শুধু দেশের সীমায় আটকে না-থেকে এ বার বিদেশের বাজারেও কব্জা জোরালো করতে চাইছে মাইক্রোম্যাক্স। তুলনায় কম দামের মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রিতে নিজেদের অবস্থান আরও পোক্ত করার পাশাপাশি পা রাখতে চাইছে দামী ফোনের বাজারে। আর সেই লক্ষ্যেই এ বার দক্ষিণ কোরিয়ার স্মার্টফোন নির্মাতা প্যানটেক-এর অংশীদারি কিনতে আগ্রহী তারা।
মোবাইল ও বৈদ্যুতিন পণ্য বাজারের ঘটনা পরম্পরা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের খবর, দক্ষিণ কোরিয়ার তিন নম্বর মোবাইল নির্মাণকারী সংস্থাটির শেয়ার পকেটে পুরতে ইতিমধ্যেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে মাইক্রোম্যাক্স। তবে এই জল্পনা নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি সংস্থাটি। বরং তারা জানিয়েছে, “কোনও সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া কিংবা কোনও সংস্থা কেনার বিষয়টি পুরোপুরি পরিচালন পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষ। আর অন্তত এই মুহূর্তে এ ধরনের কোনও প্রস্তাব বোর্ডের সামনে নেই।”
অবশ্য ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করছেন, সংস্থা সরকারি ভাবে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয় ঠিকই। কিন্তু তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা থেকে পরিষ্কার যে, শুধু দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারেও জমি পোক্ত করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করছে তারা। নিজেদের ওয়েবসাইটে সংস্থার দাবি, তারা এই মুহূর্তে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল সংস্থা। বিক্রির বিচারেও তারা বিশ্বে প্রথম দশের মধ্যে। ৫৬০টি জেলায় এক লক্ষ ২৫ হাজার বিপণিতে প্রতি মাসে ২৩ লক্ষ ফোন, ট্যাবলেট ইত্যাদি বিক্রি করে তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের মোবাইল বাজারে মাইক্রোম্যাক্সের এই উত্থানের মূল কারণ স্যামসাঙের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীর অনেক সময় প্রায় অর্ধেক দামে প্রায় একই ধরনের অ্যান্ড্রয়েড ফোন বিক্রি করা। কিন্তু সম্প্রতি তাদের বিপণন কৌশল থেকেই স্পষ্ট যে, শুধু কম দামের ফোন বিক্রেতার তকমা গা থেকে খুলে ফেলতে চাইছে তারা। জোরালো ভাবে পা রাখতে চাইছে দামী ফোনের বাজারেও, যেখানে লাভ তুলনায় বেশি।
গত বছর হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা হিউ জ্যাকম্যানকে বিপণন দূত হিসেবে নিয়োগ করেছে মাইক্রোম্যাক্স। তখনই অনেকে বলেছিলেন, ক্রিকেট কিংবা বলিউডের দুনিয়াকে ছাড়িয়ে মাইক্রোম্যাক্স যে এ ভাবে হলিউডের দিকে হাত বাড়াল, তার মূলে বিশ্বের দরবারে নিজেদের একটি পরিচিত ব্র্যান্ড করে তোলার চেষ্টা। যাতে বিদেশের বাজারের দরজা খুলতে অসুবিধা না হয়।
অনেকে মনে করছেন, এই হিসাব থেকেই প্যানটেকের অংশীদারি কিনতে চাওয়া মাইক্রোম্যাক্সের পক্ষে অস্বাভাবিক নয়। কারণ, দক্ষিণ কোরীয় সংস্থাটি সেই দেশে তৃতীয় বৃহত্তম। প্রধানত দামী ফোন নির্মাতা। কিন্তু এই মুহূর্তে দেনার দায়ে বিপর্যস্ত। টানা ছ’টি ত্রৈমাসিকে লাভের মুখও তারা দেখেনি। এই পরিস্থিতিতে সেখানে অংশীদারি কিনতে পারলে, দীর্ঘ মেয়াদে তা মাইক্রোম্যাক্সের পক্ষে লাভজনক হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। উল্লেখ্য, প্যানটেকে ১০% শেয়ার রয়েছে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের। ১২% সিডিএমএ প্রযুক্তির সংস্থা কোয়ালকমের হাতে। আর ৩৭% আছে ৯টি ব্যাঙ্কের পকেটে, যাদের কাছে দেনা আছে প্যানটেকের।
জল্পনাকে সত্যি করে শেষ পর্যন্ত এই অংশীদারি মাইক্রোম্যাক্স কিনবে কিনা, তার উত্তর দেবে সময়ই। তবে তা ঘটলে, ভারতীয় সংস্থাটির পক্ষে সেটা মাইলফলক হবে বলে মানছেন অনেকেই। এবং সেখানে হয়তো ছোট্ট যোগ থেকে যাবে এ রাজ্যেরও। কারণ, বহরমপুরের কাছে এক গ্রামে বিদ্যুতের অভাবে ব্যাটারি চার্জের অসুবিধা দেখেই না কি লম্বা সময়ের জন্য ‘ব্যাটারি-ব্যাক আপ’-এর ফোন আনার কথা ভেবেছিল তারা। আর সেখান থেকেই আজ দেশের অন্যতম প্রধান মোবাইল বিক্রেতা হয়ে ওঠা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy