Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Delhi Diary

দিল্লি ডায়েরি

ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে, আজ পর্যন্ত বিলকুল ফাঁকাই পড়ে রয়েছে তাপস পালের দিল্লির আস্তানা।

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০০:৩৩
Share: Save:

তাপস পালের নাম এখনও জ্বলজ্বল করছে

দিল্লির বিশ্বম্ভর দাস মার্গের গোমতী ব্লকে সাংসদদের ফ্ল্যাট। ১১ বছর আগে, প্রথম বার সাংসদ হয়ে আসার পর, তাপস পালের ঠিকানা ছিল ওই ব্লকেই। সেখানেই থেকেছেন টানা এতগুলো বছর। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে টিকিট পেলেন না। আর আজ তো যাবতীয় টিকিটের ঊর্ধ্বে চলে গিয়েছেন এই নেতা-অভিনেতা। কিন্তু মানুষ চলে গেলেও তার সবটুকু কখনওই চলে যায় না, গুণী মানুষের ক্ষেত্রে তো নয়ই। যেমন রয়ে গিয়েছে ও থেকে যাবে মূল স্রোতের জনপ্রিয় ছবি ‘দাদার কীর্তি’, ‘সাহেব’, ‘গুরুদক্ষিণা’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, বা তথাকথিত সমান্তরাল ছবি ‘উত্তরা’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, তেমনই তাপস পালের নাম এখনও জ্বলজ্বল করছে ওই ব্লকে। তাপস পাল, ফ্ল্যাট নম্বর: বি-৭০৪। ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে, আজ পর্যন্ত বিলকুল ফাঁকাই পড়ে রয়েছে তাপস পালের দিল্লির আস্তানা।

কাগজ কোথায় থাকবে

দিল্লির রাজপথের দু’পাশের প্রায় সব সরকারি দফতর ভেঙে নতুন করে তৈরি হবে। ঢেলে সাজানো হবে নতুন দিল্লি। মোদী সরকারের এই পরিকল্পনায় রীতিমতো বিপাকে পড়েছে ন্যাশনাল আর্কাইভ। রাজেন্দ্র প্রসাদ রোডে শাস্ত্রী ভবনের পাশেই ন্যাশনাল আর্কাইভ বা জাতীয় লেখ্যাগার। তাতে ব্রিটিশ জমানা থেকে নরেন্দ্র মোদীর জমানা পর্যন্ত যাবতীয় সরকারি নথিপত্র জমা রয়েছে। আর্কাইভের কর্তারা নগরোন্নয়ন মন্ত্রকে আর্জি জানিয়েছেন, আর্কাইভ ভেঙে আবার নতুন করে তৈরি করতে গেলে, মাঝের সময়ে এই বিপুল পরিমাণ মূল্যবান নথি ঠিকমতো রাখার আর জায়গা নেই। শোনা যাচ্ছে, আর্কাইভের আর্জি মেনে নিয়ে তা আপাতত অক্ষত থাকতে পারে।

আরে, আমি হাসছি!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটু বেশিই প্রশংসা করে ফেলেছিলেন তিনি। তা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। প্রাক্তন বিচারপতি, আইনজীবী মহল তাঁর সমালোচনায় মুখর। যাঁর বিরুদ্ধে তোপ, সেই বিচারপতি অরুণ মিশ্র কী বলছেন! কিছুই বলেননি। তবে ওই কাণ্ডের চার দিন পরেই তাঁর মুখে অবসরের কথা শোনা গেল। সে দিন এজলাসে বসতেই তাঁর সামনে আইনজীবীরা নানা মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানাতে শুরু করেন। তাঁদের রেজিস্ট্রারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিচারপতি মিশ্র বললেন, ‘‘আমি এখন অবসরের মেজাজে চলে এসেছি। আমাকে শান্তিতে অবসর নিতে দিন। আমি আর মামলা ঘাড়ে নিতে চাই না।’’ তাঁর তো অবসর নেওয়ার কথা ২ সেপ্টেম্বর। এখনও ঢের দেরি। এত আগে থেকেই অবসরের মেজাজে! তাঁর পাশে হাসিমুখে বসেছিলেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু। আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি তা দেখে মন্তব্য করেন, ‘‘মাই লর্ড আজকে হাসছেন।’’ বিচারপতি বসু তাড়াতাড়ি বলেন, ‘‘আরে, হাসছি? দেখুন, হাসা সব সময় ভাল। তাই না!’’

কাঁটায় কাঁটায়

দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বদলির নির্দেশ জারির ঠিক আগের রাতে নিজের বাড়িতেই আদালত বসিয়েছিলেন বিচারপতি এস মুরলীধর। দিল্লির হিংসা-পীড়িত মানুষের জন্য সাহায্যের নির্দেশ জারি করতে করতে রাত গড়িয়ে পৌনে দুটো। তাঁর বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ বললেন, ‘‘আগামিকাল সকালে আপনার বেঞ্চে প্রথম মামলায় আমি আইনজীবী। আমার মনে হয়, আপনি নিশ্চয়ই দেরি করে আসবেন।’’ বিচারপতি মুরলীধর তাঁর পরিচিত হাসি হেসে বললেন, ‘‘একেবারে নয়। সাড়ে দশটা মানে সাড়ে দশটা।’’ তার পর সঞ্জয়কে সাবধান করে জানিয়ে দিলেন, দেরি করলে পরের মামলা নিয়ে নেওয়া হবে। সঞ্জয় আর পরে সুযোগ পাবেন না। বিচারপতি মুরলীধর কথা রেখেছেন। এতটুকু দেরি করেননি। কাঁটায় কাঁটায় নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে ঢুকেছেন। বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য তোপ দেগেছেন। আর সে রাতেই তাঁর বদলির নির্দেশ জারি হয়ে গিয়েছে।

গুরুদেবই প্রেরণা

বরাবরই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুরাগী বলে পরিচিত অর্থসচিব রাজীব কুমার। আমলা হিসেবে ৩৮ বছর চাকরির পরে শুক্রবার অবসর নিলেন। কাজের শেষ দিনে তাঁকে অফিসে নিতে এসেছিলেন তাঁর স্ত্রী। রাজীব আগেভাগেই বেরিয়ে, উঠে পড়লেন নিজের লাল গাড়ির চালকের আসনে। স্ত্রীকে নিয়ে নিজেই ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরবেন। হেসে বললেন, সূর্যাস্তের আগে অফিস ছাড়ছি, তা-ও আবার স্ত্রীর সঙ্গে, এমন আনন্দের জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করে রয়েছি। একসঙ্গে এমন আরও অনেক ড্রাইভে যেতে হবে। পরের ইনিংস? জানালেন, গুরুদেবের বাণী তাঁকে সমাজসেবার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

প্রেমাংশু চৌধুরী, অগ্নি রায়

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Diary Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy