আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল বর্তমানে উন্নীত হয়েছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তথা মেডিক্যাল কলেজ হিসেবে। সম্প্রতি হাসপাতালের পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বাইরে থেকে দেখলে খুব ভাল লাগবে। সাধারণ মানুষের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও কিছুটা অগ্ৰগতি হয়েছে। কিন্তু এই হাসপাতালের সুপার স্পেশালিটি তকমা লাভের সঙ্গে পরিষেবার কোনও মিল নেই।
কিছু দিন আগে আমার এক বোন হার্নিয়া অপারেশনের জন্য এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। কিছু জটিলতার জন্য অপারেশন করতেও অনেকটা সময় লাগে। চিকিৎসকগণ ভীষণ আন্তরিক ও সহানুভূতিশীল ছিলেন। ওটি থেকে রোগীকে বার করা হয় দুপুর দেড়টা নাগাদ। এর কিছু ক্ষণ পরে তাঁরা চলে যান। এই ক্যাম্পাস থেকে এর পর রোগীকে ফিমেল ওয়র্ডে নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বার বার সংশ্লিষ্ট স্টাফ ও সিস্টারদের অনুরোধ করা সত্ত্বেও বোনকে ওটি-র সামনের লনে পড়ে থাকতে হয়। শেষ পর্যন্ত আমরা অধৈর্য হয়ে স্টাফদের এই অমানবিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হতে বাধ্য হই। তখন তাঁরা বলেন, এটা নাকি হাসপাতালের পরিকাঠামোর সমস্যা। অবশেষে উত্তপ্ত পরিস্থিতির চাপে ফিমেল ওয়র্ড থেকে গাড়ি আসে। সেখানেও দেখা দেয় অন্য আর এক সমস্যা। রোগীকে স্ট্রেচারে তোলা, সেখান থেকে লিফটে নীচে নামানোর পর অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা, আবার অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে বেডে তোলা— এই গোটা প্রক্রিয়ায় সাহায্য করার কোনও স্টাফ ছিল না। যিনি এর দায়িত্বে ছিলেন তিনি কেবল বাড়ির লোকেদের নির্দেশ দিয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিলেন। বুঝলাম, এই সব ক্ষেত্রে রোগীর সঙ্গে যথেষ্ট সংখ্যক বাড়ির লোক না থাকলে তাঁদের আরও দুরবস্থা হয়।
সরকার যদি শুধুমাত্র বড় বড় ইমারত বানিয়ে নীল-সাদা রং করে হাত গুটিয়ে নেয়, তা হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিষেবার কোনও উন্নতি সম্ভব নয়। চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতির জন্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করে শুধু সুপার স্পেশালিটি-র বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষের কল্যাণ হয় না। আর কবে সরকারের বোধোদয় হবে?
সন্দীপ সিংহ, হরিপাল, হুগলি
ক্যাব দৌরাত্ম্য
কর্মসূত্রে আমাকে নিয়মিত কলকাতা বিমানবন্দর থেকে প্লেন ধরতে হয় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শহরে যেতে। অন্যান্য দেশ বা এ দেশের অন্যান্য শহরে যাত্রীদের ক্যাব পাওয়ার জন্য তেমন কোনও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না, যা বর্তমানে কলকাতায় হয়। সব জায়গায় ওলা-উবর বা প্রাইভেট ট্যাক্সির জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে গাড়ি পাওয়া যায়। ভাড়াও নেয় সঠিক। কিন্তু কলকাতা বিমানবন্দরে সন্ধেবেলায় এবং সপ্তাহান্তে শনিবার-রবিবার কোনও ক্যাবের দেখা মেলে না। সবাই চায় প্রাইভেটে গাড়ি চালাতে। ফলে ৩০০ টাকার ভাড়া ৯০০ টাকায় পৌঁছয়।
একটি প্রি পেড ট্যাক্সি বুথ আছে বটে, তবে তারা দিনে-দুপুরেও ডাকাতি করে। রাজ্যের মানুষের কথা বাদ দিলেও বিদেশি ও অন্যান্য প্রদেশের মানুষদের কতখানি হয়রান হতে হয়, তা সহজেই অনুমেয়। আশা করব পরিবহণ দফতর এই বিষয়ে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা করবে যাতে আমাদের মতো নিত্যযাত্রী এবং অন্য যাত্রীরা আর্থিক ও সময়ের অপচয় থেকে মুক্তি পাই।
সৌমিত্র বিশ্বাস, কলকাতা-২৮
হয়রানি
নতুন রেজিস্ট্রেশন করানো থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশন-পুনর্নবীকরণ, আপগ্রেডেশন ট্রেনিং-এর মতো বিভিন্ন কাজের জন্য ফার্মাসিস্টদের পূর্ত ভবনে যেতে হয়। আমি নিজে এক জন ফার্মাসিস্ট। সেই সূত্রে ভবনের বেশ কিছু সমস্যার কথা জানাতে চাই। পূর্ত ভবনে ফার্মেসি-র যে কোনও কাজ করাতে গেলে ভোরবেলা থেকে লাইন দিতে হয়। অথচ, কাজকর্ম শুরু হয় বেলা ১১টা থেকে। মাঝের সময়টা আমাদের অপেক্ষা করতে হয় মাটিতে বসে বা দাঁড়িয়ে। ন্যূনতম বসার জায়গাটুকুও পাওয়া যায় না। মেদিনীপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া কিংবা উত্তরবঙ্গের মতো দূরদূরান্ত থেকে যাঁরা আসেন, তাঁরা আগের দিন এসে পরের দিন ভোরবেলা থেকে লাইন দেন। যাঁরা ওখানে কাজ করেন তাঁদের ব্যবহারও অত্যন্ত খারাপ। কোনও কথা এক বারের বেশি দু’বার জিজ্ঞাসা করলে উত্তর দেন না। ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে কোনও উত্তর পাওয়া যায় না। এ দিকে, ফার্মাসিস্টদের নতুন রেজিস্ট্রেশন, পুনর্নবীকরণ, আপগ্রেডেশন ট্রেনিং সংক্রান্ত খরচ আকাশছোঁয়া করা হয়েছে, অথচ সেই অনুযায়ী আমরা কোনও পরিষেবা পাচ্ছি না। বছরের পর বছর ধরে পূর্ত ভবনে ফার্মাসিস্টদের নিয়ে এই চূড়ান্ত প্রহসন বন্ধ হোক।
শাশ্বত মুখোপাধ্যায়, দমদমা, হুগলি
ট্রেনে দেরি
সম্প্রতি আমি আমার পরিবার নিয়ে কান্ডারি এক্সপ্রেসে দিঘা বেড়াতে যাই। ট্রেনের নির্ধারিত সময় ছিল দুপুর দুটো পঁয়ত্রিশে। সেই ট্রেন ছাড়ল বিকেল পাঁচটায়। ফলে এই গরমে সকলকেই প্রচণ্ড অস্বস্তিতে কাটাতে হল। এই একই ট্রেনে আমাদের দিঘা থেকে ফেরার টিকিট ছিল দু’দিন পরে। ট্রেনের সময় ছিল সন্ধে ছ’টা পঁচিশে। সেই ট্রেন ছাড়ে রাত আটটা বেজে পাঁচ মিনিটে। যে ট্রেনের রাত ন’টা পঁচিশে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছনোর কথা, সেটি রাত বারোটায় পৌঁছল সাঁতরাগাছি স্টেশনে। এর পর স্টেশনে ঘোষণা করা হল যে, ট্রেনটি ওই রাতে আর হাওড়া স্টেশনে যাবে না। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ দুঃখিত। বলা বাহুল্য, সাঁতরাগাছি এমন একটি স্টেশন যেখানে একটু রাত হলেই কোনও কিছুই পাওয়া যায় না। সেই সময় স্টেশনে টিটি বা স্টেশন মাস্টার কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ট্রেন থেকে নামা যাত্রী ছাড়া আর কোনও দোকান বা মানুষজন প্ল্যাটফর্মে ছিল না। চলমান সিঁড়িও দেখতে পেলাম না। ট্রেনে খুব স্বাভাবিক ভাবেই পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক বয়স্ক নাগরিক ছিলেন। কোনও স্বাধীন সভ্য দেশে এটা কি অভিপ্রেত? দেশের রেল পরিষেবার যেখানে এমন হাল, সেখানে কী করে বুলেট ট্রেন চালু করার পরিকল্পনা করে সরকার?
বাসুদেব দাস,কলকাতা-২৮
বিদ্যুৎ সমস্যা
বারুইপুর সন্নিহিত কৃষ্ণমোহন হল্ট স্টেশনের কাছে একটি আবাসন রয়েছে। এই আবাসনে ২৮টি চারতলা বাড়ি রয়েছে, যার ফ্ল্যাট সংখ্যা ৪৪৮টি। প্রতি ফ্ল্যাটে ৫ জন মানুষ হিসাবে ২০০০-এর বেশি মানুষ বাস করেন। এই আবাসনে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা শোচনীয়। প্রতি দিন কমপক্ষে ৭-৮ বার লোডশেডিং হয় এবং প্রায়শই দু’-তিন দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। এর সঙ্গে মাঝে মাঝেই লো ভোল্টেজের সমস্যায় ভুগতে হয়। বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, প্রায় দু’হাজার মানুষ জল এবং বিদ্যুতের অভাবে কী রকম দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। গত তিন মাসে দু’বার দু’-তিন দিন আমাদের বিদ্যুৎহীন ভাবে কাটাতে হয়েছে।
আজকের আধুনিক সমাজব্যবস্থায় মানুষকে দিনের পর দিন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় বসবাস করতে বাধ্য করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত। যে সব আধিকারিকের অবহেলা, নিষ্ক্রিয়তার ফলে এতগুলি মানুষ যন্ত্রণা ভোগ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করা প্রয়োজন বলে মনে করি। যত দূর জানি নিকটবর্তী সাবস্টেশনের বদলে দূরবর্তী সাবস্টেশন থেকে এই আবাসনের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আবাসনের বিদ্যুৎ সমস্যা যথাসম্ভব শীঘ্র দূর করে নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে যথাযোগ্য ব্যবস্থা করার জন্য সরকার ও বিদ্যুৎ দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নিলয় চৌধুরী, বারুইপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy