Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Satyen Sen

সম্পাদক সমীপেষু: ও পার ভোলেনি

শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৩১
Share: Save:

‘বিস্মৃতপ্রায়’ (কলকাতার কড়চা, ১১-১) মনীষী সত্যেন সেনের উপরে আলোকপাত করেছে। এ পারের বাঙালি তাঁকে বিস্মৃত হলেও বাংলাদেশে আজও তাঁকে নিত্য স্মরণ করা হয়। কলেজ স্ট্রিটে নামী বই বিক্রেতারা সত্যেন সেনের নাম পর্যন্ত শোনেননি, কিন্তু ও পার বাংলায় তাঁর প্রায় সব গ্রন্থই সুলভ। ২৯ অক্টোবর, ২০১৪ ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’ প্রকাশ করেছে ৭৫০ পৃষ্ঠার সুবৃহৎ, সুমুদ্রিত সত্যেন সেন স্মারকগ্রন্থ, যা সম্পাদনা করেছেন কামাল লোহানী, বদিউর রহমান প্রমুখ। তিনি সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন, কারাগার যেন তাঁর ঘরবাড়ি হয়ে উঠেছিল। সেখানেই স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করেছেন, অনেকগুলি গ্রন্থ রচনাও করেছেন। জেলখানার মলিন মেঝের উপর উপুড় হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লিখে যেতেন, কনুইয়ের চামড়া শক্ত হয়ে গিয়েছিল। জেলে বন্দি পকেটমারও তাঁর বন্ধু ছিল, আর সেই অভিজ্ঞতার ফসল সেয়ানা উপন্যাস; ১৯৫৯ সালে রাজশাহী জেলখানায় লিখেছেন আত্মজৈবনিক রুদ্ধদ্বার মুক্তপ্রাণ উপন্যাস। তাঁর ‘মুক্তির গান’ আজও প্রেরণামন্ত্র। “মানুষের কাছে পেয়েছি যে বাণী/ তাই দিয়ে রচি গান।/ মানুষের লাগি ঢেলে দিয়ে যাব/ মানুষের দেয়া প্রাণ।” বা “চাষি দে তোর লাল সেলাম/ তোর লাল নিশানরে” এখানে অশ্রুত হলেও ওখানে রীতিমতো জনপ্রিয়। পেয়েছেন, আদমজি পুরস্কার, ঢাকা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং সাহিত্যের জন্য মরণোত্তর একুশে পদক।

বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আসতে চাইতেন না, কিন্তু জেলের অত্যাচারে ক্ষতিগ্রস্ত চোখের আলো যখন নিবে এল, অকৃতদার মানুষটি বাধ্য হলেন শান্তিনিকেতনে গুরুপল্লিতে দিদির কাছে চলে আসতে। তবে বৃদ্ধা দিদি প্রতিভা সেনের পক্ষে সম্ভব হয়নি ভাইয়ের উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। বাংলাদেশে থাকলে তাঁর অন্তত এই অনাদর এবং উপেক্ষা জুটত না।

শুভাশিস চক্রবর্তী

অশোকনগর, উত্তর ২৪ পরগনা

অনাদরে

কালজয়ী সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মজীবনের শেষ ২০ বছর কাটিয়েছিলেন ঘাটশিলায়। ধারাগিরি থেকে ফুলডুংরির জঙ্গল, বুরুডির পাহাড়-ঘেরা লেক থেকে শহরের বুক চিরে বয়ে-চলা তিরতির সুবর্ণরেখা নদী— এ সবেরই মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তাঁর পথের পাঁচালী, আরণ্যক, চাঁদের পাহাড়-সহ অসংখ্য মণিমুক্তো। ঘাটশিলা স্টেশন যাওয়ার পথে রামকৃষ্ণ মঠকে অতিক্রম করে বাঁ দিকের একটি স্বল্প পরিসর, নোংরা রাস্তার শেষ প্রান্তে স্বল্পোচ্চ প্রাচীর ঘেরা ‘গৌরীকুঞ্জ’— বিভূতিভূষণের আবাস। তুলসীমঞ্চটা আজও রয়েছে, যার সামনে তাঁর মরদেহখানি শুইয়ে রাখা হয়েছিল। একতলা বাড়ি, দু’টি ঘর। বেডরুমটিই ‘রিসেপশন’।

বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে ‘গৌরীকুঞ্জ ট্রাস্ট’। সরকারি সাহায্য নেই। সর্বত্র মলিনতা ও অযত্নের ছাপ। একফালি জমিতে ছোট্ট মঞ্চ, যেখানে অবৈতনিক বাংলা ভাষার একটি পঠনপাঠন কেন্দ্র ট্রাস্টের উদ্যোগে চলে। রয়েছে একটি আমগাছ, যেটি বিভূতিভূষণের ভাই লাগিয়েছিলেন দাদা আম খাবেন বলে। সামনে না গেলে চোখে পড়ে না, বাঙালির গর্ব এত অনাদরে পড়ে আছে।

কৌশিক সরকার

রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া

অন্তিম বিনোদন

‘ডিজে, বাজিতে শতায়ু বৃদ্ধার শ্মশানযাত্রা’ (১১-১) সংবাদ প্রতিবেদনটি চমকপ্রদ। দিঘা এলাকার বৃদ্ধা মাহেশ্বরী দেবী পরিবারের সদস্যদের বলে রেখেছিলেন, তাঁর অন্তিম যাত্রায় যাতে নাচ-গান, ডিজে বক্স থাকে। পরিবারের সদস্যরাও তাঁর ইচ্ছার পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছেন। বেশ কিছু বছর আগে উত্তরপ্রদেশের এক বৃদ্ধ, যিনি অমিতাভ বচ্চনের অন্ধ অনুরাগী ছিলেন, তিনি জানিয়ে রেখেছিলেন, তাঁর শেষ যাত্রায় মাইকে যেন শুধুমাত্র অমিতাভ বচ্চনের একটি ছবির ‘খাই কে পান বনারসওয়ালা’ গানটি বাজাতে বাজাতে যাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা তাঁর শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করেন। শেষ যাত্রাতেও চলে আসছে উৎসব আর বিনোদনের মেজাজ।

উজ্জ্বল গুপ্ত

কলকাতা-১৫৭

নিন্দনীয়

‘ডিজে, বাজিতে শতায়ু বৃদ্ধার শ্মশানযাত্রা’ শীর্ষক সংবাদ পড়ে এই আচরণের তীব্র নিন্দা করছি। কোনও সভ্য সমাজে শবকে ঘিরে আনন্দের দৃষ্টান্ত নেই। আমাদের সমাজও এই কাণ্ড মেনে নেবে না সহজে। মৃত্যু সতত দুঃখের, কষ্টের। যে মানুষটা শতায়ু হয়ে অনেক কিছু দিয়ে গেলেন, তাঁর চলে যাওয়াকে এ ভাবে সম্মান জানানো? মেনে নিতে কষ্ট হয়।

বিবেকানন্দ চৌধুরী

কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান

লুপ্ত ‘য’

বর্তমানে প্রায়শই পশ্চিমবঙ্গের স্কুলের পাঠ্যপুস্তক ও সংবাদপত্রে একই শব্দের বিভিন্ন বানান খুবই দৃষ্টিকটু লাগে, বিশেষ করে যে শব্দগুলো হিন্দি থেকে বাংলায় লেখা হয়েছে। বেশ কিছু শব্দ, যেগুলো ‘য’, ‘ক্ষ’, ‘হ্ম’, ‘দ্ম’ ও ‘হ্য’ সম্বলিত, তার সঠিক উচ্চারণ বাংলায় আর কেউ করে না। অন্তঃস্থ ‘য’-এর উচ্চারণ আর বর্গীয় ‘জ’-এর উচ্চারণের পার্থক্য অধিকাংশ শিক্ষিত বাঙালি জানেন না। আবার বাংলা ভাষায় দু’টি ‘ব’ থাকলেও অন্তঃস্থ ‘ব’-এর উচ্চারণ (ওয়) পুরোপুরি লুপ্ত, যদিও সংস্কৃত, হিন্দি, অসমিয়া ভাষায় এখনও প্রচলিত। বাংলা সংবাদমাধ্যম, শিক্ষক-অধ্যাপক ও পাঠকদের কাছে আমার অনুরোধ, যদি আপনারা এই অপ্রচলিত ও লুপ্ত বাংলা উচ্চারণের পুনঃপ্রচলনের চেষ্টা করেন, তা হলে বাংলা ভাষা আরও সমৃদ্ধ হবে।

সায়ন ভট্টাচার্য

কাজোড়া, পশ্চিম বর্ধমান

দান

‘নিষ্ঠুর রঙ্গ’ (সম্পাদকীয়, ১২-১) পড়ে রবীন্দ্রনাথের ‘কৃপণ’ কবিতাটি মনে পড়ছে। সোনার রথে রাজার রাজা গ্রামের পথে আসছেন, এ বার প্রার্থনা করলেই দুঃখের দিনের অবসান হবে, ভাবছেন সেই ভিখারি। রাজার রাজা তাঁর কাছেই ভিক্ষা চাইলে ভিখারি বিব্রত হন। এই কাহিনির সঙ্গে জে পি নড্ডা-অমিত শাহদের দরিদ্রের ঘরে অন্ন-প্রার্থনার নাটকীয়তার মিল আছে। তবে কবিতায় রাজা ছিলেন যথার্থ দেবতা। কবিতায় ভিখারির দান-করা শস্যকণা তাঁর কাছে সোনা হয়ে ফিরেছিল। আর আজ মুষ্টিভিক্ষা করে নড্ডা-শাহরা আদানি-অম্বানীর মতো পুঁজিপতিদের সেবা করে চলেছেন।

শংকর কর্মকার

হালিশহর, উত্তর ২৪ পরগনা

বাঁদর

‘বাঁদর’ কি বর্ণবিদ্বেষী শব্দ? ছোটবেলায় দিদি-বোনের কাছে বহু বার এই সম্বোধনে ভূষিত হয়েছি, সঙ্গে সঙ্গে তা ফিরিয়েও দিয়েছি। দাতা-গ্রহীতা গায়ে মাখত না, বড়রাও গুরুত্ব দিতেন না। দু’দিন আগে কিন্তু এই উচ্চারণেই সিডনিতে তুলকালাম হয়ে গেল। গ্যালারি থেকে জনৈক অস্ট্রেলিয়াবাসীর এই শব্দপ্রয়োগে ১০ মিনিট টেস্ট ম্যাচ বন্ধ রইল! পরের দিন প্রথম পাতায় খবর ছাপা হল (‘বর্ণবিদ্বেষ বিতর্কে উত্তাল ক্রিকেট’, ১১-১)। সত্তরের দশকে কলকাতা ফুটবল লিগের খেলা গ্যালারিতে বসে কোহালি, অশ্বিনরা কখনও দেখেননি। তা হলে জানতেন, সমর্থক গ্যালারি থেকে কাগজের বল, জলের বোতলের সঙ্গে যে সব বাছাই-করা সম্ভাষণ ভেসে আসত, তা যে কোনও আধুনিক স্ল্যাং ডিকশনারিকেও হার মানাবে। শুধু এই কারণে সে দিন খেলা বন্ধ হয়েছে কি? মনে তো পড়ে না! ক্রিকেটের ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ক্রিকেট কোনও দিনই ‘ভদ্রলোকের খেলা’ ছিল না!

দেবাশিস মিত্র

কলকাতা-৭০

বাড়ুক পেনশন

কর্মচারী ভবিষ্যনিধি প্রকল্পের অধীন অবসরপ্রাপ্ত বিপুল সংখ্যক কর্মী প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৩০০ টাকা পেয়ে থাকেন। এই সামান্য টাকায় এক জন মানুষের পক্ষেই জীবন ধারণ করা অসম্ভব। কেন্দ্রীয় সরকার এই কর্মচারীদের পেনশনের পরিমাণ ন্যূনতম ৫০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০০০ টাকা করলে কোনও মতে সংসার চালাতে পারবেন কয়েক লক্ষ অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ কর্মচারী।

তুষার ভট্টাচার্য

কাশিমবাজার, মুর্শিদাবাদ

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Satyen Sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy