প্রতীকী ছবি।
আশঙ্কা মিলিয়েই গত বুধবার আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারাল রিজ়ার্ভ সুদের হার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। ইঙ্গিত, মূল্যবৃদ্ধিকে ২ শতাংশে নামাতে তা আরও দ্রুত বাড়ানো হতে পারে। ব্রিটেনে ব্যাঙ্ক অব ইংল্যান্ড সুদ বাড়িয়েছে ৫০ বেসিস পয়েন্ট। পণ্যের দামে রাশ টানতে একই পথে আরও অনেক দেশ। পরিস্থিতি যা, তাতে মন্দার আশঙ্কা আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ বহু জায়গায়। আগামী বছর সারা বিশ্বে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে, হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। আর এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতির আঁচই পড়েছে বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারে। গত বৃহস্পতিবার ভারতের বাজার বড় পতন রুখেছিল। কিন্তু শুক্রবার হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।
বৃহস্পতিবার সেনসেক্স নেমেছিল ৩৩৭ পয়েন্ট। মাঝারি (মিড ক্যাপ) ও ছোট (স্মল ক্যাপ) সংস্থাগুলির সূচক ওঠে। পরের দিন ধস নামে। সেনসেক্স হারায় ১০২১ পয়েন্ট, নিফ্টি ৩০২। দু’দিনে তলিয়ে গিয়েছে ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামও। রেকর্ড গড়ে ডলার পেরিয়েছে ৮১ টাকা।
চলতি সপ্তাহেই বৈঠকে বসবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি কমিটি। জল্পনা, তারা ৩৫-৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়াতে পারে। সিদ্ধান্ত জানা যাবে শুক্রবার। তবে আরও সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বন্ডের ইল্ড ফের বেড়ে ছুঁয়েছে ৭.৩৯%। ঋণে সুদ বাড়লে শিল্প বৃদ্ধি ধাক্কা খাবে। রেপো রেট (যে সুদে আরবিআই অন্যান্য ব্যাঙ্ককে ধার দেয়) আরও বাড়লে ব্যাঙ্কগুলি ধার নেবে কম। ফলে তাদের হাতে নগদ কমবে। অন্য দিকে, শিল্পে কিছুটা প্রাণ ফেরায় ঋণের চাহিদা বেড়েছে। এই অবস্থায় বেশি জমা সংগ্রহের লক্ষ্যে ব্যাঙ্কগুলি আমানতে সুদ বাড়াতে পারে।
আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধির হার যখন ৮.৩% এবং ব্রিটেনে ৯.৯%, তখন ভারতে তা ৭%। আর ১% কমালেই চলে আসবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নির্ধারিত সহনসীমার মধ্যে। অর্থাৎ বলা যায়, তুলনায় ভারত আর্থিক ভাবে কিছুটা ভাল জায়গায়। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) চলতি অর্থবর্ষে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭ শতাংশে নামালেও, বৃদ্ধির নিরিখে বিশ্বের প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে থাকবে বলেছে। যদিও পশ্চিমী দুনিয়ায় মন্দা দেখা দিলে তার আঁচ পড়বে। বড় ধাক্কা খাবে রফতানি। ইতিমধ্যেই আমদানি অনেকখানি বেড়ে যাওয়ায় টাকার নিরিখে ডলারের দর চড়ছে। কমছে বিদেশি মুদ্রার তহবিল। ১৬ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে ৫২২ কোটি ডলার কমে তহবিল নেমেছে ৫৪,৫৬৫ কোটি ডলারে।
এত সব খারাপের মধ্যে ভারতের জন্য ভাল খবর, অশোধিত তেলের দামে পতন। ১৩০ ডলারে ওঠা ব্রেন্ট ক্রুড নেমেছে ৮৬.১৫ ডলারে। এর ফলে ডলারের দাম বাড়া সত্ত্বেও তেল আমদানির খরচ কমবে। দেশ জুড়ে দাবি, এ বার পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমানো হোক। তা মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। তবে বিশ্বের পরিস্থিতির নিরিখে ও দেশে সুদ বৃদ্ধির সম্ভাবনায় চলতি সপ্তাহে শেয়ার বাজার চঞ্চল থাকবে বলেই মনে হয়।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy