দি ওরিয়েন্টাল সেমিনারি উত্তর কলকাতার রবীন্দ্র সরণিতে অবস্থিত ১৯২ বছরের একটি ঐতিহ্যমণ্ডিত বিদ্যালয়। ১৮২৯ সালে বাঙালিসমাজের ইংরেজি শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা উপলব্ধি করে গৌরমোহন আঢ্য নামে এক শিক্ষাপ্রেমী সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা করেন এবং বাকি জীবন এই বিদ্যালয়টির উন্নতিকল্পে অতিবাহিত করেন। মেয়েদেরও ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য কয়েক বছর পর মহিলা বিভাগ চালু করা হয়। শোনা যায়, বিদ্যালয়টির জন্য কলকাতার বাইরে এক ইংরেজ শিক্ষকের সন্ধান পেয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে ফেরার সময় নৌকাডুবিতে গৌরমোহনের মৃত্যু হয়।
এই স্কুলে বহু স্বনামধন্য মনীষী, যেমন, স্বামী অভেদানন্দ, শম্ভুনাথ পণ্ডিত, বিশ্বনাথ দত্ত (স্বামী বিবেকানন্দের পিতা), গিরিশ চন্দ্র ঘোষ, দানী ঘোষ (গিরিশ ঘোষের পুত্র), শম্ভুনাথ মুখোপাধ্যায়, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত প্রমুখ শিক্ষালাভ করেছিলেন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও এখানে কিছু কালের জন্য ছাত্র ছিলেন। লেখাপড়া ছাড়া অন্য ক্ষেত্রেও বিদ্যালয়টির অবদান আছে, যেমন— এনসিসি, স্কাউট ট্রেনিং ইত্যাদি, যা ১৯৬২ ও ১৯৬৬ সালের যুদ্ধে শহরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর আগে বিদ্যালয়টি ‘হেরিটেজ’ মর্যাদা লাভ করেছে।
পরিতাপের বিষয়, এই বিখ্যাত বিদ্যালয় এখন ছাত্রছাত্রীর অভাবে বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এর মূল কারণ, প্রাথমিক স্তরে ইংরেজি শিক্ষালাভের সুযোগের অভাব। এক জন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে স্থানীয় বহু অভিভাবকের সঙ্গে আলাপ করে দেখেছি (যাঁদের অধিকাংশই বিত্তশালী নন), তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, বর্তমান যুগে ইংরেজি শিক্ষার অভাবে বৃহত্তর জীবনে সফল হওয়া কঠিন। সেই কারণে তাঁরা ছেলেমেয়েদের এই বিদ্যালয়ে না পাঠিয়ে দূরবর্তী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বাধ্য হয়ে ভর্তি করান আর্থিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়টির অস্তিত্ব বজায় রাখতে ও অবিলম্বে এখানে প্রাথমিক বিভাগ থেকে ইংরেজি পঠনপাঠনের অনুমতি দিতে এবং সেইমতো ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে আবেদন জানাই।
সমর গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা-৪৮
হিন্দি কেন?
৫ জানুয়ারি এসবিআই (বেনিয়াপুকুর, আইটি বিল্ডিং) শাখার প্রবন্ধককে ফোন করলে সরাসরি বলেন, “আপনি হিন্দিতে কথা বলুন।” আমি হিন্দি জানি না। বাংলায় বলি। তবুও তিনি বলেন, “হিন্দিতে বলুন। বাংলা বুঝতে পারি না।” আমি কী ভাবে বলব? তাঁর এক কথা— “ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে বলুন, আমি বুঝে নেব।” আমাকে বাধ্য করলেন আধা হিন্দি আধা বাংলায় কথা বলতে। জানি না প্রবন্ধক মহাশয়কে আমার কথা বোঝাতে পারলাম কি না!
আমি বাংলা ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলতে পারি না। এই ব্যাঙ্কে আমি বহু পুরনো গ্রাহক। নিজের মাতৃভাষায় জরুরি কথা বলতে না পেরে যে অপমানিত হলাম বৃদ্ধ বয়সে, তা কিছুতেই ভুলতে পারছি না।
গৌতম দে, কলকাতা-৫৬
ইপিএফ
গ্রামীণ ব্যাঙ্কের কয়েক হাজার কর্মচারী অবসরের পর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কারণ, তাঁরা তাঁদের গচ্ছিত ইপিএফ-এর টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। ১৯৭৫ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ১৯৬টি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ভারতে কাজ করত। পরে পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে এখন ৪৩টি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কাজ করছে। এর মধ্যে আমাদের রাজ্যে ৩টি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক আছে। এই ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের অবসরের পর পেনশন ছিল না। তাঁরা সকলেই ইপিএফ অ্যান্ড এমপি অ্যাক্ট, ১৯৫২-র আওতায় ছিলেন। সেখানে সিপিএফ-এর নিয়মানুযায়ী কর্মচারী ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ উভয়েরই সমান অংশগ্রহণ থাকত। যদিও পারিবারিক পেনশন এবং পরে ১৯৯৫ সালের সংশোধনী অনুযায়ী তাঁরা সামান্য কিছু ইপিএফ পেনশন পেতেন।
গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের সংগঠন এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে কেস লড়েছিল। এই কেসের ফলে ২০১৮ সালের ২৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ন্যায় পেনশন চালু হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মচারীদের মতো, ১ এপ্রিল, ২০১০-এর পর যোগ দেওয়া কর্মচারীরা এনপিএস পাবেন, এই মর্মে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলো সার্কুলার জারি করে। বর্তমানে এই ব্যাঙ্কের কর্মচারীরা প্রায় সকলেই ইপিএফ অ্যান্ড এমপি অ্যাক্ট, ১৯৫২ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। নিয়মানুযায়ী এই পেনশন পেতে গেলে প্রভিডেন্ট ফান্ডে কর্তৃপক্ষের যে অংশ জমা ছিল, তার পুরোটাই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ফেরত নিয়ে নেবেন। সেই মতো পূর্বে অবসর নেওয়া কর্মচারীদের সকলকেই সুদ-সহ কর্তৃপক্ষের পুরো অংশটা ফেরত দিতে হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন গ্রামীণ ব্যাঙ্কে আরআরবি (পেনশন) ট্রাস্ট এবং আরআরবি (প্রভিডেন্ট ফান্ড) ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এখন সেই ট্রাস্ট পেনশন সংক্রান্ত সব কিছুই প্রদান করছে। এর জন্য তাদের নিজেদের ফান্ড থেকেই টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
ইতিমধ্যে দু’বছর অতিক্রান্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের ইনকাম ট্যাক্স-সহ বিভিন্ন দফতরের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ইপিএফ-এর ফান্ড এখনও বিভিন্ন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের পেনশন এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। ফলে প্রভিডেন্ট ফান্ডে অংশগ্রহণকারী কর্মচারীরা তাঁদের অর্থ ফেরত পাচ্ছেন না। কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ দফতরের অন্তর্ভুক্ত ডিএফএস এবং শ্রম দফতরের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এই রাজ্যের আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড অফিসগুলো তাদের কাছে সঞ্চিত অর্থ রাজ্যের তিনটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে জমা করেনি। যার জন্য অবসরের পরে চিকিৎসা, ছেলে-মেয়ের বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা খরচ করতে পারছেন না। আবার অনলাইনে ওই টাকা পেতে গেলে কর্তৃপক্ষের এনওসি প্রয়োজন হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের পাওনা টাকা না পেলে তাঁরাও সেটা দিচ্ছেন না। নিজেদের তিলে তিলে জমানো সঞ্চিত অর্থ অবসরের পর ব্যবহারের জন্য যাতে ঠিক সময়ে ফেরত পান, তা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের দায়িত্ব। সামাজিক সুরক্ষার সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে সময়ে।
দেবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
ভ্রমণে বিপদ
জানুয়ারি মাসের গোড়ায় বকখালি ভ্রমণে গিয়ে চরম সমস্যায় পড়লাম। এই জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রের ১০ কিমির মধ্যে কোনও ব্যাঙ্কের এটিএম নেই। আধুনিক হোটেলগুলিতে (সব হোটেলে অবশ্য খোঁজ করিনি) কার্ডে লেনদেনের ব্যবস্থা নেই, সবটাই নগদে মেটাতে হয়। আবার বিলে ১৮ শতাংশ জিএসটি যোগ করছে, কিন্তু কোনও বিল দিচ্ছে না। একান্ত নিরুপায় হলে বিভিন্ন দোকানে সোয়াইপ মেশিনের থেকে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা নিতে পারেন। তবে তার জন্য ১০০ টাকায় ১৫ টাকা সুদ। আমাদের কাছে নগদ টাকা যা ছিল, সেটা দিয়ে এক রাত কোনও ক্রমে চলে গেল। তাই পর্যটকদের সতর্ক করছি, তাঁরা যেন পর্যাপ্ত নগদ অর্থ সঙ্গে করে বকখালি ভ্রমণে যান।
অরূপ মুখোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর, হুগলি
সেই তিমিরেই
উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ডাক বিভাগের অন্তর্গত মছলন্দপুর ও দক্ষিণ চাতরা উপ-ডাকঘরের আশপাশের সব ক’টি ডাকঘরে কোর-ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বহু দিন আগেই চালু হলেও, ওই পোস্ট অফিস দু’টি সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগেই পড়ে আছে? বার বার খবর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে— এই বার সিবিএস চালু হয়ে যাবে। কিন্তু, কোথায় কী? আমরা, এই অভাগার দল যে তিমিরে ছিলাম, সেখানেই পড়ে আছি। অতি স্বাভাবিক, সাধারণ, যুক্তিযুক্ত চাহিদাটুকু পূরণে কেন এত অনীহা?
দীপক ঘোষ, মছলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy