রেললাইন মেরামতের কাজ চলছে। মেদিনীপুর স্টেশনের কাছে। মঙ্গলবার দুপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মন্ডল
সাধারণ বাজেটে রেল নিয়ে প্রত্যাশা ছিল অনেক। যখন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা টাটকা, কবচ ব্যবহার চালু করতে কয়েক কোটি টাকা লাগবে, সেই সময় বাজেট-বক্তৃতায় ভারতীয় রেলের কথা এসেছে মাত্র এক বার। অথচ, তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে প্রায় ফি সপ্তাহে রেল-দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকছে দেশ। রেলের নিরাপত্তা কিংবা নতুন ট্রেন ঘোষণা, বাজেটে কিছুই সে ভাবে উঠে আসেনি। ফলে রেলযাত্রীদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে। বন্দে ভারত, বন্দে মেট্রোর মতো নতুন ট্রেন, মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেনের ঘোষণার চমকই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দের বৃদ্ধি, যাতে রেলযাত্রা নিরাপদ এবং দ্রুত হতে পারে। এক দশক আগেও, আলাদা বাজেট বরাদ্দ ছিল রেলের জন্য। সেই কৌলীন্য মোদী জমানায় অনেক দিনই হারিয়েছে রেল মন্ত্রক। সাধারণ বাজেট রেলকে যথেষ্ট সহায়তা দিল কি? তবে রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, এ বারের রেল বাজেটে পরিকাঠামো খাতে খরচ ধরা হয়েছে ২.৬২ লক্ষ কোটি টাকা। যার মধ্যে ১ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হবে রেলের সুরক্ষা খাতে।
সিজ়ন টিকিটের দাম কমানোর প্রত্যাশা জাগানো সত্ত্বেও, বাজেট ঘোষণা দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও রেলওয়ের জন্য আধুনিকীকরণ এবং কাঠামোর উন্নয়নের ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু যাত্রী সুবিধার প্রতি মনোযোগের অভাব থাকলে উন্নতির আশা কম। বর্ধিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ট্রেনে বিলম্ব, ট্রেন বাতিল এবং ঘন ঘন ব্যাঘাতের মতো সমস্যাগুলির অবিলম্বে প্রতিকার করা দরকার।
অভিজিৎ রায়, জামশেদপুর
বেলাগাম দাম
এই অর্থবর্ষের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে ক্যানসারের তিনটি ওষুধের উপর আমদানি শুল্ক ১০% প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। ভুক্তভোগী মাত্রেই জানেন পরিবারের কোনও সদস্যের এই ওষুধগুলো প্রয়োজন হলে, সেই পরিবার কতটা অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েন। এমনকি কেউ কেউ অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ করতে বাধ্য হন। এই অসুখের অন্য যে সমস্ত ওষুধ আছে, তার দামের প্রতিও আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি। ওষুধের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের কাছে অসহনীয় হয়ে উঠছে। আমি কোনও এক কোম্পানির একটি বহুমূল্য ইনজেকশন ক্রয় করি আমার পরিবারের সদস্যের চিকিৎসার জন্য। মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধানে সেই ইনজেকশন ক্রয় করতে গিয়ে দেখলাম তার দাম প্রায় দেড় হাজার টাকা বেড়ে গিয়ে ১৪,৭৮৬ টাকা হয়েছে। আবার এই মাসেই পনেরো দিনের মধ্যে একটি কোম্পানির একটি ট্যাবলেট কিনতে গিয়ে দেখলাম পনেরোটা ট্যাবলেটের একটি পাতার দাম প্রায় ৬০ টাকা বেড়ে গেছে। ওষুধের একটা ব্যাচের মূল্য পরের ব্যাচেই এ ভাবে বৃদ্ধি পাওয়াতে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষ দিশাহারা হয়ে যাচ্ছেন। যে কোনও প্রক্রিয়ায় ওষুধের দাম যাতে কিছুটা কমে, তার জন্য সরকারকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ জানাই।
অজিত রায়, ব্যারাকপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
আনাজের বাজার
এ বছর জুন মাসের প্রথম থেকেই আনাজপাতির দাম ছিল আগুন। এখনও কিছু কিছু আনাজের দাম বেশ উঁচুতেই আছে। এই দামের ওঠা-নামা প্রায় সমস্ত কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এর কারণ নিহিত আছে কৃষিপণ্যের উৎপাদনের চরিত্রগত বৈশিষ্ট্যে। শিল্পজাত দ্রব্যের উৎপাদন চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে পারে, এবং সারা বছরই চলে। কিন্তু কৃষিপণ্যের উৎপাদন ক্রমাগত হয় না, সাধারণত একটি মরসুমে হয়। কৃষিপণ্যের জোগানের ঘাটতি হলে দাম বাড়ে, জোগান বাড়লে দাম কমে। চাষিদের কাছ থেকে ফড়েরা পণ্য ক্রয় করেন। এখানে চাষি, অর্থাৎ বিক্রেতার সংখ্যা বেশি। ক্রেতার সংখ্যা কম। পণ্যের দাম নির্ধারণে ফড়েদের প্রাধান্যই বেশি থাকে। তাঁরা আবার এই পণ্য বাজারে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। পাইকাররা আবার সেই পণ্য খুচরো ব্যবসায়ীদের বিক্রি করেন। দু’ক্ষেত্রেই দাম নির্ধারণে পাইকারদের ভূমিকাই বেশি প্রবল, সেটা লক্ষ করা যায়। খুচরো ব্যবসায়ীরা আবার সেই পণ্য যখন সাধারণ ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেন, দাম তখন আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। প্রতিটি ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয়ের সময়ে আবার পরিবহণ খরচ-সহ অন্যান্য খরচ যোগ হয়। জোগানে টান থাকলে চাইলে পাইকাররা কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করতে পারেন। বাজারে জিনিসের দাম তখন আরও বেড়ে যায়। তখনই সরকারকে পথে নামতে হয়। সরকার দাম কমানোর ব্যবস্থা নিলে শুরু হয় কালোবাজারি। আনাজপাতির বাজার সাধারণত সকালে বসে। খুচরো ব্যবসায়ীরা ভোরবেলায় কালোবাজার থেকে পাইকারদের কাছে বেশি দামে পণ্য কেনা শুরু করেন। বাজারে পণ্য বিক্রি করে খুচরো ব্যবসায়ীদের দিন অতিবাহিত হয়। সুতরাং তাঁদের ভোরেই বাজারে আসতে হয়। তাঁরা বেশি দামে পণ্য কিনে তার উপর লাভ রেখে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করেন। ভোক্তারা উঁচু দাম সম্বন্ধে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, “কী করব, আমাদের যে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।”
এর সমাধান দামের উপর সরকারি নজরদারি। দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হল জোগান বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া। যে সকল কৃষিপণ্য রফতানি হয়, সেগুলির যদি জোগানে ঘাটতি থাকে, তা হলে তাদের রফতানি নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
সুদেব কুমার ঘোষ, মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর
পুজোর টাকা
‘পুজোয় ৮৫ হাজার, আসছে বছর ১ লক্ষ’ (২৪-৭) সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এই পত্র। রাজ্যের ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে রাজ্য সরকার এ বার পুজোর অনুদান দিতে ব্যয় করবে ৩৬৫ কোটি টাকা। এ ছাড়াও আছে বিদ্যুতে ছাড় ৭৫%। সব মিলিয়ে রাজ্য কোষাগার থেকে কয়েকশো কোটি টাকা ব্যয় হবে। দেখা যাচ্ছে পুজোর অনুদান ও ছাড় দিতে রাজ্য সরকারের কোষাগারে টান পড়ে না। যত টান কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বেলা। এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে সরকারি অনুদান ছাড়া কি বাংলায় দুর্গাপুজো হয়নি? তা হলে এই সরকার কেন পুজোর অনুদান দিতে আসরে অবতীর্ণ হল? এর পিছনে কি ভোটের অঙ্ক লুকিয়ে আছে?
আরও একটি প্রশ্ন থেকে যায়। সরকারি অনুদান পাওয়ার পরেও পুজো কমিটিগুলি আবার কেন জনগণের দ্বারস্থ হবে পুজোর চাঁদার জন্য? একই জনগণ একই পুজো কমিটিকে দু’বার চাঁদা দেবে কেন? এটা কি অন্যায় নয়?
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল, কোন্নগর, হুগলি
শাস্তি হোক
সামাজিক পরিসরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের আর বোধ হয় প্রয়োজন নেই। না হলে কেন গত ১৪ অগস্ট রাতে কলকাতায় প্রাচীন সরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর করা হল, রোগী-পরিষেবাকে ব্যাহত করা হল? জরুরি বিভাগের রোগ নির্ণায়ক যন্ত্রপাতিও ভাঙা হয়েছে, যা এক অপূরণীয় ক্ষতি। চিকিৎসকরা যথার্থ কারণেই কর্মবিরতি ডেকেছেন, এটা যেমন সত্যি, তেমনই এটাও সত্যি যে, জরুরি পরিষেবা কোনও হাসপাতালেই একেবারে স্তব্ধ হয়নি। বিগত কয়েক দিনে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা, ডায়ালিসিস ইত্যাদি যা জরুরি, তার সবই হয়েছে। কাজ করেছেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা, সাহায্য করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেই পরিষেবা প্রদানকারী বিভাগকে যারা তছনছ করল, তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করুক রাজ্য প্রশাসন, সেখানে দলীয় পতাকা বা রং কিছু যেন অগ্রাধিকার না পায়।
শুভজিৎ বসাক, কলকাতা-৫০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy