রঞ্জি ফাইনালে বাংলার হারের দুঃখ ও হতাশা সরিয়ে রেখেই বলছি, প্রথম সারির একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এত খারাপ ফাইনাল ম্যাচ কবে দেখেছি মনে পড়ছে না। সৌজন্যে পিচ। সৌরাষ্ট্র বা বাংলার কয়েক জন ব্যাটসম্যানের কৃতিত্বকে ছোট না করেই বলা যায়, বোলাররা তেমন কোনও সুবিধাই পাননি। এই পিচে দুই ইনিংস মিলিয়ে আকাশদীপের ৬ বা শাহবাজের ৫ উইকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে, চোখের বা মনের আরাম কোনওটাই হয়নি। তেমনই গড়ে রোজ ২০০ করেও রান না ওঠাটাও বুঝিয়ে দিয়েছে, ব্যাটসম্যানরাও আদৌ সুবিধে করে উঠতে পারেননি। সৌরাষ্ট্রের এক ব্যাটসম্যানের শতরান বা পরে চেতেশ্বর পুজারার মাটি কামড়ে পড়ে থেকে করা ৬৬, কোনওটাই ভাল ক্রিকেট ব্যাটিং দেখার স্মৃতি হতে পারল না। এ রকম পিচে খেলে তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটারদের, বা সার্বিক ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটের লাভ হবে না।
মুক্তি নাথ
কলকাতা-৮৪
ভুল হয়েছে
‘কুণালের সারদা মামলায় সিবিআই’ (৬-৩) শীর্ষক সংবাদে কিছু তথ্য ও বিষয়গত ত্রুটি রয়েছে। এর ফলে কিছু বিভ্রান্তিকর ধারণা তৈরির অবকাশ আছে।
দ্বিতীয় লাইনেই লেখা হয়েছে, ‘‘অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষকে সারদার এই মামলায় যুক্ত করতে চেয়ে আবেদন করেছিল সিবিআই। বৃহস্পতিবার ঘাটাল এসিজেএম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সপ্তবর্ণা সেনগুপ্ত তাতে সম্মতি দিয়েছেন।’’ এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুল।
আমাকে যুক্ত করতে চেয়ে কোনও আবেদন সিবিআই করেনি। ফলে আদালতের তাতে সম্মতি দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।
বিষয়টি হল: ঘাটাল আদালতে এই সারদা মামলাটি ২০১৩ সালের। এটি রাজ্য সরকার অর্থাৎ রাজীব কুমারের সিট-এর মামলা।
২০১৪ সালে আমাকে গ্রেফতার দেখানো হয় (শোন অ্যারেস্ট)। আমাকে জেরাও করা হয়নি। দশ-বারো দিনের মাথায় আমার জামিন হয়ে যায়।
তার পর থেকে নিয়মিত এই মামলায় ঘাটাল কোর্টে গিয়ে আমি নির্ধারিত দিনে উপস্থিত থাকি।
সিআরপিসি ১৬৭(৫) অনুযায়ী কাউকে গ্রেফতারের ২ বছরের মধ্যে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট না দিলে আদালত তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারে।
যে হেতু দু’বছরের বদলে এ ক্ষেত্রে ছ’বছর হয়ে গিয়েছে, আমার বিরুদ্ধে কোনও চার্জশিট জমা পড়েনি, তাই এই আইন অনুযায়ী আমার অব্যাহতি চেয়ে আমার আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী (খবরে লেখা ভট্টাচার্য নয়) আদালতে আবেদন করেন। রাজ্য সরকারের আইনজীবীর সৌজন্যে সেই পিটিশনের ফয়সালা এখনও হয়নি।
ইতিমধ্যে ১০-২ তারিখে সিবিআই ঘাটাল আদালতে আবেদন করে বলে, তারা গোটা মামলাটি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নিয়ে তাদের আর সি ফোর মামলার সঙ্গে যুক্ত করতে চায়। ফলে মামলাটি এসিজেএম ঘাটাল কোর্ট থেকে এসিজেএম আলিপুরের এজলাসে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।
বৃহস্পতিবার ঘাটাল কোর্টে সংশ্লিষ্ট সব শিবিরের কিছু কথোপকথনের পর, তিন পক্ষ— রাজ্য সরকারি আইনজীবী, সিবিআই আধিকারিকেরা এবং আমার আইনজীবী একসঙ্গে বিচারকের কাছে যান এবং মামলাটি আলিপুরে সিবিআইয়ের মামলায় সংযুক্ত করার কথা বলেন। বিচারক সম্মতি দেন।
ফলে ঘাটাল থেকে মামলাটি আলিপুর আদালতে চলে আসছে।
এর মধ্যে প্রতিবেদক ‘‘কুণাল ঘোষকে যুক্ত করতে চেয়ে আবেদন করেছিল সিবিআই। আদালত তাতে সম্মতি দিয়েছে’’— বিষয়টি কোথা থেকে পেলেন, বুঝলাম না।
নতুন করে কোনও মামলা সিবিআই নেওয়া, আর কোনও ব্যক্তিকে যোগ করতে চাওয়ার মধ্যে সব দিক থেকেই বিস্তর ফারাক আছে।
কুণাল কুমার ঘোষ
কলকাতা-৯
প্রতিবেদকের উত্তর: প্রতিবেদনে কুণাল ঘোষকে মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে এই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে রয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবার মামলার দিন ঘাটাল আদালতে শুধু কুণালই উপস্থিত ছিলেন। সেই কারণেই কুণালকে গুরুত্ব দিয়ে সংবাদটি লেখা হয়েছে। তা ছাড়া, কুণাল নিজেই বলেছেন, ‘‘...তিন পক্ষ— রাজ্য সরকারের আইনজীবী, সিবিআইয়ের আধিকারিক এবং আমার আইনজীবী একসঙ্গে বিচারকের কাছে যান এবং মামলাটি আলিপুরে সিবিআইয়ের মূল মামলায় সংযুক্ত করার কথা বলেন। বিচারক সম্মতি দেন।’’ সেই মতোই কুণালকে মামলায় যুক্ত করার আবেদনের কথা লেখা হয়েছে।
কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তীও (ভুলবশত ভট্টাচার্য লেখায় দুঃখিত) সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘‘আমার মক্কেলের করা আবেদনের শুনানি যদি ঘাটাল আদালতে চলত, তা হলে এই মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে যেত না। নির্দিষ্ট সময়ে তদন্তকারী সংস্থা চার্জশিট না দেওয়ায় মামলাটি খারিজ হয়ে যেত।’’ চার্জশিট জমা না দেওয়া সংক্রান্ত কুণালের আইনজীবীর বক্তব্যও প্রতিবেদনে রয়েছে। রাজ্য সরকারের ‘সিট’ যে মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিল এবং সিবিআই যে নতুন করে দায়িত্ব নিল, তা-ও লেখা হয়েছে। মামলাটি যে ঘাটাল আদালত থেকে আলিপুর আদালতে স্থানান্তরিত হয়েছে, সেই উল্লেখও রয়েছে।
গোটা প্রতিবেদনটিই আদালতের প্রক্রিয়া ও আইনজীবীদের বক্তব্য অনুসারে লেখা হয়েছে। অন্য কোনও উদ্দেশ্য প্রতিবেদকের ছিল না।
স্টকহলমে
করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারা বিশ্ব যখন বিপর্যস্ত, সুইডেনের স্টকহলম-এ বসে, এখানকার অবস্থাটা তুলে ধরছি। সুইডেনে বর্তমান আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে, যদিও এর সত্যতা যাচাই করার উপায় নেই। গত তিন-চার দিন কোনও সংখ্যা সরকার প্রকাশ করছে না, কারণ এতে নাকি ‘প্যানিক’ বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছু হয় না। মানুষের তাতে বিশেষ হেলদোল নেই, যদিও ১১ কোটির দেশে ১০০০ সংখ্যাটা খুব কম নয়। মানুষ এখানে ধৈর্যশীল। বহু লোকের করোনার সাধারণ লক্ষণ ধরা পড়ছে, তাঁরা নিজের বাড়িতে বসে ১১৭৭-এ (এখানকার হেলথ-হেল্পলাইন নম্বর) ফোন করছেন, ফোনেই ডাক্তার বা নার্সরা তাঁদের ১৪ দিন বাড়ি থেকে বেরোতে বারণ করছেন, আর লোকে সেটা শুনছেন। আমার এক অফিস কলিগের মেয়ে ও তাঁর সঙ্গী আক্রান্ত। তাঁদের আত্মীয়স্বজন এক দিন ছাড়া ব্যাগ ভর্তি বাজার করে তাঁদের বাড়ির দরজায় রেখে আসছেন, তাঁরা সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর আক্রান্ত পরিবারটি দরজা খুলে ব্যাগ নিয়ে নিচ্ছেন। এ ভাবেই তাঁরা এখন প্রায় নিরাময়ের দোরগোড়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ও তুলছেন না, আত্মীয়রাও কান্নার রোল তুলছেন না। কোনও সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই এ সব হচ্ছে। স্কুল-কলেজ সবই চলছে। সরকার বলছে, স্কুল যদি বন্ধ হয়ে যায়, ইমার্জেন্সি পরিষেবার (স্বাস্থ্য, পরিবহণ, পুলিশ ইত্যাদি) সঙ্গে যুক্ত বাবা-মা’দের খুব সমস্যা হবে। এখানে প্রায় সব পরিবারেই বাবা-মা দু’জনেই চাকরি করেন এবং সিঙ্গল মাদারের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। বাচ্চারা স্কুলে না গেলে, মা-বাবা যদি কাজে যান, দাদু-দিদিমারা বেবি-সিটার’এর ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের আক্রমণের ক্ষেত্রে তাঁদের ভয় সবচেয়ে বেশি। আর স্কুল বন্ধ হলে টিনএজার পড়ুয়ারা যদি শপিং মল, সিটিসেন্টারে ঘুরে বেড়ায়, সংক্রমণ বাড়তে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সরকার অবশ্য সমালোচনার মুখে পড়ছে। দিন পাঁচেক আগে ইটালি-ফেরত একটি বিমান ২০০ জন যাত্রী-সহ অবতরণ করে এখানকার আরলান্ডা বিমান বন্দরে। কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসেন। এই নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। প্যানিকও একদম ছড়ায়নি বললে ভুল হবে। বড় বড় মুদির দোকান থেকে হুহু করে উধাও হয়ে যাচ্ছে প্রতি দিনের খাবার ও সরঞ্জাম।
অয়ন চক্রবর্তী
স্টকহলম, সুইডেন
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy