—ফাইল চিত্র
তাঁর দলের নেতাকে খুনের অভিযোগে জেলে রয়েছেন বিরোধী দলের এক নেতা। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে কার্যত সেই নেতার ‘প্রশংসা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি’র ওই নেতা আনিসুর রহমানের পক্ষে দলনেত্রীর সওয়ালে বিস্মিত পাঁশকুড়ার নিহত তৃণমূল নেতা কুরবান শাহের পরিবার।
সোমবার নন্দীগ্রামের তেখালিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা ছিল। সভার শুরুতে দলের নেতানেত্রীদের নাম উল্লেখ করেন দলনেত্রী। সেই সময়ই তাঁর মুখে উঠে আসে আনিসুরের নাম। মমতা বলেন, ‘‘আনিসুরকে অত্যাচার করে জেলে রেখে দিয়েছে।’’ পরে জমি আন্দোলন পর্বে নিজের নন্দীগ্রামের লড়াই প্রসঙ্গেও তৎকালীন তৃণমূল নেতা আনিসুরের কথা উল্লেখ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘সেদিন কিছুতেই আমাকে নন্দীগ্রামে যেতে দেবে না। আমি তখন আমার এক সহকর্মী যাকে অত্যাচার করে আজও জেলে রেখে দিয়েছে, পাঁশকুড়ার ছেলে আনিসুর, তাকে বললাম তোর স্কুটার বা বাইক আছে? কী করব বললাম না। বাইকে করে আমি আর ও বেরিয়ে পড়লাম।’’ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, আনিসুরকে অত্যাচার এবং তাঁকে জেলে বন্দি রাখার বিষয়ে তৃণমূল নেত্রীর নাম করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করেছেন।
এক সময়ের তৃণমূল নেতা আনিসুর বর্তমানে বিজেপি’তে। বছর দেড়েক আগে পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি তথা পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কুরবানকে খুনে তার নাম জড়ায়। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর দলীয় কার্যালয়েই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন কুরবান। তাতে মূল অভিযুক্ত হিসাবে আনিসুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে সময় তৃণমূলের বিধায়ক শুভেন্দুর কথা শুনে মাইশোরা এলাকায় দলের ভার নেন কুরবানের দাদা আফজল। কিন্তু তৃণমূলে নেতা আফজলের পরিবারই সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন যে, শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগের পরে আনিসুরকে ছাড়ানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুরের তিন নম্বর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে কুরবান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন সরকারি আইনজীবীকে সরিয়ে দেওয়ায় হয়। আর কয়েকদিন আগেই কুরবান-মামলার তদন্তকারী অফিসার অজয় মিশ্রকেও পাঁশকুড়া থানা থেকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।
এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রী মুখে আনিসুরের পক্ষে সওয়াল শুনে ক্ষুব্ধ আফজলেরা। তিনি শা বলেন, ‘‘আমার ভাই তৃণমূল করত বলেই এক বিজেপি নেতা তাঁকে খুন করল। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার কথা বলছেন। আনিসুরও এখন বিজেপিতে। এর পরেও কী করে মুখ্যমন্ত্রী একজন অভিযুক্ত বিজেপি নেতার হয়ে সওয়াল করেন? আমার ভাই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই রাজনীতি শুরু করেছিল।’’ পাশাপাশি, আফজলের বক্তব্য, ‘‘আমার মনে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে কেউ বা কারা ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। আমরা আজও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আস্থাশীল।’’
আনিসুরর ভাই তথা পাঁশকুড়ার কাউন্সিলর আশিকুর রহমান অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি আগেও বলেছি আমার দাদা নির্দোষ। একজন নেতা আমার ভাইকে ফাঁসিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সেই কথাই বলতে চেয়েছেন। কুরবান খুনের মূল দুই অভিযুক্ত কালু এবং শীতল এখনও ফেরার। আমরা বিশ্বাস করি সুবিচার পাবই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy