চাই সৎ প্রতিবাদ
বেশ কয়েক দিন ধরে দ্রেফুজ মামলায় এমিল জোলার ‘আমি অভিযোগ করি’ বক্তৃতার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এক একটা সংকটের সময় আসে যখন সংবেদনশীল শিল্পী সাহিত্যিকদের পথে নেমে আসতে হয়।
গত মাসাধিক কাল ধরে সাহিত্যিক চিত্রনির্মাতা ইতিহাসবিদ বিজ্ঞানীরা যে প্রতিবাদ করে চলেছেন, তা দুটি কারণে বলে আমার মনে হয়েছে। এক, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার পরিমণ্ডল গড়ে তুলবার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। দুই, মানুষের আত্মপ্রকাশের অধিকার খর্ব করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। প্রতিবাদ কাম্য। প্রতিবাদ দুই ক্ষেত্রেই উচিত।
আমার অবশ্য মনে হয় প্রতিবাদীদের প্রতিবাদে সততা থাকা দরকার। ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অসমের নেলিতে বা সম্প্রতি বড়োল্যান্ডে যখন ইসলাম ধর্মাবলম্বী শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল তখন হোমেন বরগোহাঞ্জারা মুখ খোলেননি। ১৯৮৪ সালে দিল্লিতে ভয়ংকর শিখ নিধনের ঘটনা ঘটেছিল। তার প্রতিবাদে নয়নতারা সহগল ১৯৮৬ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার না-নিতেই পারতেন। তাঁর আত্মীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বড় গাছ পড়লে মাটি কাঁপেই। সেই কথা কি ঠিক বলে মনে হয়েছিল নয়নতারার? কাশ্মীরে পণ্ডিতরা, মুজফফরনগরে মুসলমানরা আক্রান্ত হলে সংবেদনশীল শিল্পী সাহিত্যিকরা তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেননি।
আর আত্মপ্রকাশের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিষয়ে আমার একই অনুযোগ। যখন সলমন রুশদির দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’কে ভারত সরকার নিষিদ্ধ করে তখন সাহিত্য অকাদেমির সাধারণ পরিষদের মাত্র জনা দশেক সদস্যের স্বাক্ষর মিলেছিল প্রতিবাদপত্রে। আয়াতোল্লা খোমেনি যখন রুশদির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেন তখন কি কোনও ভারতীয় লেখক প্রতিবাদ করেছিলেন? ২০১২-র জানুয়ারিতে জয়পুরের সাহিত্য উৎসবে আমন্ত্রিত রুশদি যখন বাধাপ্রাপ্ত হয়ে যোগ দিতে পারেননি, তখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকামীরা কোথায় ছিলেন? কোথায় ছিলেন তাঁরা যখন বামফ্রন্ট শাসিত পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তসলিমা নাসরিনকে? কর্নাটকে কালবুর্গির আগে মহারাষ্ট্রে একই কারণে নরেন্দ্র দাভোলকর ও গোবিন্দ পানসারে খুন হয়েছেন। অনেক দেরিতে একমাত্র কালবুর্গির খুনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ উচ্চারিত হয়েছে।
এই সব খেয়াল করলে কিছু কিছু প্রতিবাদের সততায় সংশয় জাগে। অনেক প্রতিবাদের প্রেরণাই রাজনীতি— এটা ভাবতে না-পারলে সুখী হতাম।
অশ্রুকুমার সিকদার। শিলিগুড়ি
একদন্ত
পৃথ্বীশ চক্রবর্তী (‘দাঁত ভাঙল কী করে’, সম্পাদক সমীপেষু, ১-১০) ‘শিশুপালবধম্’ মহাকাব্যের গণেশের দাঁত ভাঙার একই কারণ উল্লেখ করেছেন। ‘ব্রহ্মবৈবর্ত’ পুরাণে গণেশের দাঁত ভাঙার অপর একটি কারণের উল্লেখ পাই। পরশুরাম ত্রিসপ্ত বার পৃথিবীকে নিঃক্ষত্রিয় করে মহাদেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবার জন্য কৈলাসে আসেন। তখন হরপার্বতী অন্তঃপুরে গভীর নিদ্রায় মগ্ন ছিলেন। দ্বাররক্ষক ছিলেন গণেশ। পরশুরাম ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে গণেশ বাধা দেন। এই বাধাদান পর্বে গণেশ ও পরশুরামের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। সেই লড়াইয়ে পরশুরামের কুঠারের আঘাতে গণেশের একটি দাঁত ভেঙে যায়। এই কারণেই গণেশের আর এক নাম একদন্ত।
রতন চক্রবর্তী। উত্তর হাবড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা
তৃষা হরিয়ে
‘প্রাণ ভরিয়ে’ (কলকাতার কড়চা, ২-১১) প্রতিবেদনে প্রাণ ভরিয়ে দৃশা হরিয়ে...’ গানটির উল্লেখ রয়েছে। এটি ভুল। গীতবিতান পূজা পর্যায়ভুক্ত গানটির প্রথম কয়েকটি শব্দ হল: ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’
নির্মিতি বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষক, বিবেকানন্দ মহিলা মহাবিদ্যালয়
সংশোধন
মনোজ মিত্রের লেখার সঙ্গে (‘বাঞ্ছারামচরিত’, রবিবাসরীয়, ১১-১০) ব্যবহৃত ছবিটি তুলেছেন সুকুমার রায়। ছবির সঙ্গে তাঁর নামটি প্রকাশিত হয়নি। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy