ঋষি কৌশিক
একের পর এক উৎসব পার হয়ে যাচ্ছে। ঘরবন্দি মানুষের নাগালের বাইরেই থেকে যাচ্ছে সব আনন্দ উৎসব। তার ওপর আমপান। মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। তবুও দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে আরও একটি উৎসব, জামাইষষ্ঠী।
‘কোড়াপাখি’ ধারাবাহিকের কাজ চললে এতকিছু ভাবার সময় পেতাম কিনা জানি না। কিন্তু এখন সময়টাএকেবারেই ভিন্ন। এই লকডাউন এবং সাইক্লোন-করোনা বিদ্ধস্ত বাংলায় জামাইষষ্ঠী পালন করা আদৌ সম্ভব কিনা জানা নেই। রাস্তায় বেরোনোটাই এই মুহূর্তে প্রায় অসম্ভব। বিপদেরও বটে। তবে এবছর সম্ভব না হলেও আগের বছরগুলিতে বেশ জমিয়েই দিনটি পালন করেছি।
আমার মনে হয় হিন্দু বাঙালির কাছে এই দিনটি বিশেষ একটি দিন। ফলে বাঙালি শাশুড়িরা দিনটি পালনের উদ্যোগ নেবেন সেটাই হয়তো স্বাভাবিক। প্রত্যেক বছরই জামাইদের নিমন্ত্রণ, নানা উপাচারে তাঁদের আপ্যায়ন করেন শ্বশুরবাড়ির মানুষেরা।আমিও আমন্ত্রণ পেয়ে থাকি প্রতি বছর।
আরো পড়ুন- আমি এখন পুরনো জামাই, কিন্তু আদর আজও কমেনি
কিন্তু এ বছর যা পরিস্থিতি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে। এ বছর লকডাউনের মধ্যে অনেক অনুষ্ঠান মানুষ পালন করতে পারেনি। জামাইষষ্ঠীওআগের মতো আড়ম্বর করে মানুষের পক্ষে পালন করা সম্ভব কিনা বলা মুশকিল।
এত কিছুর মধ্যেও আশা করি এই বিপর্যয়ের পরিস্থিতি দ্রুত কেটে যাবে। মানুষ আবার আগের মতো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। উৎসব পাবে তার পুরনো চেহারা। কিন্তু এই মুহূর্তে আড়ম্বর করে উৎসব পালন প্রায় অসম্ভব এবং খানিকটা দৃষ্টিকটূও। দেশের এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ মানুষ অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাও হয়তো বাঙালি শাশুড়িরা রীতি পালনের দিকেই ঝুঁকবেন। জামাইষষ্ঠী পালিত হোক বা না হোক শ্বশুর -শাশুড়ি তো নিজের বাবা-মায়ের মতোই। তাঁদের আশীর্বাদ সবসময় আমাদের মতো জামাইদের সঙ্গে আছে। সেই জায়গায় কোনও খামতি আগেও ছিল না, আজও থাকবে না। তাঁদের আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই বাড়িতে জামাইষষ্ঠী হবে, সেরকমই সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি।
দক্ষিণ কলকাতার বাড়ি থেকে আমার শ্বশুরবাড়ি খড়দা পর্যন্ত যাওয়া এই পরিস্থিতিতে সম্ভব নয়। আমার স্ত্রী দেবযানীর কিছুটা মন খারাপ। বাবার বাড়ির মানুষদের সঙ্গে জামাইষষ্ঠীকে দেখেই তার দেখা হয়। খাওয়াদাওয়ার থেকেও যা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা এবার আর হবে না।প্লিজ খাওয়া নয়, এ বারের জামাইষষ্ঠী মনে মনে আর ফোনে ফোনে সেরে নেওয়াই ভালো।
কলকাতা এবং কলকাতার বাইরে সাইক্লোনের পর যা অবস্থা তাতে রাস্তায় চলাচল করা সম্ভব নয়। করোনা এবং সাইক্লোনের বিপদ কেটে গেলেই না হয় পালন করা যাবে সব উৎসব। আপাতত সরকারি বিধি মেনে চলাই শ্রেয়। টান পড়েছে সব স্তরের মানুষের রুটি -রুজিতেও। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মানুষদেরও একই অবস্থা। দিন হিসেবে যারা পারিশ্রমিক পান তাঁদের অবস্থাও আজ খারাপ। পাশাপাশি চুক্তিতে যারা কাজ করেন তাঁদের অবস্থাও ভাল নয়। কাজ বন্ধ থাকায় অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন, সুদিনের অপেক্ষায় আমরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy