যশোবন্ত সিনহা, প্রণব মুখোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
অতীত: প্রয়াত দুই বিদগ্ধ রাজনীতিবিদ, যশোবন্ত সিংহ ও প্রণব মুখোপাধ্যায়
ব্রিটেনের রাজা অষ্টম হেনরির প্রধান সহকারী টমাস ক্রমওয়েল ছিলেন আধুনিক ইংল্যান্ডের অন্যতম রূপকার ও রাষ্ট্রনেতা। কিন্তু রাজার আদেশেই তাঁর মাথা কাটা গিয়েছিল। ইউপিএ জমানায় সংসদের বিতর্ক চলাকালীন এক বার সেই ক্রমওয়েলের বক্তৃতা উদ্ধৃত করেছিলেন যশোবন্ত সিংহ। তবে ক্রমওয়েলের নাম সরাসরি বলেননি। জবাবি বক্তৃতায় প্রণব মুখোপাধ্যায় যশোবন্তের আক্রমণের উত্তরে পাল্টা ক্রমওয়েলকেই উদ্ধৃত করলেন। বিতর্কের শেষে প্রণববাবুকে এসে জড়িয়ে ধরেছিলেন সদ্যপ্রয়াত যশোবন্ত। বলেছিলেন, “প্রণব, এটা আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। দেখছিলাম, আপনি ধরতে পারেন কি না। আপনি ঠিক ধরে ফেলেছেন।” ঘটনাচক্রে দিল্লির যে সেনা হাসপাতালে প্রণববাবু মৃত্যুর আগে চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেই হাসপাতালেই যশোবন্ত দীর্ঘ দিন কোমায় ছিলেন। যশোবন্তের মৃত্যুর পরে প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা বাবার থেকে যশোবন্তকে নিয়ে শোনা গল্প স্মৃতির ঝুলি থেকে কাহিনিটি বার করেছেন। সংসদের বিতর্কের মান কোন সুরে বাঁধা ছিল, তা ফের টের পাওয়া গেল।
কৃত্তিবাসী রামদাস
‘কৃষি-বিল কাণ্ড’-এ বিরোধীরা সভা বয়কট করায় তাঁদের আসন শূন্য। পরিস্থিতি বেশ থমথমে। তার উপরে আলোচনার বিষয় বিতর্কিত শ্রম বিধি। এর মধ্যেও এই বিষয় নিয়ে রাজ্যসভায় বলতে উঠে সেই ট্রেডমার্ক স্বরচিত কবিতার রাস্তা ধরলেন রিপাবলিকান পার্টি অব ইন্ডিয়া-র সাংসদ তথা সামাজিক ন্যায় প্রতিমন্ত্রী রামদাস আটওয়ালে! শুরু করলেন, “মোদীজি নে লিয়া হ্যায় অপনে উপর সভি মজদুরো কা ভার, ইসি লিয়ে উনহে দেশ কে মজদুর করতে হ্যায় পেয়ার। সন্তোষ গঙ্গোয়ার হ্যায় আদমি সোবার, ইসি লিয়ে উনহে ডিপার্টমেন্ট মিলা হ্যায় লেবর। লেবর কো ন্যায় দেনে কি গঙ্গোয়ারজি মে হ্যায় হিম্মত, ইসি লিয়ে হম সব উনকো দেতে হ্যায় হিম্মত…।” শুনে সাংসদেরা অনেকে হেসে কুটিপাটি। মুখ টিপে হাসছেন মন্ত্রীও। কিন্তু কেউ তেমন একটা অবাক নন। কারণ, রামদাসের এই সবিশেষ ‘কৃত্তিবাসী প্রতিভা’-র সঙ্গে বিলক্ষণ পরিচিত তাঁরা।
প্রমাণের খোঁজে
সংসদের অধিবেশন শেষ। করোনার মধ্যে চলা প্রায় নিস্তরঙ্গ অধিবেশনে আচমকাই রাজ্যসভায় কৃষি বিল নিয়ে খণ্ডযুদ্ধ বেধেছিল। তার জেরে যে আট জন সাংসদ সাসপেন্ড হলেন, তাঁদের প্রায় সকলেই ছিলেন রাজ্যসভার কক্ষে। কিন্তু সিপিএমের তরুণ সাংসদ কেরলের কে কে রাগেশ ছিলেন গ্যালারিতে। সেখান থেকেই এই তরুণ তুর্কি এমন হট্টগোল বাধান যে, তাঁকেও সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। সংসদের অধিবেশন শেষে প্রায় সব সাংসদই নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন। কেউ কেউ অবশ্য কাজের প্রয়োজনে দিল্লিতে রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু রাগেশ চলে গিয়েছেন সোজা হরিয়ানা। যে বিলের বিরোধিতা তিনি করলেন, সেই কৃষি বিল পাশ হওয়ার ফলে চাষিদের কতখানি সমস্যা হচ্ছে, তা হাতেকলমে বুঝতে চান। অর্থাৎ, পরের বারের অধিবেশনের জন্য মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আগাম হাতিয়ারও জমা করছেন তিনি।
কীর্তিমান ওম
নায়ক: লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা
স্পিকার ওম বিড়লা। ফাইল চিত্র।
‘হিরো অব জ়িরো আওয়ার’। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা-র এই নতুন তকমা জুটেছে। সাংসদরা নিজেদের এলাকার কোনও সমস্যা বা জনস্বার্থের যে কোনও বিষয় সংসদে তোলার সুযোগ পান। লোকসভার বর্তমান স্পিকার ওম বিড়লা সব বিল পাশ হয়ে যাওয়ার পরেও অধিবেশনের সময়সীমা কিছুটা বাড়িয়ে সবাইকে বলতে দেওয়ার নয়া প্রথা চালু করেছেন। ফলে যে নতুন সাংসদরা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেওয়ার তেমন সুযোগ পান না, তাঁরাও সুযোগ পাচ্ছেন। সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী তাই স্পিকারকে ‘জ়িরো আওয়ারের নায়ক’ আখ্যা দিয়েছেন।
চার্চিলের ঋণ
ব্যাঙ্গালোর ক্লাবে এক জনের এখনও ১৩ টাকা বকেয়া। ১০০ বছর কেটে গেলেও সেই টাকা এখনও শোধ হয়নি। ১৮৬৮ সালে এই ক্লাব ব্রিটিশ অফিসারদের বিনোদনের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই ব্রিটিশ অফিসারদের এক জনের থেকেই এখনও ক্লাব ১৩ টাকা পায়। ক্লাবের সম্পত্তি কর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে সেই অনাদায়ী ১৩ টাকার অফিসারের নাম উঠে এসেছে। ক্লাবের খাতায় তাঁর নাম লেফটেন্যান্ট ডব্লিউ এল এস চার্চিল। যিনি পরবর্তী কালে গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যর উইনস্টন লেনার্ড স্পেনসার চার্চিল হিসেবে স্বনামধন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy