এত সতর্কতা সত্ত্বেও নরওয়েতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর গ্রাফ ঊর্দ্ধমুখী।
গত দশ মাস ধরে ইউনিভার্সিটি অব ট্রমসোতে গবেষণার কাজে নরওয়েতে এসেছি। এখানে কমবেশি ৪০ জন ভারতীয় এবং ভারত-বাংলাদেশ মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন বাঙালির বসবাস। জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে এই শহরে প্রচুর পর্যটক আসেম নর্দান লাইট দেখতে। তাই সে সময় গোটা শহর জমজমাট। ২৬ ফেব্রুয়ারি এই শহরেই নরওয়ের প্রথম করোনা-আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। ইতালি-সহ সেন্ট্রাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তখন করোনা প্রবল ভাবে ছড়াতে শুরু করেছে। তখন থেকেই আমাদের বিভিন্ন হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে আলোচনা চলত, কি হবে? সেই ভয়টাই সত্যি হল।
১২ মার্চ দুপুর ১২টা নাগাদ আমি একটি কফি-শপে ছিলাম। শুনতে পেলাম, সন্ধ্যায় নরওয়ে সরকার অনির্দিষ্ট কালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করতে চলছে। তড়িঘড়ি করে মেয়ের স্কুলের দিকে রওনা হলাম। বাচ্চাগুলো বুঝতে পেরেছে কিছু একটা ঘটেছে। ওরাও বলছে কাল থেকে আর খেলতে পারব না। ইমার্জেন্সি পরিষেবা ও সুপারমার্কেট লকডাউনের আওতার বাইরে আছে। স্থানীয় লোকজন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। ইন্টারন্যাশনাল স্টোরে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে আসা শাকসব্জির ঘাটতি। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস এখনও পর্যন্ত সহজলভ্য।
রোজই ইন্টারনেটে দেখি এত সতর্কতা সত্ত্বেও দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর গ্রাফ ঊর্দ্ধমুখী। এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার ছুঁইছুঁই, মৃত ১৬১। ট্যুরিজম ও হোটেলে কর্মরত অনেক মানুষ আজ কর্মহীন, যদিও এখানকার সরকার তাঁদের জন্য আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেছে, এটাই স্বস্তি! ডিসেম্বর-জানুয়ারি দু-মাস অন্ধকার থাকার পর এই সময় বাইরের আলো দেখলে মনটা খুব ভাল হয়ে যায়। আমার সাত বছরের মেয়ে ও তার বন্ধুরা ইস্টার হলিডে এবং পয়লা বৈশাখের অনেক প্ল্যান করেছিল। কিন্তু, এ ভাবে ঘরবন্দি হয়ে আতঙ্কে দিন কাটাতে হবে, তা বোধহয় কোনও দিন ভাবিনি।
আরও পড়ুন: লকডাউনের সময় রোজগার হারিয়েছি, সঞ্চয়ও শেষ, সংসার চলবে কী করে?
কলকাতায় মা ও দাদার জন্য ভয় হয়। আমাদের দমদমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ড ‘স্পেশাল এরিয়া’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ডিসেম্বরে বাড়ি যাওয়ার কথা রয়েছে। শুধু মনে হয়, পরিবারের সবাই দেশে-বিদেশে সুস্থ রয়েছে, এটাই ‘শুভ’ নববর্ষের সূচনা, আর কিছু চাই না!
রত্নাবলী পাল, ট্রমসো, নরওয়ে
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy