্চলে অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করা। তবেই উপকূলীয় ক্ষয় রোধ করা সম্ভব হবে। ম্যানগ্রোভ অরণ্য শুধুই উপকূলীয় ক্ষয় রোধ করে না, রাজ্যের দক্ষিণে অবস্থিত হওয়ায় সাইক্লোনের তীব্রতা কমিয়ে কলকাতা-সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গকে রক্ষাও করে। তাই উপকূলীয় ক্ষয় রোধের বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকেও এগিয়ে আসতে হবে। আশা করি, সর্ব স্তরে বিষয়টিকে যথোপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।

সৌরভ মালিক, চন্দনদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

বিজ্ঞাপনের বিপদ

মোবাইল ফোনে সময়ে-অসময়ে বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপনে গ্রাহক আজ জেরবার। এটিএম-এ নগদ লেনদেনের পর নানা রকম লম্বা লম্বা মেসেজ অযাচিত ভাবে চলে আসে, মতামত চায়। সব পড়ে উত্তর দেওয়া সম্ভব হয় না। আর অতি সাধারণ উপভোক্তারা সব কিছু বোঝেনও না। যার ফলে, অটোমেটিক চার্জ কেটে ডেবিট কার্ড চলে আসে, এবং নানা রকম বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। মুহূর্তের সামান্য ভুলে সাইবার ক্রাইমের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকে। সাধারণ উপভোক্তাদের অজ্ঞতা এবং সময়াভাবের সুযোগ নিয়ে বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন সংস্থার এই ধরনের বিজ্ঞাপন কোনও ভাবেই কাম্য নয়। বিভিন্ন হ্যাকার ও ঠগ-জালিয়াতরা অপেক্ষায় থাকেন আমাদের সামান্য ভুলের। কোনও ভাবেই কি এগুলো ঠেকানো যায় না? সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের কাছে ভেবে দেখার অনুরোধ রইল।

রাধারমণ গঙ্গোপাধ্যায়, বজবজ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

অধিকারে হাত

খুব অবাক লাগছে, মাসকয়েক ধরে ভারত গ্যাস নিজে থেকে গ্রাহকের গ্যাস প্রতি মাসে বুক করে দিচ্ছে, অবশ্য সঙ্গে একটি ‘আনসাবস্ক্রাইব’ করার লিঙ্কও দিচ্ছে (এই ভাবেই সিস্টেমটি তৈরি করা হয়েছে)। সেটি ‘সাবমিট’ করার পর একটি ওটিপি ফোনে আসছে। কিন্তু নানা কারণে সেটি দেওয়া যাচ্ছে না। এসএমএস দেখে তার পর ওটিপি দিতে গেলে ওয়েবপেজটি নিজে থেকেই চলে যাচ্ছে। তাই আনসাবস্ক্রাইব করা যাচ্ছে না।অন্য একটি সমস্যা হল, বয়স্ক যাঁরা, তাঁদের পক্ষে এই দ্রুতগতির ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে সড়গড় হওয়া অত্যন্ত কঠিন।

প্রশ্ন হল, ভারত গ্যাস গ্রাহকের হয়ে গ্যাস বুক করবে কেন? কোন অধিকারে? এতে কি গ্রাহক সিলিন্ডার ফিরিয়ে দিলে বা না নিতে পারলে গ্যাস কোম্পানি/ ডিস্ট্রিবিউটর বা ডেলিভারি ম্যান-এর কোনও ভাবে লাভ হয়? এই পদ্ধতি কি গ্রাহকের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ নয়? গ্রাহক তো ভারত গ্যাসকে বলেননি তাঁর হয়ে আগাম গ্যাস বুক করে দিতে। আমি জানি না ‘ইন্ডিয়ান অয়েল’ ও ‘হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম’ এ ক্ষেত্রে কী করছে।

শীতকালে গ্যাস কিছুটা বেশি খরচ হয়, সেটা সবাই জানেন। অবশ্য, গ্যাসের সঙ্গে এখন অনেক পরিবারে ইন্ডাকশন ওভেন ব্যবহার করা শুরু হয়েছে কিছুটা গ্যাসের বাড়তি খরচ সামাল দিতে এবং কিছুটা পরিবেশের কথা ভেবেও। কিন্তু যাঁদের পরিবার বড়, তাঁদের বছরে ১২টির বেশিও গ্যাসের প্রয়োজন হতে পারে। তাই গ্যাস কোম্পানিগুলির কাছে অনুরোধ, প্রয়োজন অনুসারে গ্যাস বুক করার অধিকার গ্রাহকের হাতেই থাক। এই অধিকারে অযথা হস্তক্ষেপ করার দরকার নেই। ভারত পেট্রোলিয়াম এই সিস্টেমটি দ্রুত প্রত্যাহার করুক।

প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, কলকাতা-১০৮

Climate Change Politics

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।