ঈলীনার আঁকিবুকি
লেখক: ঈলীনা বণিক
৩৫০.০০
আনন্দ পাবলিশার্স
প্রথমত, এই বইয়ের লেখাগুলো একজন দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় প্রজন্মের বাস্তুহারা নারীর যাত্রাপথের বার্তার নথি— যে মেয়ের বাবা, ঠাকুরদা, ঠাকুরমা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতবর্ষে প্রায় বাস্তুহারা হয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন। সমকালীন এক ভারতীয় নারী যে বড় হয়ে উঠেছিল এক বাস্তুহারা কলোনিতে, এক শহুরে আণবিক পরিবারে দুই কর্মরত পিতামাতার একমাত্র সন্তান হিসাবে। দ্বিতীয়ত, এই বই প্রেমজ সন্তানের একক মাতৃত্বের কঠিন সমালোচিত, বিতর্কিত জীবনের মাতৃগৃহে থাকার ইতিবৃত্তও। কারণ, তাঁর মাতৃত্ব কোনও দুর্ঘটনা নয়, স্বেচ্ছায় পরিকল্পনা করে তিনি একক মা। চিত্রশিল্পী ঈলীনা বণিক তাঁর বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘একান্ত ব্যক্তিগত কথোপকথনের মতো এই টেক্সটগুলো লিখি মাঝে মাঝে বিভিন্ন সামাজিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে বা সামাজিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ব্যক্তিগত আমার সঙ্গে বাইরের সংঘর্ষের সংঘাতের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে।’ এই বইয়ে তাঁর কিছু সাদা-কালো ড্রইং এবং টেম্পেরা পেন্টিং-এর ছবি আছে, যা তাঁর দীর্ঘ নারীত্বের পথের প্রমাণপত্র। তাঁর কথায়— ‘যৌন প্যাশন হয়তো আমার চিত্রকলাকে/আমার চিত্রশৈলীকে আরও শক্তিশালী, তীব্র, প্যাশনেট ও জোরালো করে। আমার যাত্রা আমার শিল্পকলা এবং ব্যক্তিগত যৌনতার মধ্যবর্তী পথে।’ রবীন্দ্রনাথের আধুনিকতার চেতনা, নারীবাদের চেতনা, তাঁর স্বাধীনতা ও মুক্তির ধারণা, শিক্ষার দর্শন ও আদর্শ বিশ্বভারতী কলাভবনের ছাত্রী ঈলীনার প্রেরণা।
নির্বাচিত গল্প/ ইন্তিজার হুসেন
অনুবাদক: পুষ্পিত মুখোপাধ্যায়
১০০.০০
গল্পসরণি
সাদাত হাসান মান্টোকে বাঙালি যতটা চেনে, ইন্তিজার হুসেনের নাম তার ততটাই অজানা। অথচ উর্দু ভাষা-সাহিত্যের আকাশে এই মানুষটি সুপ্রভ তারা, রচনা করেছেন উপন্যাস ও বহু ছোটগল্প, কবিতা, প্রবন্ধ। মান্টোর মতোই ভারতে জন্ম ইন্তিজারের, দেশভাগের পর ঠিকানা পাকিস্তান। উর্দুতে লেখা তাঁর চোদ্দোটি গল্পগ্রন্থ থেকে নির্বাচিত কিছু গল্প অনুবাদ করেছেন পুষ্পিত। মূল উর্দু থেকে বাংলায় অনুবাদ, ইংরেজি-ফেরতা নয়। ‘নৌকা’, ‘কায়াকল্প’, ‘প্রত্যাবর্তন’, ‘পাতা’ গল্পগুলিতে রূপকথা, জাতকের কাহিনি বা মহাভারতের প্রভাব বিস্ময় জাগায়, ‘শোরগোল’ বা ‘সহযাত্রী’ আবিষ্ট করে গল্প বুননের শৈলীতে। অনুবাদ পড়ে মূল উর্দু গল্পগুলি পড়ার সাধ জাগে, এই ভাষা-সন্ত্রাসকালে বইটির সার্থকতা সেখানেই।
হাংরি কিংবা শাস্ত্রবিরোধী আন্দোলনের মতো নিমসাহিত্য আন্দোলন কলকাতাকেন্দ্রিক ছিল না। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল নিম-আন্দোলনের উৎসভূমি। ১৯৭০-এ কয়েক জন তরুণ মিলে সাহিত্যের এই নতুন অধ্যায়টির সূচনা করেন ‘নিমসাহিত্য’ পত্রিকা প্রকাশের মধ্য দিয়েই, জানিয়েছেন সম্পাদক: ‘না-সাহিত্য অল্প-সাহিত্য তিক্তবিরক্ত-সাহিত্য— নিমসাহিত্য’।
নিমসাহিত্য
সম্পাদক: সৌম্যব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
৪৭৫.০০
গাঙচিল
নতুন রীতি বা বিষয় নিয়ে কথা বলার অভিপ্রায় নতুন কিছু নয় বাংলা সাহিত্যের সুদীর্ঘ যাত্রায়। নিমসাহিত্যও তার আন্দোলনের পথ তৈরি করে নিয়েছিল সে ভাবেই— কখনও প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিকদের হাতে সাহিত্যের যে অলিখিত নিয়মকানুন তৈরি হতে থাকে তার বিরোধিতা, কখনও-বা প্রতিষ্ঠানের চাপিয়ে-দেওয়া নিয়মনীতির বিরোধিতা, কখনও আবার ব্যক্তিজীবনেও প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরোধিতা। ‘অব্যাহত রাজনৈতিক চাপ, সেই সূত্রেই অনিয়মিত সাহিত্যসভা, ব্যক্তিজীবনের ব্যস্ততা আর কর্মজীবনের অনিশ্চয়তার আশঙ্কা থেকে আস্তে আস্তে আন্দোলনের উত্তাপ কমে আসে।’ মনে হয়েছে সম্পাদকের, তিনি যেমন এ-আন্দোলনের সময়গত রূপরেখাটি বুনে দিয়েছেন, তেমনই বিমান চট্টোপাধ্যায় মৃণাল বণিক নৃসিংহ রায় অজয় নন্দী মজুমদার সুধাংশু সেন রবীন্দ্র গুহ প্রমুখ নিমসাহিত্যিকের রচনা দিয়ে সাজিয়েছেন বইটিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy