পরিমণ্ডল সুখকর নয় মোটেই। আর সে অসুখের কাল প্রলম্বিত হয়েই চলেছে। এই পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না। চলতে দিলে অনেক বড়সড় দুর্যোগ ঘনিয়ে আসবে অচিরেই। অতএব সবাই মিলে অবিলম্বে ইতি টানতে হবে অস্থিরতায়। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সেই লক্ষ্যেই পদক্ষেপটা করেছেন। এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ। রাজ্যের চারটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে ডেকেছেন রাজ্যপাল। নির্বাচন পরবর্তী হিংসা বাংলায় যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তার নিরসনকল্পে এবং রাজ্যে শান্তি ও সম্প্রীতি বহাল রাখার লক্ষ্যে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে রাজভবন জানাচ্ছে। গণতন্ত্রে আলোচনা সব সময়ই এক ইতিবাচক মেরুর বাসিন্দা। অত্যন্ত জটিল রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক জটও খুলে যায় আলোচনাতেই। অতএব রাজ্যে অনর্গল হয়ে পড়া নির্বাচন পরবর্তী হিংসা থামাতে চার বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আলোচনায় বসার উদ্যোগ দ্বিধাহীন ভাবে প্রশংসনীয়।
বাংলার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক পরিস্থিতি যে এই মুহূর্তে খুব স্বাভাবিক অবস্থায় নেই, সে কথা নাগরিকরাই সবচেয়ে ভাল বুঝছেন। প্রশাসকরা বা রাজনৈতিক নেতৃবর্গ বুঝছেন না, এমন হয়তো নয়। কিন্তু বুঝলেও সমস্যার সমাধান যে করতে পারছেন, এমন নয়। শাসক ও বিরোধীর মধ্যে টানাপড়েন ক্রমশ বাড়ছে, প্রতিদিন বাড়ছে। অনন্তকাল ধরে এ পথে হাঁটতে পারে না গণতন্ত্র।
মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলছেন, পুলিশের একাংশ কথা শুনছে না। মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবির সত্যাসত্য বিচার অন্য কোনও অবকাশে করা যাবে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলার অবনতি যে হয়েছে, তার গুচ্ছ দৃষ্টান্ত তুলে ধরা সম্ভব। সাম্প্রতিকতম বৃহৎ নিদর্শন হল রোগী মৃত্যুর জেরে নীলরতন সরকার হাসপাতালে দলবদ্ধ হামলা এবং জুনিয়র ডাক্তারদের দু’জনকে প্রায় প্রাণ সংশয়ের মুখে ঠেলে দেওয়া। সে ঘটনার জেরে আবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্র। পরপর দু’দিন বেনজির অচলাবস্থা লক্ষ্য করা গিয়েছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। অস্থিরতা আরও প্রলম্বিত হলে আর কোন কোন ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে, কল্পনা করাও কঠিন।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
এই অচলাবস্থা তথা নৈরাজ্যের ইঙ্গিতকে প্রতিহত করার দায় সবচেয়ে বেশি শাসকেরই। তবে দায় বিরোধীরও রয়েছে। অতএব সবাই মিলেই সুস্থিতিতে পৌঁছনোর পথটা খুঁজতে হবে। তার অবকাশটা রাজ্যপাল তৈরি করে দিলেন। রাজনৈতিক নেতৃত্বও পরিণত মনস্কতার পরিচয় দেবে বলে বাংলার মানুষ আশা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy