২০ ডিসেম্বর খালেদ চৌধুরীর শতবর্ষ পূর্তি হল। নাটক, সঙ্গীত, প্রচ্ছদ ইত্যাদির জগতে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, একান্ত ভাবে অসাম্প্রদায়িক মানুষ খালেদ চৌধুরীর শতবর্ষে ‘হিন্দু চিররঞ্জন...’, (রবিবাসরীয়, ১৫-১২) প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ। শ্রীচৌধুরীর লোকায়ত সঙ্গীতকে সম্ভাব্য আদি রূপে নথিবদ্ধ করা প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘‘তাঁর আগ্রহের ধরনই ছিল সংরক্ষণের কাজে, প্রসারের কাজে নয়।... এ সব বোঝাতে কখনও সিলেটের শেখ ভানুর উনিশ শতকীয় দেহতত্ত্বের গানের কথা ও সুরের উপমা তুলে ধরতেন: ‘নিশীথে যাইয়ো ফুলবনে রে ভ্রমরা/নয় দরজা করি বন্ধ লইয়ো ফুলের গন্ধ হে।’’’ এই প্রসঙ্গে কয়েকটি জরুরি তথ্য দিতে এই চিঠি।
এই গানটির দৃষ্টান্ত তুলে ধরার পিছনে কারণ রয়েছে। জসীমউদ্দিনের হাতে যে সমস্ত লোকায়ত গান পরিবর্তিত রূপে প্রকাশ পেয়েছিল তার মধ্যে এই গানটা অন্যতম, যার পুরো চরিত্রটাই পাল্টে গিয়েছিল শচীন দেব বর্মনের কণ্ঠে। এই গানেরই জনপ্রিয় দ্বিতীয় ও তৃতীয় পঙ্ক্তি— ‘জ্বালায়ে চান্দের বাতি জেগে রব সারা রাতি গো/ আমি কব কথা শিশিরের সনে রে ভ্রমরা।’ গ্রামদেশে ঘুরতে ঘুরতে জসীম দেখেছেন যে কোনও গানের প্রথম কলিটি খুব সুন্দর, কিন্তু পরবর্তী পঙ্ক্তিগুলোতে জনগণের কুসংস্কারকেই রূপ দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রথম লাইনটি নিয়ে বাকি লাইনগুলি নিজে রচনা করে দিতেন।
উক্ত গানটির প্রসঙ্গে খালেদবাবু তপন রায়প্রধানের ‘আব্বাসউদ্দীন’ পুস্তকে জানিয়েছেন যে, একদা জসীমউদ্দিন সিলেটের মুসলিম সাহিত্য সংসদ লাইব্রেরিতে গিয়েছিলেন। তাঁকে পেয়ে সকলে খুব উৎসাহিত হন। লাইব্রেরিতে রক্ষিত উনিশ শতকের ওই গানের একটি পাণ্ডুলিপি তিনি খুব উৎসাহ নিয়ে দেখেন, এবং তদারককারী নুরুল হককে বলেন যে যদি সেটা পান তবে কয়েকটি জিনিস নোট করে নিয়ে ফেরত দিয়ে দেবেন। নুরুল হক খালেদবাবুকে বলেছিলেন, ‘‘আমি দিয়ে দিলাম। কিন্তু আজও সেই পাণ্ডুলিপি ফেরত পাইনি। বদলে, শচীনদেব বর্মনের গাওয়া এই গানটা শুনছি সেটা জসীমউদ্দিনের লেখা। উনি তো একটা দেহতত্ত্বের গানকে প্রেমের গান বানিয়ে রেকর্ড করে দিয়েছেন!’’
খালেদবাবু জানিয়েছেন, ড. নীহাররঞ্জন রায়ের বাড়িতে নেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জসীমকে প্রশ্ন করেছিলেন যে তাঁদের মতো শহরের মানুষের অনেক পরিশীলিত লেখা যে লোকসঙ্গীত হিসেবে রেকর্ডে এল, তাঁরা সেটা কেন করলেন? জসীমের উত্তর ছিল, এটা না করলে যে কল্কেই পেতাম না! এই উক্তি শ্রীচৌধুরীর ভাল লাগেনি স্বভাবতই।
অরবিন্দ পুরকাইত
গোকর্ণী, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা
সংরক্ষণ
‘এই জন্য সংরক্ষণ’ (১৭-১২) শীর্ষক চিঠিটির প্রেক্ষিতে এই চিঠি। ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ছিল এবং সেটা চালু করাও হয়েছিল। কিন্তু এটা অনন্ত কাল ধরে চলতে পারে না। এতে দেশেরই ক্ষতি হচ্ছে। আমি সরকারি ব্যাঙ্কের এক জন অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন কর্মচারী। সেখানে উপলব্ধি করেছি সংরক্ষণের জোরে চাকরি প্রাপ্তি এবং পরবর্তী কালে সেই সংরক্ষণের জোরে পদোন্নতির পরবর্তী অবস্থায় ওই কর্মীর দুরবস্থার চিত্র। পরবর্তী কালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর। এতে সংস্থা এবং দেশ দুইয়েরই ক্ষতি হচ্ছে। তার চেয়ে বরং জাতি-ধৰ্ম নির্বিশেষে দরিদ্র অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু হোক। ভোটের জন্য সুবিধাবাদী রাজনীতি বন্ধ হোক। উৎপাদন ঠিকঠাক হলে দেশেরই তো মঙ্গল।
সুহাস রায়
কলকাতা-১২২
সংস্কার চাই
হাওড়া স্টেশন থেকে হাওড়া ব্রিজ পেরিয়ে কলকাতা ঢোকার অন্যতম মূল রাস্তা বড়বাজারের ঠিক মুখটাতেই উড়ালপুল গিয়ে মিশেছে ব্রেবোর্ন রোডে। কিন্তু কলকাতায় ঢোকার মুখে বড়বাজারের সামনে দুটো উড়ালপুলের মাঝে এক জন নমস্কাররত সুন্দরী আর তার সঙ্গে দুই প্রহরীর মূর্তি কলকাতায় আসা মানুষদের বহু বছর থেকে স্বাগত জানিয়ে আসছে। স্থানটি লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন সেটা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। আর্বজনায় ভরে গিয়েছে। ভবঘুরেদের মল-মূত্র ত্যাগের জায়গা হয়ে উঠেছে। একটা পুলিশ কিয়স্ক আছে ঠিকই, কিন্তু তা পরিত্যক্ত। চার পাশ দুর্গন্ধে ভরে উঠেছে। কল্লোলিনী কলকাতায় ঢোকার মুখেই যদি এমন অবস্থা হয়, তা হলে আগত অতিথিদের কাছে কলকাতার ভাবমূর্তি কি নষ্ট হয় না? তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ, অবিলম্বে মূর্তিগুলো তথা রেলিং ঘেরা জায়গাটির সম্পূর্ণ সংস্কার করে দৃষ্টিনন্দন করুন।
শম্ভুনাথ সাউ
রঘুনাথপুর, হুগলি
বাসের ফাইন
আমি ৬ ডিসেম্বর ট্যাংরা-হাওড়া মিনিবাসে স্ট্র্যান্ড রোড দিয়ে ডালহৌসি থেকে হাওড়া আসছিলাম। বাসটি ট্রাফিক নিয়ম মেনেই চলছিল। হঠাৎ মিলেনিয়াম পার্কের সামনে জনৈক ট্রাফিক সার্জেন্ট বাসটিকে দাঁড় করান এবং বিনা কারণে ফাইন করেন। আমি বাসের ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলাম ফাইনের কারণ। উত্তরে তিনি বললেন যে, ‘‘এটাই এখন নিয়ম; কোনও কারণ ছাড়াই এ রকম ফাইন নেওয়া হয় কোটা পূরণের জন্যে। কারণ জিজ্ঞাসা করলে ফাইনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।’’ এর পর বড়বাজার মোড়ে এক জন বয়স্ক মহিলাকে নামানোর জন্য গাড়ি দাঁড় করাতেই আবার ফাইন করা হল।
আমার বক্তব্য, তা হলে বড়বাজারে নামার জন্য অবিলম্বে একটি বাস স্টপের ব্যবস্থা করা হোক এবং কোটা পূরণের জন্য অন্যায় ভাবে ফাইন করে ড্রাইভারদের হয়রানি বন্ধ করা হোক।
উত্তম বৈরাগী
ডানকুনি, হুগলি
গ্যাসে ভর্তুকি
গত কয়েক মাস যাবৎ মধ্যবিত্তের রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই! এ ব্যাপারে গ্যাস ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলছেন তাঁরা নাকি কিছুই জানেন না। আমি যে গ্যাসের গ্রাহক (ভারত গ্যাস), তাদের হেড অফিসে ফোন করলে তাঁরা ফোনই ধরছেন না!
জীবেন্দ্রনাথ দত্ত
কলকাতা-৭৮
ব্লাডব্যাঙ্ক
নার্সিংহোমে ভর্তি রোগীর রক্ত প্রয়োজন হলে সরকারি ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নিতে গিয়ে বিভ্রান্তির শিকার হতে হচ্ছে। রোগীর রক্তের প্রয়োজন যে কোনও সময়ে হতে পারে। কিন্তু সরকারি ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে রক্ত নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবং বেশি মূল্য দিয়ে সরকারি ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে রক্ত সংগ্রহ করতে হয়। সাধারণ মানুষের স্বেচ্ছায় দেওয়া রক্ত সরকারি ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে দিবারাত্রি ও সর্বত্র বিনামূল্যে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
জয়দেব দত্ত
কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান
টিকাকরণ
আমি এক জন প্রবীণ নাগরিক। এই বয়সে দুটো টিকা আমাদের খুবই প্রয়োজন। এক, ইনফ্লুয়েঞ্জা, দুই, নিউমোনিয়া। কিন্তু দুটো টিকাই আমাদের মতো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। কারণ দু’টি টিকারই মূল্য খুব বেশি। সরকারকে অনুরোধ করব, যদি স্বল্প মূল্যে ওই দুটো টিকার ব্যবস্থা করে বা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যদি স্বল্প মূল্যে টিকাকরণের ব্যবস্থা করে, তবে আমাদের মতো প্রবীণরা খুবই উপকৃত হবেন।
অরূপ দত্ত গুপ্ত
কলকাতা-৪৭
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy