সামাজিক প্রথা ও বঙ্গনারী/ উনিশ শতক
লেখক: নিখিল সুর
৩০০.০০
ভাষা ও সাহিত্য
সতীদাহ প্রথা লোপ থেকে সহবাস সম্মতি আইন পর্যন্ত যাবতীয় সমাজ সংস্কারকে কেন্দ্র ক’রে উনিশ শতকের বঙ্গীয় বিদ্বৎসমাজ বিতর্কে বিভক্ত হয়ে পড়ে— ঔপনিবেশিক শাসনের হস্তক্ষেপ কাম্য কি না, এই প্রশ্নটিকে ঘিরে। এ দেশের পিতৃতান্ত্রিক সমাজের অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্য দূর করতেই ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের সাহায্যের প্রয়োজন, এটাই একমাত্র কারণ, মনে করেন না লেখক, ‘অনেক রক্ষণশীল উচ্চশিক্ষিত ও উচ্চবর্ণের ছিলেন... সমাজ সংস্কারে তাঁদের প্রবল বিরোধিতাকে নির্বিষ করার জন্য প্রয়োজন ছিল সরকারি আইনের।’ সতীপ্রথা, হিন্দু বিধবা, কৌলীন্যপ্রথা, বাল্যবিবাহ প্রভৃতি নিয়ে ধারালো ও মনোজ্ঞ আলোচনা বইটিতে। বঙ্গনারীর সামাজিক নিগড় নিয়ে তো বটেই, এমনকী নারীসমাজের কল্যাণ নিয়ে রক্ষণশীল ও প্রগতিশীলদের দ্বন্দ্বে যে কেউই মেয়েদের ব্যক্তিমন নিয়ে ভাবিত ছিলেন না, সে কথাও উঠে এসেছে এ-বইয়ে, বিশেষত শেষ প্রবন্ধটিতে, ‘উনিশ শতকে বাঙালির অন্দরমহল’-এ। অজুহাত, কৌশল, চাতুরি, মিথ্যাচার, শাস্ত্র, লোকাচার, ভীতিপ্রদর্শনের ভিতর দিয়ে কী ভাবে স্বেচ্ছাচারী সার্বভৌমত্ব কায়েম করেছিল পুরুষতন্ত্র, তা জানতে এ-বই গুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্যপাঠ্য।
বাংলার যাত্রা: সঙ্গ অনুষঙ্গ
লেখক: প্রভাতকুমার দাস
৩০০.০০
দি সী বুক এজেন্সি
‘ষাটের দশকে বাংলা যাত্রাগানের প্রযোজনায় যে সব অভিনবত্ব দেখা দিয়েছিল, তার মধ্যে একটি হল সামাজিক পালার প্রবর্তনা। পুরাণ ও ইতিহাসের বহু পরিচিত আখ্যান অবলম্বন করে জমজমাট যাত্রাপালাই ছিল তখন প্রধান বিনোদন। সে জায়গায় চারণকবি মুকুন্দদাসের সাদা পোশাকের যাত্রা অনুসরণ করে, যাত্রার আসরে মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবনের সুখ-দুঃখকে সহজসরল উপস্থাপনায় উপস্থিত করে একটা বড় ধরনের পরীক্ষায় প্রয়াসী হয়েছিলেন পালাসম্রাট ব্রজেন্দ্রকুমার দে। সাময়িক কালে যাত্রার আসরে জীবনীমূলক পালার অভিনয়ের সূচনা হল। এ ব্যাপারে পথিকৃৎ ছিলেন পালাকার সৌরীন্দ্রমোহন চট্টোপাধ্যায়।’ লিখেছেন যাত্রাগবেষক প্রভাতকুমার দাস। বাংলা সংস্কৃতির যাত্রাগান দশকে-দশকে যে ভাবে বিবর্তিত হয়েছে তার ধারাবাহিক তথ্যবহুল সুখপাঠ্য বিবরণ এই বইটির অন্যতম উপজীব্য। প্রায় চার দশকের অধিক সময় ধরে বাংলার যাত্রাগান বিষয়ে এক অনলস গবেষকের চোখে দেখা কানে শোনা যাত্রাগানের রূপান্তরের পর্যালোচনায় চিত্রবহুল এই সংকলনটি পড়ে যাত্রাপ্রেমীরা গৌরবময় অতীতকে ফিরে পাবেন।
বিপন্ন সময়
সম্পাদক: শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত, তৃণা নিলীনা বন্দ্যোপাধ্যায়
৩৫০.০০
এবং আলাপ
অশোক থেকে কবীর, রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা থেকে নেহরু, এঁরা যা বলে গিয়েছিলেন, সেটা তো শুধু একটা ‘মত’ নয়, সেটা ভারত ইতিহাসের একটা ‘ধারা’, ভারতের ‘চরিত্র’। তাকে সিউডো-সেকুলারিজম বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, কারণ তার মধ্যে সেকুলারিজম-এর থেকেও যা বেশি করে আছে, সেটার নাম সিনক্রেটিজম। সিনক্রেটিজম আর সেকুলারিজম কিন্তু এক নয়। আর ভারত ইতিহাসের এই সিনক্রেটিজম থেকে যদি আমরা সরে যাই, ভারত আর ভারত থাকবে না।— খুব দরকারি একটি কথা অত্যন্ত স্পষ্ট সহজ করে বলেছেন ইতিহাসবিদ রজতকান্ত রায়, একটি সাক্ষাৎকারে। ‘হিন্দুত্বকে জাতীয়তাবাদ বলাটাই তো সিডিশন’ শিরোনামের জরুরি সাক্ষাৎকারটির পুনর্মুদ্রণ পাওয়া গেল বিপন্ন সময়: বর্ণবাদ, জাতীয়তাবাদ, বাক্-স্বাধীনতা ও আজকের ভারত নামের মূল্যবান প্রবন্ধ সংকলনে, যার সম্পাদনা করেছেন শর্মিষ্ঠা দত্তগুপ্ত ও তৃণা নিলীনা বন্দ্যোপাধ্যায়। বইটির সুবাদে বাংলার পাঠকদের হাতের কাছে রইল কে এন পানিকার, প্রভাত পটনায়েক, মুকুল কেশভন, নারায়ণ সুকুমার, মনীষা মাশাল, সুজি থারু, উদয় কুমার, রোমিলা থাপার, অলোক রাই, নন্দিতা হাকসার, উপেন্দ্র বক্সী, গোপালকৃষ্ণ গাঁধী, সুজাত বুখারি, উমর খালিদ ইত্যাদি বরিষ্ঠ লেখক, সাংবাদিক ও রাজনীতিকের লেখা প্রবন্ধের অনুবাদ, আর তার সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রজতকান্ত রায়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার। বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। ডিসেম্বরে এসে পৌঁছে আমরা জানি, সময় আরও বিপন্নতর হয়েছে এই একটি বছরে, আর তাই প্রতি দিন আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে এই সংকলন। যে অসহিষ্ণুতা নাগরিক সমাজকে নিয়ত ভাবিয়ে রাখছে এখন, তা নিয়ে অনেক ধরনের চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে যুক্ত করে দেয় এই সংকলন। প্রবন্ধ নির্বাচনের মতো একই রকম যত্ন দেখা গেল অনুবাদের মানেও, যা একটি দুর্লভ পাওনা। ‘এবং আলাপ’ প্রকাশনার এই প্রয়াস পাঠককে কৃতজ্ঞ করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy