নিরাপত্তার নামে ঢুঁঢু, অথচ সংসদীয় কমিটির বৈঠক কাশ্মীরে ফেলার ধুম! পহেলগাম-কাণ্ডের পর সরকারকে এই মর্মে ঠেস দিয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। নাশকতার পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্ধারিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক বাতিলও হয়েছে। তবে হামলার আগের দিন কাশ্মীরে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি-র (পিএসি) বৈঠকে রাজ্যের দাবিদাওয়ায় সরব ছিলেন প্রবীণ বঙ্গসাংসদ সৌগত রায় ও সুখেন্দুশেখর রায়। সূত্রের খবর, সিএজি-র রিপোর্ট উল্লেখ করে সৌগত বলেন, উদয়পুর-দিঘা-শঙ্করপুর-তাজপুর-মন্দারমণি-ফ্রেজ়ারগঞ্জ-বকখালি-হেনরি দ্বীপ সৈকত সার্কিটে ৬৫ কোটি টাকা খরচের উল্লেখ হয়েছে। অথচ, এলাকায় প্রকল্পের চিহ্নই নেই। সুখেন্দুশেখর প্রশ্ন তোলেন, মালদহের জগজীবনপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারি বৌদ্ধ পুরাক্ষেত্রকে কেন বৌদ্ধ সার্কিটে যুক্ত করা হয়নি? কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপাল দু’টি বিষয়েই লিখিত উত্তর দেওয়ার জন্য পর্যটন মন্ত্রকের সচিবকে অনুরোধ করেন।

ঐতিহাসিক: খননের ফলে প্রাপ্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারি বৌদ্ধ মহাবিহার।
এনডিএ-র সুখী সংসার
২০২৪-এ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার থেকে অনেক আগেই বিজেপির রথ থেমে যাওয়ায়, টিডিপি এবং জেডি(ইউ)-নির্ভরতা নরেন্দ্র মোদীর কাছে প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠবে কি না সে নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। সরকারের এক বছর পূর্তি হতে চলল, শরিক সংসার নিয়ে এনডিএ চলছে দিব্য গড়গড়িয়ে। জোটকে আরও জোরালো করতে চন্দ্রবাবু নায়ডু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৯ মে রাজ্যসভার খালি হওয়া আসনটির (ওয়াইএসআরসিপি-র বিজয়সাই রেড্ডি নিজের মেয়াদ পূরণের তিন বছর আগেই পদত্যাগ করেছেন) উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীকে সমর্থন করবেন। বিজেপির কে আসনটি থেকে লড়বেন, চলছে জল্পনা। প্রথম বাছাই, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। দুই, তামিলনাড়ুর প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি কে অন্নামালাই। গ্ল্যামার-সূচকে স্মৃতি কিছুটা এগিয়ে থাকলেও বিজেপির অন্দরমহল বলছে, দু’পক্ষেরই পাল্লা ভারী। কিন্তু যিনিই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন, বিজেপির সেই প্রার্থীর পাশে আছে টিডিপি।
গুরুত্ব কাদের
জাতপাত ভিত্তিক জনগণনার দাবিতে দিল্লিতে সবচেয়ে সরব কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী থেকে মল্লিকার্জুন খড়্গে বিষয়টি নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন এক বছরেরও বেশি। ওবিসি, তফসিলি জতি ও জনজাতি সংখ্যা অনুযায়ী সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিনিধিত্বের দাবি এটি। কিন্তু কংগ্রেসের ভিতরেই সামাজিক ভাবে বঞ্চিত এই সম্প্রদায়ের কিছু নেতা কর্মী অভিযোগ তুলেছেন, দলের দেশজোড়া অনুষ্ঠানে অগ্রাধিকার পায় উচ্চবর্ণ। দলের এক ওবিসি কর্মীর কথায়, “যাঁরা ন্যাশনাল হেরাল্ড-এর বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন তাঁদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে শীর্ষ দলীয় নেতৃত্ব। এক বার দেখলেই বুঝতে পারবেন, ওবিসি তফসিলিদের সুযোগ কেড়ে উচ্চবর্ণকেই কী ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেখানে। এমনটাই চলছে।”
মহাতারকা
সদ্য তালকাটোরা স্টেডিয়ামে হয়ে গেল সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সম্মেলন। উপস্থিত ছিল বেশ কিছু ইসলামিক সংস্থা। তারকা বক্তা এআইএমআইএম-এর প্রেসিডেন্ট আসাদউদ্দিন ওয়েইসি-র সে দিন আরও কিছু জরুরি কাজের তাড়া ছিল। তিনি আয়োজকদের সবিনয়ে জানান, তাঁকে আগে বলতে দেওয়া হোক, যাতে সত্বর প্রস্থান করতে পারেন। কিন্তু তাঁকে এমনটা না করতে অনুরোধ করা হয়। কারণ তাঁর বলা হয়ে গেলে স্টেডিয়াম অর্ধেক ফাঁকা হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা। অগত্যা আর কী করেন ওয়েইসি! অন্য অনুষ্ঠান বাতিল করে বাড়তি তিন ঘণ্টা ঠায় বসে রইলেন। একবারে শেষ দিকে বক্তৃতা দিলেন। আয়োজকরা যা ভেবেছিলেন ঘটলও তাই। দেখা গেল, তাঁর কথা শেষ হওয়ার পরই দর্শকাসন ফাঁকা!

বক্তা: আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।
সুখের সময় নয়
পহেলগামে তাণ্ডবের পরই যেন থমকে গেল রাজধানীর রুটিন সরকারি অনুষ্ঠানগুলিও। হামলার পর দিন, বুধবারই ছিল সরকারের জৈব রসায়ন বিভাগের অর্থে তৈরি এইচপিভি পরীক্ষার একটি নতুন কিট-এর উদ্বোধন। উপস্থিত থাকার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহের। জঙ্গি হামলার পরই স্থির হয় বন্ধ করে দেওয়া হবে অনুষ্ঠানটি। পরে কোনও ক্রমে সারা হয়। মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় সমস্ত ফুল। নিয়ম অনুযায়ী জিতেন্দ্র সিংহ নতুন কিটটির সঙ্গে একটিও ছবি তোলেননি, অন্য কারও সঙ্গে তো নয়ই। নতুন পণ্যকে বাজারজাত করা নয়, বিষয়টিকে দেখানো হয় বৈজ্ঞানিক গবেষণার পর্যালোচনা হিসাবেই।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)