Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Virat Kohli

বরং আমাদের হৃদয় শাসন করুক ক্রিকেট মাঠের বিরাট-মহাকাব্য

ওটা ভারত-পাক ম্যাচের পর ধর্মের ভিত্তিতে ভিলেন খোঁজার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য এবং অপচেষ্টাকে খুঁতহীন কভার ড্রাইভে বাউন্ডারির ওপারে পাঠানোর হাসি।

হাসে ক্যান বিরাট কোহলী?

হাসে ক্যান বিরাট কোহলী? ফাইল ছবি

অনিন্দ্য জানা
অনিন্দ্য জানা
শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২১ ১০:৩০
Share: Save:

বিরাট কোহলী হাসে ক্যান?

লজ্জা করে না! সবে ১০ উইকেটে দুরমুশ হয়েছে পাকিস্তানের কাছে। সারা ভারত মূহ্যমান। লোকে নতুন টিভি-র ‘দিওয়ালি অফার’ দেখছে পুরনো টিভি ভাঙবে বলে! আর ওই লোকটা, গো-হারা হেরো দলের অধিনায়ক, মাঝমাঠে দাঁড়িয়ে হ্যা-হ্যা করে হাসছে! লজ্জা করে না!

হাসে ক্যান বিরাট কোহলী?

না-হয় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছে। না-হয় কিছু নয়নাভিরাম কভার ড্রাইভও মেরেছে। না-হয় তার জন্যই ভারত মোটামুটি সম্মানজনক দেড়শো রানে পৌঁছেছে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে। কিন্তু ম্যাচ তো জেতাতে পারেনি! তার পরেও তার হুঁশ হয় না? হ্যাঁ গা, তার হুঁশ হয় না? সে ওমনি হাসে ক্যান?

লোকে বলছে, হেড কোচ রবি শাস্ত্রীর এটাই শেষ টুর্নামেন্ট। আর বিরাট কোহলী তো এই টুর্নামেন্টের পরেই টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবে বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। এখন তো ওদের নোটিস পিরিয়ড। নোটিস পিরিয়ডে তো কর্মচারীরা এ ভাবেই গা-আলগা দিয়ে কাজ করে। শুনে অপমানিত লাগে না? গা জ্বালা করে না?

তবু বিরাট কোহলী হাসে! ক্যান হাসে সে?

লোকে ধুয়ে দিচ্ছে চারদিকে। বলছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দল নির্বাচনটাই ঠিকঠাক হয়নি। আইপিএলের সমস্ত নন পারফর্মারকে টিমে নেওয়া হয়েছে। অন্যায় ভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে শিখর ধবন, দীপক চাহার, শার্দূল ঠাকুর, রাহুল চাহার, মহম্মদ সিরাজ, যুজবেন্দ্র চাহালদের। ছিছিক্কার চারদিকে।

তবু কোহলী হাসে। ক্যান হাসে? এত সাহস!

কী ভেবেছিল? খরগোশ আর কচ্ছপের দৌড় হচ্ছে? খরগোশ হয়ে কচ্ছপকে খানিকটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে? বিশ্বকাপে কচ্ছপ পাকিস্তানের ওই তো রেকর্ড! গত ১২ বারে ১২ বারই খরগোশ ভারতের কাছে হেরেছে। ১৩ তম ম্যাচটা জিতে যাবে! হাঃ! আরে মশাই, এই দৌড়টা শুরুর আগে খরগোশ ভেবেছিল, সে-ই জিতবে। যদিও বাকিরা জানত, দৌড় কঠিন। কিন্তু খরগোশ স্রেফ আত্মতুষ্টিতে মাঝপথে ঘুমিয়ে পড়ে ম্যাচটা কচ্ছপের হাতে তুলে দিয়ে গেল। কিন্তু তা-ও খরগোশের কোনও হেলদোল চোখে পড়ল না।

 পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র অর্ধশতরান করেছিলেন কোহলী।

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র অর্ধশতরান করেছিলেন কোহলী। ফাইল ছবি।

তবু বিরাট কোহলী হাসে! ক্যান হাসে? হাসে ক্যান?

কলঙ্কের ইতিহাসে নাম উঠে গিয়েছে। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত একমাত্র ভারত অধিনায়ক। আজহারউদ্দিন, সৌরভ, ধোনি— আর কারও এই অভূতপূর্ব এবং অবাঞ্ছিত রেকর্ড নেই। হার তো না হয় হার। খেলায় হারজিত থাকেই। কিন্তু কী ভাবে হার! ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনওদিন কোনও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১০ উইকেটে হারেনি দল। সেটা রবিবারই প্রথম হল। মাজা-ভাঙা হার!

তবু কোহলী বিরাট হাসে! ক্যান?

টস হেরে পরে বল করতে হলে রাতের দিকে শিশির পড়বে, এটা কি এই প্রথম জানা গেল! আইপিএলে আমিরশাহিতে তো এটাই হয়েছে। আর বিশ্বমানের দল কেন এ সব ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে মাঠে নামবে? টসের উপর তো কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। ডব্লিউ জি গ্রেসের তত্ত্বের পিন্ডি চটকে (টসে জিতলে সবসময় আগে ব্যাট) ইদানীং প্রায় সব দলই আগে ফিল্ডিং নিয়ে নেয়। যাতে বোর্ডটা দেখেশুনে খেলাটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু টসে হেরে পরে ফিল্ডিং করতে হলেই একটা দল এইরকম ল্যাগব্যাগে হয়ে পড়বে? তা-ও চিরশত্রুর বিরুদ্ধে?

কিন্তু তা-ও তাদের অধিনায়ক বিরাট কোহলী হাসে! ক্যান হাসে?

দলের নির্ভরযোগ্য এবং তারকা অলরাউন্ডার ম্যাচ শুরুর আগে টিভি-তে প্রকাশ্যেই বলে (ভাবা যায়!), সে পুরো ফিট নয়। পাকিস্তান ম্যাচে বল করতে পারবে না। তবু তাকে স্রেফ ব্যাটার হিসেবেই দলে রাখা হয়। যে কি না গোটা আইপিএলে ব্যাট হাতে রান পেয়েছে মাত্রই একটা ম্যাচে! পাকিস্তান ম্যাচেও যথারীতি ব্যাটে ব্যর্থ। উল্টে জোরে বলে কাঁধে চোট পেয়ে ফিল্ডিংটাও করতে পারল না। অথচ তাকে নেওয়ার জন্য একজন বোলার কম নিয়ে নেমেছিল দল।

তবু বিরাট কোহলী হাসে! হাসে ক্যান?

ম্যাচ হেরে সাংবাদিক বৈঠকে ট্যারা প্রশ্নে মেজাজ হারায়। শুরুতে রোহিত শর্মার বদলে ইশান কিষাণের মতো তরুণ রক্ত আনা উচিত কি না প্রশ্ন করায় সাংবাদিককে বলে, ‘‘বিতর্ক তৈরি করতে চাইছেন কেন? সেটা বললে আগে থেকে তৈরি হয়ে আসতাম না-হয়।’’ তবে তো হেরে গায়ে জ্বালা ধরেছে। তা হলে মাঠে কেন ওই হাসি?

ক্যান? ক্যান? ক্যান? বিরাট কোহলী হাসে ক্যান?

রবিবার গভীর রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের দৃশ্যটা এখনও চোখে লেগে আছে। থাকবে সারা জীবন। যদি না ভবিষ্যতে এর চেয়েও কোনও গভীরতর কোনও মুহূর্ত এসে হাজির হয় ভারত-পাক হাইভোল্টেজ ম্যাচে।

না-হয় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছে। না-হয় কিছু নয়নাভিরাম কভার ড্রাইভও মেরেছে।

না-হয় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছে। না-হয় কিছু নয়নাভিরাম কভার ড্রাইভও মেরেছে। ফাইল ছবি।

স্টেডিয়ামের সিলিং থেকে ঠিকরে আসা আলোয় ভেসে যাচ্ছে সারা মাঠ। গ্যালারিতে গঙ্গাফড়িং-সবুজ রংয়ের ঢেউ খেলছে অবিরল। ম্যাচ-জেতানো পাকিস্তানি ব্যাটার রিজওয়ানের কাঁধে হাত রেখেছেন পরাভূত ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলী। মুখে হাসি। যে হাসিতে অদৃশ্য প্রশংসাটা স্পষ্ট পড়া যাচ্ছিল— শাবাশ ছোটভাই!

কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে পাক অধিনায়ক বাবর আজম। নিপুণ দক্ষতায় (ইংরেজিতে বললে বলতে হয় ‘প্রিসিশন’। মাফ করবেন, নিজেরই অক্ষমতা যে, কাছাকাছির জুতসই বাংলা শব্দ মনে পড়ছে না) যিনি রিজওয়ানের সঙ্গে ম্যাচটা বার করে নিয়ে গেলেন। তাঁর হাতেই শাপমুক্তি ঘটল পাকিস্তান ক্রিকেটের। বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে বরাবর যাদের ফেকলু করা হয়েছে, যাদের সমর্থকদের ব্যঙ্গ করে ‘মওকা-মওকা’ বিজ্ঞাপন বানিয়ে পয়সা লুটেছে চ্যানেল, তারাই মরুশহরে জয়ের মরূদ্যান তৈরি করে দিয়ে গেল রবি-রাতে।

কেন হারল ভারত?

হারল? ঠিক লিখলাম? নিরামিষ, নিরাপদ এবং মিহি ‘হারল’ বলে কি বোঝানো যায় এই নাকঘষা খাওয়ার অভিঘাত এবং অভিজ্ঞতা? আর তা-ও হল কি না এমন তারকাখচিত দল নিয়ে! যেখানে খেলেন পৃথিবীর সেরা ব্যাটার (বিরাট কোহলী), সেরা বোলার (যশপ্রীত বুমরা) এবং সেরা ফিল্ডার (রবীন্দ্র জাডেজা)। তার সঙ্গে যোগ করুন আইপিএল-দাপানো রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল, সূর্যকুমার যাদব। এই যৌবন ক্রিকেটতরঙ্গ রুধিবে কে?

রুধিল পাকিস্তান। কোন পাকিস্তান? যাদের একজন ক্রিকেটারও আইপিএল খেলেন না। নিরাপত্তার ওজর দেখিয়ে যাদের দেশে ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের মতো ক্রিকেট-কুলীন দেশ খেলতে যায় না। বিশ্বক্রিকেট যাদের কার্যত অন্ত্যজ করে রাখে। পাকিস্তান সুপার লিগ নামক একটা টুর্নামেন্ট হয় বটে। কিন্তু সেখানেও খুব বেশি প্রথমসারির বিদেশি ক্রিকেটাররা খেলতে যান না। কোণঠাসা হতে-হতে যাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। সামাজিক, কূটনীতিক, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যারা সারা পৃথিবীর দৃষ্টিতে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়ছে, সেই দেশটার ক্রিকেটের সঙ্গেই ক্রিকেটাররাও প্রায় ব্রাত্য হতে বসেছিলেন।

টসে হেরে পরে ফিল্ডিং করতে হলেই একটা দল এইরকম ল্যাগব্যাগে হয়ে পড়বে? তা-ও চিরশত্রুর বিরুদ্ধে?

টসে হেরে পরে ফিল্ডিং করতে হলেই একটা দল এইরকম ল্যাগব্যাগে হয়ে পড়বে? তা-ও চিরশত্রুর বিরুদ্ধে? ফাইল ছবি।

সেই আপাত-অজ্ঞাতকুলশীল পাকিস্তান ‘আত্মনির্ভর’ ভারতকে ওই ভাবে মেরে দিয়ে গেল! রোহিত-রাহুল দুই তুখড় ব্যাটার শাহিন আফ্রিদির ডেলিভারির স্রেফ এক্সপ্রেস গতিতে ‘বিট’ হলেন (সম্ভবত চোখে দেখতেও পাননি। রাহুলের ব্যাট নামানো দেখে সেটাই মনে হল)। প্রথম স্লিপের কাছ বরাবর উড়ে গিয়ে শূন্যে সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচ নিলেন উইকেটকিপার মহম্মদ রিজওয়ান। প্রথম বল থেকে জানকবুল ফিল্ডিং করল গোটা পাকিস্তান দল। যাদের দেখে মনে হল, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটা দেওয়াল বোধহয় দরকার হয়। সেখানে প্রতিপক্ষ বক্সারের মার খেতে খেতে চ্যাম্পিয়ন বক্সারের রিংয়ের দড়িতে ইচ্ছাকৃত পিঠ ঠেকিয়েই পরমুহূর্তে ছিলে-ছেঁড়া ধনুকের মতো প্রতিপক্ষের দিকে ছিটকে-আসা কৌশল ‘রোপ আ ডোপ’ প্রয়োগ করে ফিরে আসা যায়। ওই এক একটা দেওয়াল এক একটা চরিত্রের জন্ম দেয়।

যেমন জন্ম দিয়ে গেল রবিবার রাতের বিরাট কোহলীর। যিনি হারেও পরাজিতের গরিমা হারান না। যিনি মহারণে পরাভূত হয়েও দেশের ক্রিকেট রাষ্ট্রদূতের কাজ করেন। যিনি যথার্থ পেশাদারের মতো বলেন, ‘‘ওরা আমাদের সমস্ত বিভাগে টেক্কা দিয়েছে। প্রথম থেকেই। আমরা দাঁড়াতেই পারিনি।’’ যিনি প্রতিপক্ষ পেশাদারের কাঁধে রাখেন প্রশংসার হাত। যিনি ক্রিকেটে হেরে গেলেও উপমহাদেশের হৃদয় জিতে নেন এই একটা হাসিতে।

তিনি কি জানতেন, তাঁর দলের এক ম্যাচ-জেতানো বোলার সেদিন মার খেয়ে যাওয়ায় তাঁকে তাঁরই দেশের মানুষের একাংশ কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করবে? স্রেফ সেই ক্রিকেটার ধর্মে মুসলমান বলে? জানতেন, পাকিস্তানের কাছে ম্যাচ হেরে তাঁর দেশবাসীর একাংশ ‘খলনায়ক’ খুঁজতে বসে বেছে নেবে মহম্মদ শামিকে? বলা হবে, শামি মুসলমান বলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মন লাগিয়ে বল করেননি?

আমাদের হৃদয় শাসন করুক ক্রিকেট মাঠের ওই বিরাট-মহাকাব্য।

আমাদের হৃদয় শাসন করুক ক্রিকেট মাঠের ওই বিরাট-মহাকাব্য। ফাইল ছবি।

জানতেন বোধহয়। সম্ভবত সেজন্যই রিজওয়ানের কাঁধে বড়দার মতো হাত রেখে ওই হাসিটা হেসেছিলেন। ঔদার্যের হাসি। পেশাদারকে পেশাদারের কুর্নিশ জানানোর হাসি। দু’দেশের মধ্যে খানিক আরোপিত এবং অনেকখানি অবাঞ্ছিত টেনশন কাটানোর হাসি। ভারত-পাক ম্যাচের পর ধর্মের ভিত্তিতে ভিলেন খোঁজার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য এবং অপচেষ্টাকে খুঁতহীন কভার ড্রাইভে বাউন্ডারির দড়ির ওপারে পাঠানোর হাসি। এটা আসলে হাসি নয় বিবৃতি।

প্রতিভাশালী ব্যাটার। পরিশ্রমী পেশাদার। আধুনিক অ্যাথলিটের সমস্ত গুণ, অধ্যবসায় রপ্ত করেছেন তিল তিল করে। কিন্তু বিরাট কোহলীকে এমনিতে বড় আত্মমগ্ন মনে হয়। মনে হয়, সবসময় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। নিজের জন্য, নিজের মধ্যে ডুবে রয়েছেন।

সেই রাতে প্রথম মনে হল ‘জনগণমন অধিনায়ক’। মনে হল, বেশ করেছেন হেসেছেন! বেশ করেছেন জয়ী প্রতিপক্ষের কাঁধে হাত রেখেছেন। মনে হল ওই হাসি, ওই বড়ভাই সুলভ ভঙ্গির কলমে পড়শি দুই দেশের জন্য একটা আস্ত মহাকাব্যই লিখে ফেললেন বুঝি।

গর্ব হল। মনে হল, শামিকে কদর্য আক্রমণ করার লোকগুলো আছে বটে এ দেশে। কিন্তু আমাদের একটা বিরাট কোহলীও আছে।

ধর্ম, রাজনীতি আর তার ভিত্তিতে বিদ্বেষ-বৈরিতা নিপাত যাক! বরং আমাদের হৃদয় শাসন করুক ক্রিকেট মাঠের ওই বিরাট-মহাকাব্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Virat Kohli Indian Cricket T20 World Cup 2021 pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy