লক্ষ্মী পুজো।
আমার বয়স ৬২ চলছে, এখনও দেখছি, মা দুর্গার বিসর্জন হয়ে যাওয়ার পর, সর্বজনীন মণ্ডপগুলিতে মা লক্ষ্মীর আগমনকে ঘিরে উৎসাহ অত্যন্ত কম। আয়োজনেও খুব কার্পণ্য। প্রতিটি মণ্ডপেই রঙিন কাপড়গুলি খুলে নেওয়া হয়। ত্রিপলের নীচে ছোট্ট মণ্ডপ গড়ে, মা লক্ষ্মীর আরাধনা হয়। আলোকসজ্জা বিষয়েও একই কথা প্রযোজ্য।
সাধারণত দুর্গাপুজোয় যে চাঁদা সংগৃহীত হয়, তা থেকেই লক্ষ্মীপুজোর ব্যয় নির্বাহ হয়। আমি দীর্ঘ দিন মধ্য কলকাতার একটি পুজো কমিটির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও, চাঁদার বিলে ‘সর্বজনীন দুর্গোৎসব’-এর পাশে লক্ষ্মী ঠাকুরের নাম যোগ করতে পারিনি।
হ্যাঁ, স্বীকার করতেই হবে, প্রায় প্রতি ঘরেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়ে থাকে। ফলে উদ্যোক্তাদের ধ্যানজ্ঞান এ দিকে থাকে না। আর দুর্গাপুজোর হ্যাংওভার কাটতেও সময় লাগে বইকি। তা হলে উপায় কী?
দুর্গাপুজোর কমিটির মধ্যেই আলাদা করে লক্ষ্মীপুজোর কমিটি গঠন করা যেতে পারে। দুর্গাপুজোয় যাদের কাঁধে কম দায়িত্ব থাকে, তাদের এই কমিটিতে নেওয়া হোক। তারাই এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিক।
আজকাল পুজো মানে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শুধু প্রতিযোগিতা। নানা খাতে খরচের বহর দেখলে মাথা ঘুরে যায়। কিছু খাত থেকে পয়সা বাঁচিয়ে লক্ষ্মীপুজোয় অনায়াসে ব্যয় করা যেতে পারে। ভারসাম্য সব ক্ষেত্রেই জরুরি।
অনুপ গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা-৯
ঘোটালা
‘এলটিসির হিসেব তলব’ (২৬-৯) শীর্ষক সংবাদের প্রেক্ষিতে এই চিঠি। সংবাদে প্রকাশ, অর্থ দফতরের আদেশনামায়, এলটিসি নিয়ে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে যে-সব রাজ্য সরকারি কর্মচারী বিদেশ সফর করছেন, তাঁদের মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে, এলটিসিতে যাতায়াত ছাড়া অন্য কোনও খরচ নেই। যদি অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে তাঁদের ১২টি কিস্তিতে বা অবসর গ্রহণের (যেটি আগে হবে) আগে তা ফেরত দিতে হবে। বলা বাহুল্য, কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক পর্যন্ত যাতায়াতের বিমানভাড়া ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। খবরে প্রকাশ ৩৩,৬০০ জন রাজ্য সরকারি কর্মী/আধিকারিক এই বিমানভাড়া ৩৬ হাজার টাকা হিসেবে, সরকারি কোষাগার থেকে তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভয়াবহ ব্যাপার। কারণ কর্মী/আধিকারিক-সহ তাঁদের উপর নির্ভরশীল ৩ সদস্য প্রতিনিধি ধরলে, প্রতি জন কর্মী/আধিকারিক ৪ জনের যাতায়াতের বিমানভাড়া বাবদ ২৪ হাজার করে অতিরিক্ত অর্থ তুলে নিয়েছেন। এর ফলে এ পর্যন্ত রাজ্য কোষাগার থেকে অতিরিক্ত ৩৩৬০০×৪×২৪০০০ টাকা, অর্থাৎ ৩২২ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। অর্থ দফতর প্রকাশিত আদেশনামা অনুসারে এক জন কর্মীর পক্ষেও অতিরিক্ত জনপ্রতি ২৪ হাজার টাকা ফেরত সম্ভব নয়, দু’টি কারণে। প্রথমত যদি কোনও কর্মী/আধিকারিক লিখিত ভাবে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নেন, তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যবিকৃতি ও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত ও শাস্তি অবশ্যম্ভাবী। কেউই যেচে এই বিপদ ডেকে আনবেন না বলেই মনে হয়। দ্বিতীয়ত, যে ৩৬ হাজার টাকার বিমানভাড়ার টিকিট তাঁরা জমা দিয়ে এলটিসি থেকে টাকা তুলেছেন, তা যে বিমান সংস্থার টিকিট, সেই সংস্থা নিশ্চয়ই স্বীকার করে নেবে না যে সংশ্লিষ্ট টিকিটে অতিরিক্ত ২৪ হাজার যুক্ত করে ভাড়া ৩৬ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। আইনি জটিলতা এড়াতে, সংস্থাটি খাতায়-কলমে বিমানভাড়া ৩৬ হাজার টাকাই দেখাবে। তা ছাড়া এই স্কিমে বিদেশ ভ্রমণ করে যাঁরা অবসর গ্রহণ করেছেন, তাঁদের থেকে কোনও ভাবেই অতিরিক্ত অর্থ ফেরত নেওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ, সোজা কথায়, এই ৩২২ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার একটি পয়সাও রাজ্য কোষাগারে আর ফিরে আসছে না।
এখন প্রশ্ন হল, দায় কার? খবরে প্রকাশ, সব দফতর থেকেই কর্মীরা এই সুযোগ গ্রহণ করলেও, ব্যতিক্রম স্বরাষ্ট্র দফতর। স্বরাষ্ট্র দফতরের উপসচিব শ্যামল কুমার মিত্র এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্র দফতরের কমিশনার দেবাশীষ গুহঠাকুরতা বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে, তাঁদের কর্মীদের এ-হেন বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেননি। তাঁদের যুক্তি ছিল, কলকাতা-ব্যাঙ্কক বিমানভাড়া ৩৬ হাজার টাকা, তা অবাস্তব। এবং তাঁরা হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন না। এই দফতর বিমান সংস্থার কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চায়, ওই সময়ে অন্যান্য বিমান সংস্থার কলকাতা-ব্যাঙ্কক ভাড়া যেখানে ১২-১৩ হাজার টাকা, সেখানে তাদের বিমান ভাড়া ৩৬ হাজার টাকা কেন? তার কোনও সদুত্তর আসেনি।
আমরা জানি, অর্থ দফতর চাকুরি বিধি প্রণয়ন ও তার ব্যাখ্যা করে থাকে। শুধু তা-ই নয়, অন্য কোনও দফতরে কোনও বিধি প্রয়োগে জটিলতা দেখা দিলে, অর্থ দফতরই শেষ কথা। সেই দফতরের শীর্ষ পদাধিকারীরা না বুঝে এই আর্থিক কেলেঙ্কারি ঘটতে দিয়েছেন, ঠিক বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটাকে আমরা এলটিসি ঘোটালা বলে মনে করছি। এর প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন হওয়া উচিত।
মলয় মুখোপাধ্যায়
সাধারণ সম্পাদক, কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়
অমানবিক
১২৮৬৩ যশবন্তপুর সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতি দিন রাত সাড়ে আটটায় হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ে। প্রতি দিন বহু মানুষ এই ট্রেনে তাঁদের গন্তব্যস্থলে যান, যাঁদের একটা বড় অংশ প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সফর করেন। হাওড়া থেকে যশবন্তপুরের দূরত্ব ১৯৫৮ কিমি, ন্যূনতম সময় লাগে ৩৫ ঘণ্টা, ট্রেনেই কাটে ২ রাত। যাত্রী প্রাচুর্যের কারণে আসন সংরক্ষণ করা হয়ে ওঠে এক দুরূহ কাজ। তাই বাধ্য হয়ে অনেককেই অসংরক্ষিত কামরায় উঠতে হয়। এ জন্য লাইন দিতে হয়; আর লাইন শুরু হয় ওই দিন সকাল থেকেই। তাতেও বহু যাত্রী বসার সিট পর্যন্ত পান না। দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যা কখনও কখনও ঠাসাঠাসি করে বসে যাওয়া যাত্রীর সংখ্যাকেও ছাপিয়ে যায়। ব্যাগ, মালপত্র রাখার জায়গাগুলিও থাকে মানুষে পূর্ণ। কিছু দিন আগেও এই অসংরক্ষিত কামরার সংখ্যা ছিল, ৩। সম্প্রতি তা কমিয়ে ২ করা হয়েছে। এর ফলে এক একটি কামরায় যতগুলি আসন রয়েছে, যাত্রী উঠতে বাধ্য হন তার তিন থেকে চার গুণ। ট্রেনের অভ্যন্তরে সে কারণে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া থেকে শুরু করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যাত্রীদের। এই পরিস্থিতিতে অসহায় যাত্রীদের কাছে অবৈধ এবং অন্যায় ভাবে বসার আসন মোটা টাকায় বিক্রি হচ্ছে অবাধে। তাও ঘটছে হাওড়া স্টেশনের বুকে, রেল-কর্তাদের নাকের ডগায়।
গৌরীশঙ্কর দাস
সাঁজোয়াল, খড়্গপুর
যোগাযোগ
নিউটাউনের যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্রমশ উন্নত হচ্ছে বটে, কিন্তু তা শুধু কয়েকটা জায়গায় সীমাবদ্ধ। অ্যাকশন এরিয়া II B-তে স্ট্রিট নং ৬২২-এ বেশ কয়েকটি বড় বড় হাউজ়িং কমপ্লেক্স আছে, অথচ কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। ইলেকট্রিক বাস আছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। শুধু সকাল ৮টা থেকে ১২টা এবং বিকেল ৪টে থেকে ৮টা পর্যন্ত। তাও এক ঘণ্টা অন্তর। তাই এখানকার অধিবাসীরা পুরোপুরি অটো-টোটো-অ্যাপ ক্যাবের উপর নির্ভরশীল। ইলেকট্রিক বাসের পরিষেবা সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা অবধি, ১০ মিনিট অন্তর করলে ভাল হয়।
অচিন্ত্য মিত্র
নিউটাউন
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy