প্রতীকী ছবি।
আমেরিকার মূল্যবৃদ্ধির সঙ্কটে কাঁপছে সারা বিশ্ব। চাপ বাড়ছে ভারতেরও!
অতিমারির ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মাঝপথে নতুন চাপে আমেরিকার অর্থনীতি। গত বুধবার প্রকাশিত মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সে দেশের ক্রেতা মূল্য সূচক (সিপিআই) পৌঁছে গিয়েছে ৬.২ শতাংশে। যা কিনা তিন দশকের সর্বোচ্চ। জ্বালানির তো বটেই, পাতের খাবার থেকে ভোগ্যপণ্য, সাধারণ মানুষের হাতে ছেঁকা দিচ্ছে প্রায় সমস্ত সামগ্রী। অর্থনীতিবিদেরা খানিক রসিকতার সুরেই বলছেন, ‘‘এ কোন সিপিআই? কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স, নাকি কনজিউমার পেইন ইনডেক্স?’’
তবে বিষয়টি অর্থনীতিবিদদের রসিকতা কিংবা আমেরিকাবাসীর সমস্যায় থেকে নেই। এর জন্য প্রমাদ গুনছে সারা বিশ্ব। ওয়াকিবহাল মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, আমেরিকার এই মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। সে ক্ষেত্রে এর বিরূপ প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারবে না বাকি বিশ্বও। এমনকি ভারতও। কেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মসংস্থানের পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার প্রেক্ষিতে আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডেরাল রিজ়ার্ভ সম্প্রতি জানিয়েছিল, বাজারে নগদের জোগান কমিয়ে আনার জন্য ঋণপত্র কেনা কিংবা সুদের হার বাড়ানোর প্রক্রিয়া প্রক্রিয়া চললেও, তা হবে কম গতিতে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশের পরে সেই গতি বাড়ানোর সম্ভাবনা খারিজ করে দেওয়া যাচ্ছে না। আর আমেরিকায় সুদ বৃদ্ধির অর্থ ভারত-সহ সারা বিশ্বের শেয়ার বাজার থেকে বিদেশি লগ্নির আমেরিকায় পাততাড়ি গোটানো। তাতে ঝাঁকুনি খেতে পারে মূলধনী বাজার। বস্তুত, এই আশঙ্কাতেই ভারতে টানা তিন দিন শেয়ার বাজারের সূচক পড়েছে। বৃহস্পতিবার ৪৩৩ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স নেমেছে ৬০ হাজারের নীচে। ১৮ হাজারের নীচে নিফ্টি।
অতিমারির শুরুর পর আমেরিকার অর্থনীতি কি তবে নতুন সঙ্কটে পড়ল? সে দেশের সরকার তো বটেই, অর্থনীতিবিদেরাও বলছেন, ঠিক তা নয়। বরং সমস্যা ঠিক এর উল্টো। করোনাজনিত সমস্যা থেকে অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে যে বিপুল অর্থিক প্যাকেজ তারা দিয়েছিল, তার ফলে দেশ জুড়ে তৈরি হয়েছে বিপুল চাহিদা। কিন্তু তা হয়েছে সরবরাহ ব্যবস্থা মসৃণ হওয়ার আগেই। ফলে সরবরাহের অভাবেই মাথা তুলেছে মূল্যবৃদ্ধি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ‘‘একটি সাধারণ পেনসিলের জোগান শৃঙ্খলও জটিল। তার কাঠ আসে ব্রাজ়িল থেকে। ভারত থেকে আসে গ্রাফাইট। ব্রাজ়িলে হঠাৎ কোভিড মাথাচাড়া দেওয়ায় সমস্যায় পেনসিলের জোগানও।’’
ভারতের অর্থ মন্ত্রক এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও জানিয়েছে, তেলের দাম কিছুটা কমলেও জ্বালানি ও খাদ্যপণ্য বাদে অন্যান্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা যায়নি। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামও বেড়ে চলেছে। এই অবস্থায় তেলের দামেও যে বেশি দিন বাঁধ দেওয়া যাবে, এমন কথাও হলফ করে বলতে পারছেন না কেউ। ফলে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা কমার নয় ভারতেও। আর তা ঠেকাতে শীর্ষ ব্যাঙ্ককে যদি সুদ ফের বাড়াতে হয়, তা হলে বাজারে নগদ কমবে। যা ধাক্কা দিতে পারে সম্প্রতি কিছুটা মাথা তোলা চাহিদায়। ফলে এ দেশের মূল্যবৃদ্ধির দিকেও এখন চোখ সব মহলের।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy