আমরা সেই চারজন
লেখক: জয় গোস্বামী
১৫০.০০
সিগনেট প্রেস
রানাঘাটে তাঁদের সেই পুরোনো বাড়ির ঘর, বারান্দা আর উঠোন-এর কাছে নতুন এই বইয়ের কবিতাবলি নিয়ে ফিরে গেলেন জয় গোস্বামী। পাঁচ বছর বয়সে রানাঘাটে এসেছিলেন, বাবা-মা-ভাইয়ের সঙ্গে... তাঁদের পারিবারিক স্মৃতির এক ধূসর অ্যালবাম এঁকেছেন যেন সুব্রত চৌধুরী প্রচ্ছদে। কবিতাগুচ্ছের শেষে রানাঘাট-জীবনের ছোট-এক স্মৃতিগদ্যও যোগ করেছেন জয়।
বইটির নামখানি যেন ধুলোমলিন স্মৃতি গা থেকে ঝেড়ে ফেলে উজ্জ্বল হয়ে ফুটেছে ‘সংসার’ কবিতায়: ‘চারজনের অভাবী সংসার/ বাচ্চা দুটো বুঝত না কিছুই/ আনন্দের আর সীমানা নেই তাদের/ আজকে সেই চারজনকে আমি/ আমার ভাঙা কলম দিয়ে ছুঁই/ দেখি আবার হাট বসেছে চাঁদের’। যেহেতু কবিতাগুলি ভাইয়ের মৃত্যুর পর লেখা, জানিয়েছেন কবি, গাঢ় শোকের অনুভূতি মাঝেমাঝেই ধুয়োর মতো ছায়া ফেলেছে: ‘শ্বাসের শেষ চেষ্টা করে করে/ থামল ভাইয়ের শ্বাস/ আমার হাতে তিনটি পোড়া ঘাস।’ কিন্তু মৃত্যু পেরিয়ে কবি সেই স্পন্দ্যমান মুহূর্তের কাছে পৌঁছতে চান যেখানে জীবন স্মৃতিধার্য হয়ে ওঠে, যেমন ‘শ্রাদ্ধের দুপুর’ কবিতাটি: ‘বাবার গান, আলো/ প্রেতস্য প্রেত বলছ কাকে পুরুতমশাই?/ সুরের প্রেত নেই’। কিংবা মা-কে নিয়ে: ‘সোনা পরতে দেখিইনি তো মাকে/ মায়ের ছিল আলোহাওয়ার গয়না’। স্মৃতির শুশ্রূষা হয়ে জেগে থাকে কবিতাগুলি... ‘অনেক পরিবারের মধ্যে মিলিয়ে গেছে/ আমার পরিবার/... আমার কিছু বলার নেই আর...’, শেষ কবিতা।
গীতাপাঠ
লেখক: দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর
৩০০.০০
অরুণা প্রকাশন
দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৪০-১৯২৬) ছিলেন একাধারে কবি, গণিতজ্ঞ, দার্শনিক— পাশাপাশি বাংলা শর্টহ্যান্ড ও স্বরলিপির উদ্ভাবক। মাত্র কুড়ি বছর বয়সে তিনিই প্রথম বাংলায় ‘মেঘদূত’ অনুবাদ করেন। ‘স্বপ্নপ্রয়াণ’ কাব্যগ্রন্থ ছাড়া একাধিক দার্শনিক গ্রন্থও রচনা করেন তিনি। তিন খণ্ডে ‘তত্ত্ববিদ্যা’, ‘অদ্বৈত মতের সমালোচনা’, ‘আর্যধর্ম’, ‘সংঘাত’ তাঁর রচনা। ১৩২২ বঙ্গাব্দে ইলাহাবাদের ইন্ডিয়ান প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘গীতাপাঠ’। গীতার এই আলোচনা বাইশটি অধ্যায়ে বিভক্ত, অধ্যায়গুলি এখানে ‘অধিবেশন’ হিসাবে চিহ্নিত। প্রথম সংস্করণে উল্লেখ করা হয়, ‘‘এই ‘গীতাপাঠ’ তত্ত্ববোধিনী এবং প্রবাসীতে ছাপাইতে দিবার পূর্ব্বে সময়ে সময়ে শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মবিদ্যালয়ের আচার্য্যগণের সভা আহ্বান করিয়া তাঁহাদিগকে উত্তরোত্তর-ক্রমে শুনানো হইয়াছিল, তাই ইহার অধ্যায়গুলি’র নাম দেওয়া হইয়াছে ‘অধিবেশন’।’’ সূচনায় দ্বিজেন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘এ শান্তিনিকেতন। আমার কুটীরে বিনা-তৈলে একটি দীপ জ্বলিতেছে— ভগবদ্গীতা।’ একশো বছর পেরিয়ে এই বিস্মৃতপ্রায় আলোচনাগ্রন্থটি নতুন করে পাঠকের হাতে তুলে দিল অরুণা প্রকাশন।
পুঁথি-প্রাজ্ঞিক পঞ্চানন মণ্ডল: চর্চা ও চর্যা
সম্পাদক: অণিমা মুখোপাধ্যায়, সুমিত্রা কুণ্ডু ও প্রণবকুমার সাহা
৬৫০.০০
সোপান
পুঁথি নিয়ে চর্চার কয়েকটি ধারা আছে; সেগুলি হল— পুঁথি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ। সংগৃহীত পুঁথির তালিকা প্রস্তুত করে তার সংক্ষিপ্ত বা বিস্তৃত বিবরণ প্রকাশ করা। মূল্যবান পুঁথিগুলি সম্পাদনা করা। পুঁথি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, নতুন কাব্য আবিষ্কার করে কবিদের শনাক্ত করা এবং তার রচনাকাল নির্দেশ করা। পুঁথি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তৎকালীন আর্থ-সামাজিক অবস্থার পর্যালোচনা করা। পুঁথিতে প্রাপ্ত অপ্রচলিত শব্দাবলি, স্থাননাম, ব্যক্তিনাম ইত্যাদির টীকা-টিপ্পনী নির্দেশ প্রসঙ্গে পাঠককে তার উৎসমূলে পৌঁছে দেওয়া তথা ভাষাতাত্ত্বিক ও ভৌগোলিক ইতিহাস আলোচনা। পুঁথির লিপি বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা। সাধারণ ভাবে এই সমস্ত বিষয়ে পারদর্শিতা এক জন পুঁথিচর্চাকারীর মধ্যে থাকা খুব একটা সহজ নয়। অল্প সংখ্যক পুঁথি-পণ্ডিতের মধ্যেই তা লক্ষ্য করা যায়। এ ক্ষেত্রে পুঁথি-প্রাজ্ঞিক পঞ্চানন মণ্ডল সেই স্বল্প সংখ্যক গুণীর মধ্যে পড়বেন। তিনি শুধুমাত্র পুঁথি সংগ্রহ করেই থেমে থাকেননি, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, বসন্তরঞ্জন রায়, সুকুমার সেন, চিন্তাহরণ চক্রবর্তী, অক্ষয়কুমার কয়ালের মতো তিনি তাঁর সংগৃহীত পুঁথিকে উপযুক্ত ভাবে কাজে লাগিয়েছেন, বাংলার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর সুদীর্ঘ পুঁথিচর্চা ও অন্যান্য উপাদান-নির্ভর নিবন্ধ গ্রন্থগুলি সাহিত্য ও ইতিহাস গবেষণার অমূল্য উপকরণ। জন্মশতবর্ষে তাঁর রচনার মূল্যায়ন করেছেন পঁয়ত্রিশ জন বিশিষ্ট অধ্যাপক ও গবেষক। সেই আমন্ত্রিত প্রবন্ধগুলি এই বইয়ে সংকলিত হয়েছে। প্রায় একশো পৃষ্ঠায় পঞ্চানন মণ্ডলের রচনাপঞ্জি, বিশিষ্ট জনের অভিনন্দন ও আলোচনা, তাঁদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, বিশিষ্ট জনের উৎসর্গ ও স্বাক্ষরিত উপহার, তাঁর সংগৃহীত কয়েকটি পুঁথির সম্পূর্ণ তালিকা এবং লেখক পরিচিতি দিয়ে বইটি সাজানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy