মান্দাস
লেখক: উৎপলেন্দু মন্ডল
৮০.০০
বইওয়ালা
ক্রমশই বদলে যাচ্ছে সুন্দরবন, আর তা সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ছে ঔপন্যাসিকের কলমে। যেমন মান্দাস— পরিবর্তমান সুন্দরবনের প্রান্তিক কথাকার উৎপলেন্দু মণ্ডলের উপন্যাস। তাতে উঠে আসছে কী ভাবে নদীর নাব্যতা কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে যেন নাব্যতা কমে আসছে সেখানকার মানুষজনের জীবনেও। পশু বা সরীসৃপের সঙ্গে দ্বন্দ্বে নয়, আত্মদ্বন্দ্বেই এখন সুন্দরবনের অধিবাসীদের নিভৃত সম্পর্কগুলি ভাঙছে, পরস্পরের মধ্যে অসূয়া-হিংসার বীজ বুনছে অর্থনীতি। সরকারি অর্থ বা আয়লা-উত্তর উন্নয়নে আর মন বসছে না, দক্ষিণ ভারতে বেশি রোজগারের হাতছানিতে বেঁচে থাকার মূল্যবোধে কোথাও যেন ক্ষয় ধরছে। উৎপলেন্দুর আখ্যানের বিবরণাদিই চিনিয়ে দেয় বদলের চিহ্নগুলি। ‘বর্ষার মেঘ পাড়ি দিচ্ছে। তার দেশের দিকে। গত শতকের মাঝামাঝি এইসব জায়গা ছিল জলে ভরা। দক্ষিণ ভাগ পাম্পিংস্টেশন হওয়ার পর দলে দলে লোক চলে আসে এখানে। মেঘগুলো যেমন এক মৌজা থেকে আর এক মৌজার দিকে এগোচ্ছে, লোকগুলোও সেভাবে এসেছিল।’ লেখক ভূমিপুত্র বলেই সে অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর ভাষা, মিথ, লোককথার বুননে তৈরি তাঁর আখ্যানের অবয়ব।
বাঙালির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও সোমেন্দ্রচন্দ্র নন্দী
সম্পাদক: মলয় রক্ষিত
২৫০.০০
সূত্রধর
বাংলা প্রকাশনা জগতে সাক্ষাৎকারের প্রকাশনা কিছুটা বিরল। সে দিক থেকে কাশিমবাজার রাজবাড়ির বর্তমান উত্তরাধিকারী, নাট্যকার ও ইতিহাসবিদ সোমেন্দ্রচন্দ্র নন্দীর দুটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের প্রকাশ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়াটিক সোসাইটির ফেলো সোমেন্দ্রচন্দ্র ইতিহাস চর্চার পাশাপাশি নাটক রচনা, নাটক অনুবাদ ও নাট্যাভিনয় করেছেন। একাধিক মৌলিক নাটক ছাড়াও সার্ত্র, স্ট্রিন্ডবার্গ ও ইউনেস্কোর প্রথম বাংলা অনুবাদক তিনিই। বিদেশি নাটকের ক্ষেত্রে সোমেন্দ্রচন্দ্র যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছিলেন ‘সেটা ঠিক রূপান্তর বা অনুবাদ নয়’, নাট্যকার তাকে ‘বঙ্গীকরণ’ বলেছেন। সার্ত্রের ‘মেন উইদাউট শ্যাডোজ’-এর বঙ্গীকরণ করেন ‘ছায়াবিহীন’, তাঁর কথায়, (এটিকে) ‘আমি ১৯৪২-এর স্বাধীনতা আন্দোলনে বিপ্লবীদের লড়াই ও পুলিশি অত্যাচারের ঘটনা দিয়ে করেছিলাম।’ ১৯৬১-তে ইউনেস্কোর ‘রাইনোসেরস’ থেকে করলেন ‘গণ্ডার’, অভিনয় হল ১৯৬৪-তে। ১৯৫৬ সালে সোমেন্দ্রচন্দ্র গড়ে তোলেন বঙ্গীয় নাট্য সংসদ। ১৯৭০ পর্যন্ত এই সংস্থা এগারোটি একাঙ্ক নাট্য উৎসব, আলোচনাসভা ইত্যাদি আয়োজন করেছে। আপার সার্কুলার রোডে কাশিমবাজার রাজবাড়িতে একশো আসনের নিজস্ব মঞ্চ তৈরি করে অভিনয় হয়েছে। ১৯৬৬-১৯৭৮ পর্যন্ত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক বিভাগে অধ্যাপনা করেন সোমেন্দ্রচন্দ্র। এমন একজন নাট্যপ্রেমী ব্যক্তিত্ব আজ তাঁর শহরেই প্রায় বিস্মৃত। নব্বই ছোঁওয়া বয়সে বিস্মৃতির অন্তরাল থেকে তাঁকে সামনে নিয়ে আসার জন্য আলোচ্য বইটি মূল্যবান।
কুসুমকুমারী দাশের দিনলিপি
সম্পাদক: ভূমেন্দ্র গুহ
১৫০.০০
আদম
‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।’ এই কবিতার লাইনগুলি পুরনো প্রজন্মের বাঙালির ছেলেবেলায় মুখে-মুখে ফিরত, তবু কি আমরা মনে রেখেছি সেই কবিকে? কুসুমকুমারী দাশ (১৮৭৫-১৯৪৮)। জন্ম বরিশালে, পড়তে আসেন কলকাতায়, বেথুন স্কুলে। প্রথমে ‘প্রবাসী’-র সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে, পরে ব্রাহ্মবালিকা বোর্ডিংয়ে থেকে পড়াশোনা সারেন। লেখাপড়ায় খুবই ভাল ছিলেন, তবে প্রবেশিকা শ্রেণিতে পড়ার সময় উনিশ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যায় বরিশালের সত্যানন্দ দাশের সঙ্গে, ১৮৯৪। স্বামীর উৎসাহেই তাঁর কবিতালেখা শুরু, কবিতায় স্নাত হয়ে থাকত তাঁর মন। ‘বৈষ্ণব পদাবলি থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত আমাদের দেশের কবিতার মোটামুটি সম্পূর্ণ ঐতিহ্য জেনে ও ভালোবেসে ও বিদেশি কবিদের কাউকে-কাউকে মনে রেখে তিনি তাঁর স্বাভাবিক কবিমনকে শিক্ষিত ও স্বতন্ত্র ক’রে রেখেছিলেন।’ এ-মন্তব্য কুসুমকুমারীর পুত্র জীবনানন্দ দাশের। জীবনানন্দেরই ছেঁড়াখোঁড়া কাগজপত্রের ডাঁই-এর ভিতর থেকে উদ্ধার করে কুসুমকুমারীর দিনলিপি (সেপ্টেম্বর ১৯৪২- জুলাই ১৯৪৩) পাঠককে পড়ার সুযোগ করে দিয়ে গিয়েছেন প্রয়াত কবি ভূমেন্দ্র গুহ। ভূমিকা-য় তিনি জানিয়েছেন, এই এক বছরের ডায়েরিটা সত্যানন্দ দাশের ‘মৃত্যু-সম্ভাবনার আবহে শুরু, এবং একজন পিতৃতুল্য প্রিয়জনের, তথা রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়-এর, আসন্ন মৃত্যু সম্ভাবনার আবহে সমাপ্ত।’ পরিশিষ্টে মা-কে নিয়ে জীবনানন্দের রচনা। সঙ্গে নামপঞ্জিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy