‘করে ফির উসকি ইয়াদ’ (আনন্দ প্লাস, ৫-৬) শীর্ষক প্রতিবেদন পড়ে এই লেখা। বাসু চট্টোপাধ্যায়ের যখন ছোট পর্দায় পরিচালনা করেছিলেন, সেখানেও সফল হয়েছিলেন। ‘রজনী’, ‘কাক্কাজি কহেঁ’ বা ‘ব্যোমকেশ বক্সী’— তাঁর সব ধারাবাহিকই হিট।
তবে, তিনি কিন্তু অভিনয়ও করেছিলেন! ‘রজনী’র মতো প্রতিবাদী ধারাবাহিকের জন্য বাসু চট্টোপাধ্যায় যেমন সম্মান পেয়েছেন, তেমনই এই ধারাবাহিক নিয়ে এক মজার ঘটনাও তৈরি করা হয়েছে এক ছবিতে।
‘বেভারলি হিলস কপস' অবলম্বনে পঙ্কজ পরাশরের ১৯৮৭ সালের ছবি ‘জলওয়া’-তে নিজের ভূমিকায় একটি মজার দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়।
দৃশ্যটি ছিল এ রকম: নায়ক নাসিরুদ্দিন শাহ এবং তাঁর বন্ধু পঙ্কজ কপূরকে নিজের ট্যাক্সিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ট্যাক্সিচালক (অভিনেতা জাভেদ খান)। তিনি নিজের গাড়িতে বাসু চট্টোপাধ্যায়ের ছবিও রাখতেন, অবশ্য তিনি ‘চট্টোপাধ্যায়’-এর বদলে বলেছিলেন বাসু ‘ভট্টাচার্য’।
সেই ট্যাক্সিচালকের স্ত্রী বাসুবাবুর ফ্যান, কিন্তু তিনি নিজে বাসুবাবুর কট্টর বিরোধী, কারণ ‘রজনী’ ধারাবাহিকে বাসুবাবু ট্যাক্সিচালকের অন্যায় দেখিয়েছিলেন। ট্যাক্সি ড্রাইভার-রূপী জাভেদ খানের বক্তব্য ছিল, বাসুবাবু কি জানেন না, ট্যাক্সি চালাতে গেলে কত অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়, ছিনতাইকারী টাকা পর্যন্ত লুটে নেয়! তাই তিনি ঠিক করেছেন, বাসুবাবুকে সামনে পেলে তিনি উচিত শিক্ষা দেবেন!
ঘটনাক্রমে কিছু ক্ষণ পরেই, নাসিরুদ্দিন এবং পঙ্কজ কপূর নেমে যেতেই, গাড়িতে ওঠেন স্বয়ং বাসু চট্টোপাধ্যায়। ট্যাক্সি ড্রাইভারটি নাসির এবং পঙ্কজের কাছ থেকে যাচাই করে নেন, ইনিই ‘রজনী-ওয়ালে’ বাসুবাবু কি না! তার পর বাসুবাবুকে তাড়া করেন। বাসুবাবুও সোজা দৌড় দেন!
ছোট্ট একটি দৃশ্য, কিন্তু নিজের ভূমিকায় অভিনয় করে নিজেকেই স্বল্প বিদ্রুপ করে, কতটা ‘স্পোর্টিং স্পিরিট’-এর পরিচয় দিয়েছিলেন বাসু চট্টোপাধ্যায়!
শঙ্খশুভ্র চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা-৭৮
সাধু যুধিষ্ঠির
‘রজনীগন্ধার নিষ্কলুষ সুবাসের মতো...’ (আনন্দ প্লাস, ৫-৬) প্রতিবেদনে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের লেখায় ‘দো লড়কে দোনো কড়কে’ ছবির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাসুবাবুর এই বিস্মৃতপ্রায় ছায়াছবির বিষয়ে কিছু জানাতে চাই।
ছবিটি বাংলা ছবি ‘সাধু যুধিষ্ঠিরের কড়চা’ (১৯৭৪) অবলম্বনে নির্মিত। মূল কাহিনী রবি ঘোষের। তিনিই একলব্য ছদ্মনামে বাংলা ছবিটি পরিচালনা করেন। অভিনয়ে ছিলেন জয়া ভাদুড়ি, রবি ঘোষ, চিন্ময় রায় প্রমুখ। যুধিষ্ঠির ও সাধুচরণ নামে দুই ছিঁচকে চোরের কাহিনি।
‘দো লড়কে দোনো কড়কে’ ১৯৭৮ সালের ছবি। প্রযোজক ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও তাঁর পুত্র জয়ন্ত। অভিনয় করেন মৌসুমী, অমোল পালেকর, আসরানি প্রমুখ। ছবির সুরকার হেমন্ত, গীতিকার যোগেশ। ছবিতে মাত্র দুটি গান ছিল, আশা ভোঁসলে ও জেসুদাসের কণ্ঠে। ছবিটি ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করেনি, যদিও গল্পে ও আঙ্গিকে নতুনত্ব ছিল ।
শ্রীশঙ্কর ভট্টাচার্য
কলকাতা-৩৯
বাঁধ ভাঙে কেন
প্রসেনজিৎ সরখেলের ‘বার বার কেন এই দুর্গতি’ (৫-৬) শীর্ষক লেখাটির সূত্রে এই চিঠি।
পেশাগত কারণে ১৯৮০-৮২, তিন বছর সন্দেশখালি-২ ব্লকের খুলনায় ছিলাম। সেই সময়ের মধ্যে এক বার নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা হয়। বিডিও অফিস ও সন্দেশখালি থানার একতলায় জল ঢুকে যায়। রাস্তাঘাটও ডুবে যায়। কিন্তু নদীর এ পারে, খুলনায় কোনও বাঁধ ভাঙেনি।
তার কারণ হিসাবে দেখা গেল, খুলনা থেকে হাটগাছা হয়ে রায়মঙ্গলের পাড়ে শীতলিয়া পর্যন্ত, কোনও মাছের ভেড়ি নেই। আবার বৌঠাকরুন থেকে ভান্ডারখালি পর্যন্তও কোনও ভেড়ি নেই।
কিন্তু সন্দেশখালিতে নদীর বাঁধের পাশ দিয়ে পর পর অনেক ভেড়ি রয়েছে। ভেড়ির মালিকরা তাঁদের প্রয়োজনে অবৈধ ভাবে নদীবাঁধকে ব্যবহার করে, বাঁধের বিভিন্ন অংশ কেটে কাঠের তৈরি পয়ান বক্স বসান, যাতে নদীর জল ভেড়িতে ঢুকতে এবং বেরোতে পারে। এই ভাবে নদীর বাঁধ দুর্বল হওয়ার জন্যই সুন্দরবনবাসীদের বারবার খেসারত দিতে হয়।
ক্রমান্বয়ে ভেড়ি বৃদ্ধির কারণ হল, এখানকার সব জমিই একফসলা। ভারি বর্ষার জলে জমির নোনা না কাটলে ফসল হয় না। দরিদ্র চাষিরা এককালীন কিছু টাকা পাওয়ার আশায় মৌখিক চুক্তিতে ভেড়ি মালিকদের জমি দেন। চাষের জমি কমতে থাকে, ভেড়ি বাড়তে থাকে।
ভেড়ির মালিকরা রাতের অন্ধকারে অবাধে বাঁধ কাটলেও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয় না। সমস্যা তৈরি হলে তাঁদের টনক নড়ে।
রাসমোহন দত্ত
মছলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা
কথার ঠিক নেই
ভারতবাসী প্রথমে শুনল ‘‘পহলে জান, ফির জাহান।’’ তার মাস তিনেকের মধ্যেই সে কথায় বদল এল। ‘‘পহলে জিডিপি, বাদ মে জান।’’ যদিও এই কথা মুখে বলা হল না, কিন্তু সংক্রমণের লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে ওঠার মুহূর্তে মনে পড়ল, অর্থনীতির চাকায় মরচে ধরেছে, করোনা পাশে রেখে এ বার ওটাকে ঠিক করতে হবে।
আবার পথেঘাটে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে, কিন্তু কয়েক জন ডাক্তারবাবু বলছেন, এই সব কাপড়ের মাস্ক করোনা রুখতে কোনও কাজেরই নয়। এমনকি পাঁচশো টাকার N95 মাস্ক দু’দিনের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়।
আবার বিশ্ব্য স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ এক বার বলে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার করা চলবে না, আবার পরে বলে, ওটাই সঠিক ওষুধ!
কার কোন কথাটা ধরব তা হলে?
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়
মহেশতলা
পরিবেশের নায়ক
জার্মানির ফেলিক্স ফিংকবাইনার ন’বছর বয়স থেকেই পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়ে পড়েন। একটি দল তাঁর নেতৃত্বে নির্মিত হয়, ‘প্ল্যান্ট ফর দ্য প্ল্যানেট’। এখন বহু দেশে তাঁদের শাখা এবং তাঁরা লক্ষ লক্ষ গাছ লাগিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘বিলিয়ন ট্রি ক্যাম্পেন’-এর নেতৃত্ব দিয়ে (অন্য কিছু সংস্থার সাহায্যে) তাঁরা প্রায় ১৪ বিলিয়ন গাছ লাগিয়ে ফেলেছেন।
অসমের বাসিন্দা, যাদব ‘মলাই’ পায়েং ‘ফরেস্ট ম্যান অব ইন্ডিয়া’ নামে পরিচিত। ১৯৮০ সালে মাজুলি বদ্বীপের একটা অংশে বন দফতরের উদ্যোগে গাছ লাগানো শুরু হয়, তিন বছর পরে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন যাদব সেখানকার কর্মী ছিলেন, তিনি একা সেই জায়গাটিকে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে গাছ লাগিয়ে বিরাট জঙ্গলে পরিণত করেন। সেটি এখন বহু বন্যপশুর আশ্রয়স্থল। তাঁর নামেই বনটির নাম ‘মলাই ফরেস্ট’।
রাজস্থানের বিকানিরের ‘গভর্নমেন্ট দুঙ্গার কলেজ’-এর অধ্যাপক শ্যাম সুন্দর জিয়ানি বহু পরিবারকে অনুপ্রাণিত করেন ফলের গাছ লাগাতে এবং গাছগুলিকে নিজের পরিবারের সদস্য হিসাবে যত্ন করতে। ২০০৬ থেকে উদ্যোগ নিয়ে, আজ প্রায় আট লক্ষ গাছ লাগানো হয়েছে এ আন্দোলনের ফলে।
কেরলের এক জন পুলিশ ইন্সপেক্টর, বিদ্যাধরন, ৪০ বছর ধরে বিভিন্ন রাস্তায় প্রায় এক লাখেরও বেশি গাছ নিজ হাতে লাগিয়ে ফেলেছেন। তাঁর মেয়ের বিয়েতে আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের তিনি উপহার দিয়েছিলেন গাছের চারা।
বাস কন্ডাক্টর যোগানাথন, তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলায় প্রায় এক লক্ষ গাছ লাগিয়েছেন। কেরলের এক অটোরিকশা চালক, শ্যাম কুমার, তাঁর নিজের গ্রামে প্রায় ২৩,০০০ গাছ লাগিযেছেন।
নজরুল হক
লালবাগ, মুর্শিদাবাদ
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy